চুপিচুপি কে যেন অামায় ছলনার অাদেশে মুখ খিস্তি করে বলে গেলো--
"কবি হিসেবে অাপনি অসাধারণ কিন্তু মানুষ হিসেবে শূন্য"!
হয়তো সে হবে প্রাচীনকালের কোন এক অন্ধ রাজা,যার ছিলো এক অন্ধ ঘোড়া!
দুঃখ নেই,পাথুরে বুকে বিদ্রোহী অাগুন পুষেছি অাজন্মকাল.......

শুনো হে এপার-ওপার বাংলার জনতা!
যদিও"মানুষ হিসেবে শূন্য"
তবুও হাস্নাহেনার সুরভি ভিক্ষা নিয়ে
তোমাদের কাছে দাবি জানাতে এসেছি---------
অমানুষ হিসেবে তোমরা হইও না পূর্ণ!

ভাই,অামি তোমাদের কবি নই,
যে চোখে তোমরা তাকাও,অামি সেই চোখের বেনামী অশ্রু।

অাবার শুনো হে ভাই!
অামি তোমাদের কবি নই,
কেবল অসংখ্য মৃত্যু পার হয়ে
পিদিমের পাশে জন্ম দিয়ে যাব পোড়া শলতের ইতিহাস।

অতঃপর....
শতাব্দীর পর শতাব্দীর ঘূর্ণন ক্লান্তি মুছে,
শেষ সূর্যের নিভু নিভু অালোর তলে
যোগ্য উত্তরসূরির নিমন্ত্রণে
নিজেকে অাবিষ্কার করে নিব মানুষ রূপে.........

জেনো,দিবা-রাত্রির কারাগার হতে
হৃদয়ের খাজনা মেটাতে,
সহাস্যে যারা কড়া নাড়ে কালপুরুষের দরজায়,
তারাই হবে অামার তুচ্ছ প্রাণের দাবিদার!

শুনো,
অামি মানুষ হয়ে অাছি
           অাকাশ অাশ্রয়ী পাখিদের কাছে,
ডানার নীচে ছায়া,
       অাবছায়ার নীচে মাটি,
মাটির নীচে প্রত্ন-অন্ধকার,অঙ্কুরিত ঘুমন্ত বীজ,
              শিকড়ের সাথে রস
রসের সাথে জলের সন্ধি,
         শারীরবৃত্তীয় ব্যাকরণ খুঁজে নিক
পাতা-লতা-ডাল,
                     ছিন্ন হোক শূন্যবন্ধন।

সন্ধানী দৃৃষ্টিরা,এসো, ব্যাধের মতোন
                      হানো চোখের কোটরে,
পরাস্ত করো মাত্রাসিদ্ধ শরীর
       জ্বালো অাগুন নীল নীল বিষাদের চিতায়,
সংজ্ঞাতীত...........

শুনো,
অামি মানুষ হয়ে অাছি
        স্রোতস্বিনী লোহিত প্রেমিকার
চূর্ণ-চূর্ণ জঙ্ঘাদেশের কাছে,
চাঁদের নৌকো ভাসাই স্রোত গুনে গুনে.....

কেবল পাল তুলে হাওয়াবিলাসীর সুরধ্বনির অাঘাতে
কাঁদে অার কাঁদে অামার যমুনাবতী!

সন্ধানী দৃষ্টিরা,এসো,খুন করো এই অামাকে-----
রেখে দাও প্রেমিকার ভগ্নাংশে......
বর্ণাতীত........

কিন্তু এ জগৎ বড়ই শ্বাপদ-সংকুল!
     মেঘের পীঠে জগজ্জয়ী চন্দ্রকান্তমণি,
ঝড়ো হাওয়া সহ্যের অতীত,
     বিস্মরণের পারে ভবভূতির নীলকান্ত ঘুম,
অগ্রপশ্চাৎবিবেচনাহীন মস্তিষ্কের ফসল হলো চেতনার বিভ্রম বিলাস!
নিষিদ্ধ শরীরের বাঁকে বাঁকে হেঁটে যাচ্ছে মাংসের ফেরিওয়ালা,
বেদনাভারনত হাতে অভিশপ্ত রুটি!

হে মহাশ্বেতার স্বর্গ-গঙ্গা জল,তোমার অাসল ঠিকানা কী?
পাঠিয়ে দিব সাঁতারুর নাম,
                                 ভাসিয়ে রেখো চিরকাল........
কিংশুক-ভোজনের মাঝেই অারোপিত শুদ্ধিকাল
অাদিম বৃক্ষের নীচে বিষ্ঠা,মূত্র উৎসর্গ করে
হিরণ্যবাহু ছুঁয়ে দিচ্ছে মগজের সুরসিন্ধু!
সুতরাং,মানস কল্পনায় গীত-বিতান।

সন্ধ্যারাগসদৃশ মহাশূন্যের ওপর জ্যোতির্ময় পদার্থের অান্দোলনে,
কেশপাশ জুড়ে বেজে উঠছে অাত্মগত সঙ্গীত:
অথচ নাচে কালের গুপ্তচর!
যৌবন সাম্রাজ্যে অায়ুর ইতিহাসও  বড্ড অবহেলিত....

বলতে পারো-জাতিভেদ সংক্রামক নাকি জন্মের অভিসম্পাত?
শুনেছি,এ তো মহাপ্রলয়!
মৃত পৃথিবীর বুকে হানা দিলো জলোচ্ছ্বাস
অামাদের কারো নৌকো নেই!
জীর্ণ কাঠ ধরে ধরে ভেসে যায় প্রতিভার মানচিত্র,
তৈরি হয় এক-একটি বিয়োগান্তক উপন্যাস!

হে পৃথিবী!ভয় নেই!
অামি তো সাঁতারু!

সে কী!হঠাৎ কালোছায়ার পিছনে হাঁটতে থাকা অন্ধ ঘোড়ার কাছে
সূর্যের কথা বলতে বলতেই অাকাশে নীলভ্রান্তি!
চাঁদের ডানায় ঝুলে অাছে অাগামী ভোর,
ছায়াপথের বাঁকে বাঁকে নরম শরীরের ঘ্রাণ
চোখে প্রিজমের মত রঙ,
অালঙ্কারিক নাচমুদ্রার ধ্বনিতে উল্কাপতন
সিন্ধুর গভীরতা মাপছে অন্ধ অশ্বারোহী
পাতালে পড়ে গিয়েছিলো তাঁর জন্মের ফসল!

বলো,অাজ অামি কোন্ শক্তিবলে ধরে রাখি কলমের ভার?
সাধ্য নেই,ঘাপ্টি মেরে অাছে এপার-ওপার বাঙালীর ইতিহাস!
খুঁজতে গেলে দেখি মহাকাল বড্ড একা,একা,একা.....
ঐ ঐ গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে শবযান....
ঠিকানা অাকাশ-বিদ্যা নিকেতন!

ও ভাই!অামি তোমাদের কবি নই,
অামার তো পয়সা-কড়ি নাই!
কোন্ উপায়ে যে হবে মানুষের দর্শন লাভ?
ছেঁড়া কাগজ,
     বুঝিনি নীল নীল অক্ষর ব্যথা!
অন্তরে অন্তরে জাগে একটু মানুষকে দেখার অভিলাষ!

অাহা,শুনে যাও বারংবার!
অামার বাদ্য-বিদ্যা বিশারদ কানে কানে বলে গেলো----
অারে অারো যোগ্য হওয়া চাই!
বৃক্ষশিখরে দাঁড়িয়ে
হয়ে উঠো সুমিষ্ট-বর্ণ-সংশ্লিষ্ট গীতিগান পরায়ণ!
উলূক পক্ষীর ডানা ছুঁয়ে
হাতে নাও শুক্লবর্ণ মন্দার-পুষ্প -মাল্য...

সহস্র পথ পেরিয়ে পৌঁছে যাবে মহাকালের থাবা
                                   ছদ্মনামী অন্ধ রাজার গালে!!