তুমি কেমন আছো
আমার প্রিয় বাংলাদেশ?
ইচ্ছা করে তোমার পাশে বসে থাকি,
ছুঁয়ে দেই তোমার শরীর, তোমাকে নিয়ে লিখে
ফেলি একটা ভীষণ আবেগী কবিতা।
আমার ভালোবাসার শিকড় ক্রমশ:
ছড়িয়ে যাক তোমার শরীর জুড়ে।
তুমি হীন এই দেশে পূর্ণিমার চাঁদ আছে,
আছে দিগন্ত-বিসৃত বিশাল নীল আকাশ, কিন্তু
সে আকাশ থেকে ঘুম পরানি গান শোনাতে
নেমে আসে না প্রিয় পরিরা।
মাতাল বাতাস আছে, নেই শিউলি আর
কাঁঠালি চাপার সৌরভ।
লেক অন্টারিও আছে, নেই পদ্মা মেঘনার
পাল তোলা নৌকার মিছিল।
নদী আছে, নেই ভাটিয়ালি গানের সুর;
বৈঠা ধরা সবল বাহুর সাহসী যাত্রা।
একুশে ফেব্রুয়ারি আছে, নেই
কৃষ্ণচূড়া আর শিমুল বন্যা।
নেই কিশোরীর নগ্ন পদযাত্রা,
ফুলের অরণ্যে বাতাসে নেই
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ শিহরন।
জানি তোমার শরীর জুড়ে আছে অগ্নি ক্ষত,
আছে সন্ত্রাস; প্রলোভন, স্বার্থপর মানুষের আগ্রাসন।
তবু তারই মাঝে আছে সামনে এগুনোর প্রত্যয়,
নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার প্রতি অগাধ বিশ্বাস,
নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার অদম্য আকাঙ্ক্ষা।
তুমি আমার প্রতি করুণার হাত বারিয়ে দাও,
ক্ষমা করে দাও তোমাকে ছেড়ে পালিয়ে
আসার অপরাধ বোধ থেকে।
খুকির চুলের নবীন ধান ক্ষেত সবুজ ফিতে
দিয়ে তাই বেঁধে রাখি তোমায় আমার হৃদয়ের দৃষ্টি সীমায়।
সীমার মাঝে অসীম তুমি:
হে প্রিয় জন্মভূমি!
দেখো একদিন এই বিলাসী পাঁচতারা হোটেল
জীবন থেকে আমি পালাবো কেবল তোমারই জন্য।
ফিরে যাবো তোমার বুকের স্নিগ্ধতায়।
হারিয়ে যাবো তোমার বিশাল অরণ্যে পাখিদের সাথে,
নিঃশ্বাসে প্রজাপতি রঙ মেখে নেব হাজার ফুলের সুবাস।
সমস্ত সকাল জুরে আমি ঝরা শিউলি ফুল দিয়ে
মালা গাঁথবো আমার প্রিয় ফুলটুনির জন্য, দুপুরে
সাতার কাটবো সুগন্ধার জলে, সন্ধ্যায় তারা ভরা
বিশাল আকাশের নিচে প্রদীপের আলোয় শুনবো
হামীদ ভাইয়ের পুঁথিতে কারবালা কাহিনী।
সারা রাত জেগে একটি কবিতা লিখবো
শুধু তোমাকে নিয়ে কেবল আমারই জন্য।