http://www.bangla-kobita.com/anilosmann/post20141229084107/

ত্রিপদী বেদ
-----------------------
ওনীল ওসমান সিমন(ওজস্বী কবি)

অতঃপর সন্ধ্যা হয়েই গেলো,
ঘোর রঙের।

সেদিনও বিক্ষোভ এসেছিলো-
কলের গানের জলতরঙ্গ সুরের মহড়ায়।

উদয়াস্তে সূর্য্যি নাকি পুব -পশ্চিমে,
কে যেন এক উদাস বাউল বলেছিল সুরে
সূর্য্য কি ঘুমায়,নাকি প্রেমী ঐ কোণে?
অস্ত-উদয় মিছে কথা-
জেগেই থাকে সূর্য্য;
শুধু সন্ধ্যা এলে ঘুরায় মুখটা তার বিরহী
অভিমানে।

খুব রাত ঝরে-
মিছিল-স্লোগান,নাগদলের হিসহিসানি-
কেউ দেখেনি বেহুলা,কতোটাই কেঁদেছে
পতিভাসা জলে।
শুধু পিঙ্গল কষ্টগুলো বুকে ধরে
সিঁথেনের সিঁদুর ধুয়েছিলো সে।

ঐ দেখ অাজো পুরু- কালো মেঘ-
কালো বর্ণমালার রঙহরণের মহড়ায়,
ষোল মাত্রায় দাদরার বোলে ধর্ষণের তালে।
কোমর দোলানো বিছেয় নাচছে নারদ-
কামনার সুরে।

স্বাক্ষী ব্রক্ষ্মা-
স্বরসতী মন্ত্রপুত পৈতে দিয়েছে গলে-
চলছে মন্ত্রপাঠ-
এসো মা স্বরসতী কন্ঠে কর ভর,
বসতে অাসন দিলাম মস্তকের উপর।
যেমন পূজা চাও
তেমনি পূজা খাও
কুজ্ঞান খাও মা -ঐদিকে অন্য অাজ্ঞা-
মনষার অাজ্ঞে।

অাজো বাজছে কলের গান জলনুপুরে
ত্রিপদী সুরে-
অাড় বাঁশির অষ্টম মাত্রায় অাসছে ভেসে-
অামি বাংলায় গান গা... সা...রেমা..গা-
বাংলা পুষি অন্তরে।
দ্রাবিড়-অার্যদের
মহুয়ার মদির হাতছানি হে ডাবছে অাঁধার-
কাটছে রঙের ঘোর -ত্রিভঙ্গ কানাই,
তবু কি বন্ধ্যা মায়া বন্দী ঘরে?
-------------------------------------------------------------------
★★কবি লিখেন এক মনে, পাঠক পড়েন অন্য মনে...

কবিতাটি অালোচনা করার অাগে অামি ব্যক্তিগতভাবে এই কবিতা প্রসঙ্গেই কিছু নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে সংক্ষেপে অালোকপাত করবো যাতে কবিতাটি পরবর্তীতে অালোচনা করা সহজবোধ্য হয়।
(১)
সরস্বতীঃ
-------------
ইনি বিদ্যা,সংগীত ও শিল্পকলার দেবী।মাঘ মাসের ৫মী তিথীতে সরস্বতী পূজা করা হয়।পুরানে অাছে এই দেবী ব্রক্ষ্মার মুখ থেকে উত্থিত। সাধারণত পূজার জন্য দেবীকে শ্বেত বস্ত্র পরিধান করানো হয়।এটি পবিত্রতার নিদর্শন।সরস্বতী পূজার জন্য পলাশ ফুলকে বিশেষভাবে রাখা হয়।এটি অঞ্জলীর জন্য অন্যতম উপাদান।

পুস্পাঞ্জলি মন্ত্র(৩বার পাঠ করতে হয়)
--------------------------
"ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে,কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে,ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্ততে।।
নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমোঃনমঃ
বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-স্থানেভ্য এব চ।।
এস স চন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বত্যৈ নমঃ।।"

প্রণাম মন্ত্রঃ
"নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।
বিশ্বরূপে বিশ্বালাক্ষী বিদ্যাংদেহী নমোহস্ততে।।
জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে,ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্ততে।।"

★★অারেকটি মন্ত্র অামি ভুলে গেছি।বর্তমানে মুখস্ত নেই।অাপনারা অামার বহু কবিতাতে হয়ত"মহাশ্বেতা"নামটি শুনে থাকবেন।অামি অামার বহু কবিতায় এই দেবীর নাম উল্লেখ করেছি।অাজ কবি ওনীলের কবিতার অালোচনাতেও  সরস্বতী দেবীর নাম দেখে বেশ ভালো লাগছে।

★★(০২)
দাদরা
------------
দাদরা কি?এটি বাংলা গানের তাল।ভারতের উত্তরপ্রদেশে এই তালের প্রচলন শুরু হয়।সাধারণত রাগ প্রধান হয়ে থাকে এসব গান।দাদরার নিয়ম হলো এটি অবশ্যই ছয়মাত্রার সমপদী তালে চলবে।দাদরায় যে ছন্দের প্রয়োগ ঘটানো হয় তা মূলত তিমাত্রিক।দুটি ভাগে বিভক্ত।একটি খালি এবং অন্যটি তালি।যেমন-
ধা ধিন না।না থুন না।।

ধা ধি না।না তি না।
রাগসঙ্গীত শাস্ত্রে অারো বহু তাল রয়েছে যেমন-ঝাঁপতাল,খেমটা তাল,কাহারবা তাল,তেওরা তাল,রূপক তাল ইত্যাদি।

(তথ্যসূত্রঃরাগসঙ্গীত শাস্ত্র,তারকানাথ)



★★(০৩)
অাড় বাঁশি
----------------
বাঁশিতেও অাছে তাল অার মাত্রা।অাড় বাঁশি একটি প্রচলিত বাঁশির নাম।শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনে কৃষ্ণের মুরলী বা মোহন বাঁশিকে অাড় বাঁশি বলা হয়।কৃষ্ণ এই অাড় বাঁশির সুরেই রাধার মন জয় করেছিলেন।ময়মনসিংহের একটি লোক সঙ্গীতে বলা হয়েছিলো--
"অাষ্ট অাঙুল বাঁশের বাঁশী মধ্যে দিয়া ছেদা
নাম ধরিয়া ডাকে বাঁশী কলঙ্কিনী রাধা।"

অারো হরেক-রকমের বাঁশি অাছে যেমন-কদবাঁশি,হরিণাবাঁশি,টিপরাবাঁশি,মোহনবাঁশি,কলমবাঁশি,খিলবাঁশি  ইত্যাদি।

★★(০৪)
নারদ
------------
নার মানে জল অর্থাৎ নারদ মানেই যিনি জলদান করেন।ইনি ব্রক্ষার মানসপুত্র।এই নারদ ত্রিকালজ্ঞ অর্থাৎ ত্রিকাল সম্পর্কে জ্ঞাত,বেদজ্ঞ অর্থাৎ বেদ সম্পর্কে জ্ঞানী,তপস্বী বা সাধক।ইনি এক ব্রাক্ষণের দাসীর গর্ভে জন্ম নেন।ছোটবেলায় মায়ের অাদেশে যোগীদের সেবা করতেন এবং একসময় ধর্মপরায়ণ হয়ে উঠেন।হঠাৎ সাপের কামড়ে তাঁর মায়ের মৃত্যু ঘটে।এরপর তিনি তপস্যার জন্যে বনে চলে যান।তারপর ঈশ্বরে লীন হন।একসময় বিষ্ণু সমুদ্রের জলে শায়িত হন। তখন তিনি বিষ্ণুর অন্তরে প্রবেশ করেন।
(তথ্যসুত্র নারদঃপুরান)


★★(০৫)
বেহুলা-লক্ষীন্দর-মনসা
---------------------------------
এটা প্রায় সবারই জানা।সাহার কন্যা হলেন বেহুলা অার চাঁদ সওদাগরের পুত্র লক্ষীন্দর।ওদিকে মনসা হলেন শিবের কন্যা।ইনি সর্পদেবী।

★★নামকরণঃ
---------------------------
-------------------------
"ত্রিপদী বেদ"--অর্থাৎ তিন পদ যুক্ত জ্ঞান।বেদ মানেই জ্ঞান।এ কবিতাটি পড়ার পর বুঝতে পেরেছি এটি একটি মিশ্র ভাব-সঙ্গতি পূর্ণ কবিতা।অনেকগুলো উপাদান একসাথে জড়ো করে অমূল্য বার্তা দেয়া হয়েছে।পুরান-দর্শন ও সঙ্গীত-শাস্ত্রের সাথে সঙ্গতি রেখে বর্তমানের জন্যে প্রযোজ্য  কিছু বার্তা এ কবিতায় অাছে।তাই নামকরণটি মন্দ নয়!অন্তত এই কবিতার ক্ষেত্রে।

★১ম স্তবকঃ
------------------------
"অতঃপর সন্ধ্যা হয়েই গেলো,
ঘোর রঙের।"

------প্রথমেই হঠাৎ করে একটি দৃশ্যের অবতারনা ঘটানো হলো।এখানেই কবির দক্ষতা ফুটে উঠেছে।
সাধারণত কিউবিজম বা কিউবিক কবিতায় একটি জ্যামিতিক চিত্র অাঁকা হয়।শৈল্পীক ভঙ্গীমার অবতারণা ঘটানো হয়।এ দুটো লাইনে অামি তাই দেখতে পেলাম।বলে রাখা ভালো,এটি কোন কিউবিক কবিতা নয়,তবু রঙ-তুলিতে অাঁকা এক রহস্য-কাব্য।কবি একটি কাল্পনিক চিত্র অাঁকলেন।হয়তো এ কল্পনার পথ ধরেই হেঁটে যাবে কবিতার পা......

★২য়স্তবকঃ
---------------------------
"সেদিনও বিক্ষোভ এসেছিলো-
কলের গানের জলতরঙ্গ সুরের মহড়ায়।"

--কল্পনার দ্বিতীয় ধাপ।একটা অশনি-সংকেতের বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।নিশ্চয়ই এমন কিছু ঘটবে যার জন্যে কেউ কেউ প্রস্তুত হয়ে অাছেন মোকাবেলার জন্যে........

★৩য় স্তবকঃ
--------------------------

"উদয়াস্তে সূর্য্যি নাকি পুব -পশ্চিমে,
কে যেন এক উদাস বাউল বলেছিল সুরে
সূর্য্য কি ঘুমায়,নাকি প্রেমী ঐ কোণে?
অস্ত-উদয় মিছে কথা-
জেগেই থাকে সূর্য্য;
শুধু সন্ধ্যা এলে ঘুরায় মুখটা তার বিরহী
অভিমানে।"-------

পূর্বের স্তবকে বিক্ষোভ এবং সুরের বার্তা পাওয়া যায়।তৃতীয় স্তবকে এসে সংশয়াপূর্ণ দর্শনের দেখা পাওয়া যায়।
অাধ্যাত্মবাদের(বাউল) প্রয়োগ অাছে এখানে।এ তো বাহ্যিক সূর্য নয়!এ যে মনের সূর্য!মনের সূর্যে অস্ত-উদয় হওয়াটা সত্যি এক মিছে কথা!

লক্ষণীয় বিষয়--প্রথম স্তবকে সন্ধ্যা নামক রূপক শব্দটির অাগমন।এই সন্ধ্যার রঙ ছিলো ঘোর রঙা।তৃতীয় স্তবকে এসে কি হলো?অামরা দেখতে পাচ্ছি যখন সন্ধ্যা অাসে তখন সূর্যটা মুখ ঘুরিয়ে নেয় বিরহী অভিমানে।তার মানে ঐ সন্ধ্যা মঙ্গলজনক সন্ধ্যা নয়।বিরহী সন্ধ্যা।

অর্থাৎ যে সূক্ষ্ম বার্তা পাওয়া যায় তা হলো--এমন এক পরিবেশ তৈরি হবে অামাদের সমাজে যখন মনের সূর্য বিরহী অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নিবে ক্ষণে ক্ষণে.......

★৪র্থ স্তবকঃ
--------------------------
"খুব রাত ঝরে-
মিছিল-স্লোগান,নাগদলের হিসহিসানি-
কেউ দেখেনি বেহুলা,কতোটাই কেঁদেছে
পতিভাসা জলে।
শুধু পিঙ্গল কষ্টগুলো বুকে ধরে
সিঁথেনের সিঁদুর ধুয়েছিলো সে।"

লক্ষণীয় বিষয় --শেষ স্তবকে দ্রাবিড়-অার্যদের কথা উল্লেখ অাছে।দ্রাবিড় অর্থ খর্ব অথবা প্রসারিত।দুটো অর্থেই।অার্যরা মূলত ভীন দেশী।যাই হোক,এদের বেশীরভাগেরই  চোখ ছিলো পিঙ্গল বর্ণের।তৎকালীন জাতিগোষ্ঠীতে অত্যাচারী সম্প্রদায় ছিলো যারা দেখতে বলিষ্ঠ,পিঙ্গল বর্ণের।

এখানে বেহুলা দ্বারা বর্তমানের অবহেলিত নারী সম্প্রদায়কে বোঝানো হয়েছে।বিশেষ করে নিপীড়িত,ধর্ষিত নারীদের।বেহুলা একটি উপমা বৈ অার কিছু নয়!

"নাগদলের হিসহিসানি"---এই শব্দ বন্ধনের মাঝেই ইঙ্গিত রয়েছে সেই সমস্ত অত্যাচারীদের,যারা সর্বদা সমাজের অমঙ্গল বয়ে অানে।এই স্তবকে বেহুলার কষ্ট চিত্রায়িত হয়েছে সুনিপুণভাবে।

★৫ম স্তবকঃ
------------------------
"ঐ দেখ অাজো পুরু- কালো মেঘ-
কালো বর্ণমালার রঙহরণের মহড়ায়,
ষোল মাত্রায় দাদরার বোলে ধর্ষণের তালে।
কোমর দোলানো বিছেয় নাচছে নারদ-
কামনার সুরে।"

---এই স্তবকে এসে সরাসরি ধর্ষণের কথা উল্লেখ করা হলো।
"কালো বর্ণমালার"---কালো সবসময়ই মন্দের প্রতীক,দুঃখের প্রতীক চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

"ষোল মাত্রার দাদরা"--এটা একটা উপমা,যা দাদরা নামক রাগ-সঙ্গীতের সাথে তুলনা করা হয়েছে।দাদরায় ষোল মাত্রা হল পরিপূর্ণ রূপ।

অর্থাৎ ষোল মাত্রার দাদরা কথাটি পাশবিক উল্লাস অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।যখন ধর্ষণ হয় তখন ঠিক এমনিভাবে  কিছু পিশাচ উল্লাস করে থাকে।"নারদ"শব্দটি ইঙ্গিতপূর্ণ।এই যে এতো কিছু ঘটে যাচ্ছে তবুও অামাদের সমাজে নারদ রূপী মানুষেরাও শেষ পর্যন্ত কামনার জলে ডুব দেন।

★৬ষ্ঠ স্তবকঃ
-----------------------

সমাজের এই দশা অাজ কেন?তার কারণ সত্যিকারের বিদ্যা অামরা এখনো অর্জন করতে পারিনি।শুধু জাহিরি বিদ্যা অথবা ডিগ্রিধারী বিদ্বানে ভরপুর অামাদের এ সমাজ।

"স্বাক্ষী ব্রক্ষ্মা-
স্বরসতী মন্ত্রপুত পৈতে দিয়েছে গলে-
চলছে মন্ত্রপাঠ-
এসো মা স্বরসতী কন্ঠে কর ভর,
বসতে অাসন দিলাম মস্তকের উপর।
যেমন পূজা চাও
তেমনি পূজা খাও
কুজ্ঞান খাও মা -ঐদিকে অন্য অাজ্ঞা-
মনষার অাজ্ঞে।"

এখানে জটিল কথা বলা হয়েছে-যারা শিক্ষিত কিন্তু সমাজের ক্ষতি করে চলে,যারা বিদ্বান হয়েও পরিত্যাজ্য।তাই তো কবি সরস্বতী দেবীকে অাহ্বান জানালেন সমস্ত কু-জ্ঞান ধ্বংস করার জন্য।ঐ দিকে  মনসা দেবীর প্রতিও......

★৭ম স্তবকঃ
-----------------------
"অাজো বাজছে কলের গান জলনুপুরে
ত্রিপদী সুরে-
অাড় বাঁশির অষ্টম মাত্রায় অাসছে ভেসে-
অামি বাংলায় গান গা... সা...রেমা..গা-
বাংলা পুষি অন্তরে।
দ্রাবিড়-অার্যদের
মহুয়ার মদির হাতছানি হে ডাবছে অাঁধার-
কাটছে রঙের ঘোর -ত্রিভঙ্গ কানাই,
তবু কি বন্ধ্যা মায়া বন্দী ঘরে?"
----
এখানে কবির একান্ত অনুভূতি ফুটে উঠেছে।সমাজের দুর্দশা,নানা সংঘাত অবলোকন করে কবি ভাবছেন অাজো কি সেই প্রাচীন-মনমানসিকতা রয়ে গেলো এ অাধুনিক রঙ্গশালায়?

তাই তো কবি রূপকের অাড়ালে বলে উঠেছেন কলের গানের কথা।সকল অশনিসংকেতের হাতছানি ছাপিয়ে তিনি অন্তরে বাংলাকেই পুষতে চান।সবার উপরে ভালো থাকুক এ বাংলা।তারপরেও কবির মনে সংশয় থেকে যায়।সেজন্যেই কবি শেষ লাইনে বলে উঠলেন-
"তবু কি বন্ধ্যা মায়া বন্দী ঘরে?"

অামার সমালোচনা
-------------------------
কবিতার মাঝে বেশ কিছু উপাদানের সমন্বয় ঘটানো হলেও অামার নিজস্ব দৃষ্টিতে মনে হয় এটি পড়ার সময়  একজন পাঠক খেই হারিয়ে ফেলবে।কবিতার মাঝে ব্যাকরণ গত ত্রুটি তো অাছেই তারওপর একটি বাক্যের সাথে অারেকটি বাক্যের যে বন্ধন তা পুরোপুরি মজবুত হতে পারেনি।

এসব কবিতা গবেষণার জন্যেই বেশি প্রযোজ্য।কিন্তু একটি কবিতা তার সুর-ছন্দ-মাধুর্যের চেয়ে যদি বেশি গবেষণাধর্মী হয়ে উঠে তবে সেই কবিতা শিল্পগুন হারায়।

অামার কাছে মনে হয়েছে এখানে পাণ্ডিত্যই বেশি ফুটে উঠেছে।কবিতায় সঙ্গীত শাস্ত্রের প্রয়োগ ঘটলেও সুর ও ছন্দে ততটা তাল নেই।কবিতার চিত্রপট কে এতই প্রচ্ছন্ন করা হয়েছে যে,কবিতার স্বাদ পেতে পাঠকের রক্ত-ঘাম ঝরে যাবে।বক্তব্য অারো স্পষ্ট হওয়া উচিত ছিলো।
বানানে সতর্কতা অারো দরকার ছিলো।সবচেয়ে বড় কথা বিদ্যার দেবীর নামের বানানটি ভুল করা মোটেই উচিত হয়নি।
স্বরসতী<সরস্বতী।

কিছু কথাঃ
--------------
কবিতা অসামান্য অামার দৃষ্টিতে।কেনো অসামান্য?একই সাথে ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের(দর্শন,পুরান,সঙ্গীত) সমন্বয়ে একটি কবিতা রচনা করা চারটেখানি কথা নয়!কবির কলমে বেশ জোর অাছে।এই কবিকে অামি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।

★একটি কবিতা প্রকাশিত  হওয়ার পর সাহিত্য-জগতের ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোন পাঠক তাঁর নিজস্ব চিন্তাভাবনায় অালোচনা/সমালোচনা/মতামত দেয়ার অধিকার রাখেন।

★বিতর্ক কাম্য নয়!