বাংলাদেশের হৃদয় ছুঁয়ে আবু সাঈদের দুই হাত
যেন প্রসারিত হয়েছে আদিগন্ত আকাশ নীলে
দুপুরের আকাশ গলা রোদ্রে
সেই হাত দুটো জ্বলজ্বল করছে
জলজল করছে রক্ত ঘামের লিকলিকে
প্রেমিক প্রানের নিথর দেহ
পূর্ব থেকে পশ্চিম ঈশান থেকে অগ্নি
মেরু সীমান্ত অবধি
বঙ্গোপসাগর থেকে হিমালয় সভ্যতার শিখর পেরিয়ে
হিমাদ্রির বরফ গলা তেজো-দীপ্ত যার
ছরিয়ে গেছে সেই হাত দুটো জলন্ত তেজে
বুকে তার বাংলাদেশের নাম
রক্তের অক্ষরে খোদাই করা
আবু সাঈদের বুকে নয় যেন
সেদিনের সেই গুলি বাংলাদেশের বুকে ছুড়া হয়েছিল
সময়ের সাহসী যোদ্ধা আবু সাঈদ
স্বাধীনতার সূর্যটা যার বুকে লিকলিক করছিল
সেই শানিত সূর্যের আহ্বান কোটি তরুণের বুকে
দাউ দাউ করে জ্বলছিল অগ্নিগিরির মত
যেমন সকালের জলন্ত সূর্যের অগ্নিকুণ্ড
সিংহাসন ছেড়ে গগন বিদীর্ণ করে
ছরিয়ে পরে সীমানা পেরিয়ে
মুছে যায় সমস্ত জাগতিক কালিমা
শহর নগর মাঠ ঘাট প্রান্তরে তার ছাপ রেখে
দুঃসহ স্বৈর কালো শাসন পুড়ে ছাই করে
আবু সাঈদের দুই হাতে সেই স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য উদিত
বিশ্বাস ছিল তার দেশের প্রতি
মুক্ত বিহঙ্গের মতো স্বাধীন দেশে উড়তে চেয়েছিল সে
কিন্তু দেশটা যে পরাধীনতার অতলে জানত না সে
আবু সাঈদের হাত দুটো আজ জাগ্ৰ্যত স্বাধীনতার রুদ্র মশাল
সেই প্রতাপশালী সূর্যের অভ্যুদয় যাতে
টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া বাংলাদেশের প্রান্ত থেকে
প্রান্ত কাঁপিয়ে যুদ্ধের ধুন্ধুমার বাধিয়েছিল এই দুটি হাত
এ দুই হাত সন্নিবদ্ধ অপ্রতিরোধ্য অবিনশ্বর
এই দুই হাত বাংলার দামাল ছেলের দুই হাত
মিত্যুর লেলিহান পথে এ হাত যুগলে ছিল
অতল গহ্বররের তর্জন গর্জন
মুক্ত বাংলাদেশের চিত্তে প্রসারিত দুই হাতে ছিল
মিত্যুকে পরাজিত করার শক্তি
বুক সটান করে প্রসারিত দুই হাত
দেশ প্রেমের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন
শতাব্দীর সব যন্ত্রণা বিভৎসতা
যেখানে এসে সমাপ্ত হয়েছে