দেশ মাতার তরুণ সৈন্য সামন্ত -
যারা প্রতিদিন স্বৈরাচারের খাঁ খাঁ সীমান্তে
মরনাস্ত্রের সামনে বুক পেতে
হাক ডেকে উঠত আর পদধ্বনিতে
মুখর করে তুলত সূর্যাস্ত অবধি
বিভিষীকাহীন চোখ হতচকিত তবু
ছিল না কোন পরাধীনতার গ্লানি
সূর্যের মত উদ্দীপ্ত চেতনায়
শত শত তরুনের চোখে ছিল
স্বাধীনতার রুদ্র ঝলকানি
তরুণ নক্ষত্রের পদধ্বনি পরাধীন প্রান্তরে
ছিল না মিত্যু পারন্ত বাচৎ বাক রুদ্ধশ্বাস
বুক গাল পুরু শরীর জুড়ে
পতাকা খচিত নিবিড় আস্তরন
নিতম্ব থেকে গ্ৰীবা দুচোখে স্বপ্ন মজগ অবধি বিস্তৃত
যেখানে রাজপথে বোনদের কুকুরের মত পেটানো হয়েছে
যেখানে লাঞ্ছিত করা হয়েছে সর্বস্তরের মানুষদের
যেখানে ওদের ভাইদের রক্তের বন্যা বইছে
৭১রের যুদ্ধারা লাল সালু গামছা মাথায় পেঁচিয়ে যুদ্ধ করত
আর ওরা কপালে পতাকা পেঁচিয়ে পতাকা শোভিত মিছিলে
বাংলাদেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ
বলে চিৎকার করত প্রতিদিন
দেশ মাতার দূর্বার তরুণ সেনানী
ওদের নিশ্চিহ্ন করতে
উদ্যত কালো হাত ওদের দিকে
ধেয়ে আসত প্রতিদিনই
দাসত্বের শিকলে প্রতিদিন যেন নতুন করে বেঁধে যেত
ঘোটা দেশ জাতি সংস্কৃতিতে
কতটা কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে ছাত্র জনতাকে
কতটা কঠিন ছিল সেইসব দিনগুলো
যখন দেশের একটি বৃহৎ ক্ষমতাধর অংশ
তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তাক করে থাকত
যখন পুলিশদের হানাদার বাহিনী রূপে ব্যবহারে উদ্যত
দিনটা ১৬ জুলাই! সেদিন আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার রক্ত বীজ বপন করে
১৮ জুলাই!
যেদিন মীর মুগ্ধ পানি আর রক্ত দিয়ে সেই বীজকে উতপ্ত জাগ্রত করে তুলে
এ মুক্তিযুদ্ধ ছিল স্বৈরাচারী কবল থেকে দেশের আপামর জনসাধারণ কে রক্ষা করার
এ মুক্তিযুদ্ধ গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার মুক্তিযুদ্ধ
এ মুক্তিযুদ্ধ গণমানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধ
এ মুক্তিযুদ্ধ মেধাবীদের অধিকার ফিরিয়ে দেবার মুক্তিযুদ্ধ
এ মুক্তিযুদ্ধ নির্যাতিত অসহায় মানুষদের মুখে হাসি ফুটানোর
এ মুক্তিযুদ্ধ শোষক আর শোষিত শ্রেনীর বৈষম্যের মুক্তিযুদ্ধ
এ মুক্তিযুদ্ধ ন্যায় আর অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্যের
এ মুক্তিযুদ্ধ স্বৈরতন্ত্র বিনাশের মুক্তিযুদ্ধ
৫ই আগস্টের গনভবন অভিমুখী লং মার্চ
যা পেশীবহুল স্বৈরসরকারের মসনদ নাড়িয়ে দেয়
ছাত্র জনতার বিজয় উল্লাসে কেঁপে উঠে সমগ্র বাংলাদেশ
পরাধীন স্বদেশে ছাত্র জনতা কখনো স্থির থাকে না