এসেছিল সে আমার কিশোর বেলায়,
ছন্দ হারানো বসন্তের শেষ লগনে,
মন চেয়েছিল মত্ত রহিতে খেলায়,
চেতন ছিল পঠন পাঠনে মগনে।
গোঠ বেগুনের কাঁটায় বিদ্ধ পদে,
দিয়েছিনু ঘষে ঘেঁটু পাতার রস,
রক্ত ঝরার শঙ্কা সমষ্টি রদে,
নরম হাতের ছোঁয়ায় করিনু বশ।
এসেছিল আবার নিদাঘ দহন কালে,
তপ্ত দুপুর কাটাতে পুকুর পাড়ে,
শীতল পাটি বিছানো গাছের ডালে,
বাঁধা ছিল মন আম কাঁঠালের আড়ে ।
বরষার সেই কাঁপুনি জাগানো রাতে,
ঝমঝম ধারা বরিষণে এল প্লাবণ,
কৈশোর মোর ধরা ছিল দুইহাতে,
বরিতে প্রেমের অঝোর ধারার শ্রাবণ।
শেফালিকা শাখে শরৎ এল বুঝি,
হিমেল হাওয়ায় শিশির কণার সাথে,
মাঠেঘাটে তটে সাদা কাশফুল খুঁজি,
নীহার সিক্ত দূর্বা ঘাসের মাথে।
শীতলতা রয় বুকের খাঁজে খাঁজে,
হয়তো ঠোঁটের চামড়ায় ধরে টান,
রোজ দু'বেলা সকালে আর সাঁঝে,
শীতের আভাসে সজাগ চোখ কান।
শীতের চাদরে নবান্ন আসে ঘরে,
কিশোর বেলার খাইখাই ভাব কত,
সখা সখী নিয়ে আবদারে আদরে,
রয়েছি স্বাদের বারোটা বাজাতে রত।
অবশেষে যবে বসন্ত এল দোরে,
অলি প্রজাপতি দেখলেই মনে হয়,
বুকের থেকে বিদায় নেয় কিশোরে,
হাসিহাসি মুখে যৌবন ছেয়ে রয়।