পর্ব একঃ
-----------------
পশ্চিম থেকে বর্তমানের হিটলার এপারে এসে কন
তুই ইথার সেদিনের পুঁচকে কবি,
খুঁড়াতে খুঁড়াতে এসেছিস বঙ্গের কাব্য-বাগানে
বুঝিস না কবিতার ক,
পরাবিদ্যায় বুনে নিস্ শত শত জংলী ঘাস।
ওপারে শ্রীজ্ঞানের ভেতর আরাম কেদারায় বসে বসে
অানন্দে ভায়োলিন বাজান সজনীকান্ত দাশ।
ভাবেন মনে মনে,
যুগে যুগে সাহিত্য-রাজ্যে পাঠাব আমার মত ছিদ্রান্বেষী!
চিৎপটাং হয়ে উত্তরসূরি কবিগণ হবে বেহুঁশ,
ক্ষণে ক্ষণে।
ফোকলা হাসে সজনীকান্ত,জাদুতে জাদুতে লাগ ভেলকি,ছুঁ-মন্তর-ছুঁ!
চিৎকার করে নেচে নেচে সর্পধ্বনি তুলে দিলো
কবি কাজী নজরুলের “বিদ্রোহী”শিখায়!
বাতাসে বাতাসে অধোয়া কালিতে লিখে দেয়---
“ও ভাই গাজী রে
কোথা তুই আজি রে
কোথা তোর রসময়ী জ্বালাময়ী কবিতা!
কোথা গিয়ে নিরিবিলি
ঝোপে ঝোপে ডুব দিলি
তুই যে রে কাব্যের গগনের সরিতা!”
সজনীকান্ত আরো কয়
আরে বাপু!
রূপসী কবি জীবনানন্দ কেও অাস্ত রাখিনি রে!
বেটার নাম রেখেছি জিহ্বানন্দ বা কবি গণ্ডার!(পশুর নাম)
সজনীকান্ত অারো হেসে হেসে কয়,
শুন ,প্রজন্ম হতে প্রজন্মান্তরের কবি রা!
অামার শিষ্যরা
বিশ্বকবি রবী ঠাকুরকেও এতটুকু ছাড়েনি রে!
তাই তো অামরা চিল্লাইয়া চিল্লাইয়া দুনিয়ার স্বর্গ-পাতালে অাওয়াজ তুলে কই,
"বসন্ত দিলো রবি
তাইতো হয়েছে কবি"।
হঠাৎ মীরজাফর এসে অামার বারান্দায় হাজির,
খানেক কাশি মেরে মেরেই কয়
কোথায় তুমি ঘসেটি?চেপে ধরো শালার চুলের ঝুঁটি!
আদিত্যপারে পুঁচকে কবি ইথারের
বলরাম কাব্য প্রাণে কী অার সয়?
ঝাঁটা মেরে করো বিদায়,রে বঙ্গ-সাহিত্য পাক ছুটি!
আমি ইথার নাছোড়বান্দা
মালী হয়ে কবিতার গাছ লাগাই বঙ্গ-কাব্য বাগানে!
তিমিরাতীত কাব্য মায়ায় ধরি
জন্ম বুকে মৃত্যুর পণ!
বিপ্লবীর বাহুতেই রেখে দিই সভ্যতার বিধি-বিধান,
জানেন তা ঐ স্বর্গের ভগবানে....
পর্ব দুইঃ
---------------
অাগুনের শিখায় অামি অতিরঞ্জন!
দেখতে পাচ্ছো কি মানুষ?
চিত্তের অভিমুখী পঞ্চ মহা-ভূত ।
চন্দ্রানন্দ বুঝেনি ষড়দর্শন,
স্মৃতি- প্রস্থান
ভুলেছে বৈশেষিকসূত্র।
উৎসের দিকে ধাবমান বেগবতী সমান্তরাল স্রোতধারা……...
কোথায় মন্দাকিনী- অলকানন্দা-ভোগবতী?
গ্রহণোন্মুখ কানে আসে
শবের পাহাড় ভেঙে প্রাসাদ গড়ে তোলার আওয়াজ।
ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিয়ে
ক্ষুধার জমিনে হলকর্ষণ।
শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিরোধ ,
চোখে ভাসে মায়ের পোড়া কপাল ও প্রেমিকার মৃত মুখ।
অশোক ফুলের রঙ মেখে
সূর্য্যসদৃশপ্রভাযুক্ত চেতনায়
মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে
জন্মের টানে ফিরে আসবে কি কালপুরুষ?
আত্মা হলো জীবনের বৈমাত্রেয় ভাই।
চেয়ে দেখো!দৃষ্টির সীমানায় রাখা আছে শ্যামসুন্দরের ঠিকানা
চলো ফিরে যাই!
জীবনটাকে-ই বেচে দেই মৃত্যুর দামে….
পর্ব তিনঃ
-----------------
অাকাশের বুকে অামি অর্চিষ্মান!
সময়ের ফুৎকারে সমুদ্র-মন্থন,
অমৃত আয়ুর রেখাচিহ্নের দর্শনে,
কাঁপে আমার কাঞ্চন-হিমগিরি
কণ্ঠে ফিরে আসে হারানো সুর,
ভুলিনি দশ মহা-বিদ্যার বিধি...
অধিকারচ্যুত বাসনায়...
কারা যেন কেড়ে নিতে চায় আমার উজ্জ্বল রত্নমুকুট ?
তারা জানেনা
আমিও সমুদ্র-পথিক,
এখনো অন্ধ হয়ে যাইনি...
একটু থমকে দাঁড়াও হে মানুষ!
দেখে নাও বিনাশের পথ ...।
শবের পঁচা-গন্ধ শুঁকে
ফিরিয়ে নিও না তোমার চতুর্মুখ;
কারণ দেহে কাঁচা- সোনা- রঙ মেখে ওঠে আসবে
পদ্ম-পদ্মালয়া ,
দেখাবে তাঁর মূর্তিমতী দয়া...।
চতুর্দিক হবে উজ্বল,
থাকবে না কোন বিধি-বিধান-নিষেধ...
পর্ব চারঃ
-------------
মহাকালের দরজায় দাঁড়িয়ে অামি বিপ্লব বলছি-------
বিশ্ব হতে বাঙালীর মাথার উপর সরস্বতীর কৃপায় ধরেছি সূর্যের প্রতিভা!
তাই অামার বিদায়েই ভারত-বাংলা ভাগ্য বিধাতার অশ্রু মুদ্রিত হবে অামারই অাত্মজীবনীর শেষ পৃষ্ঠায়.....