এসো বৈশাখ,
তোমার হাত ধরে ফিরে যাই বাংলায়।
দুহাত ভরে তুলে আনি শৈশব আর
যৌবনের হাড়িয়ে যাওয়া সৃতির ডালি।
ভরা নদীর ঘোলা জলে ডুব দিয়ে
শুনি বৃষ্টি সেতারের রিনিঝিনি গান।
আমের বাগান থেকে তুলে আনি
কাঁচা আমের সবুজ নবীন স্বপ্নগুলো,
যা এখনও দোল খায় হৃদয় দৃষ্টি সীমায়।
এসো বৈশাখ
পান্তা ভাত আর ইলিশ ছেড়ে
নীল আকাশে ওরাই লাল সবুজের একটি ঘুড়ি।
তুলে দেই অত্যাচার, অবিচার আর নির্যাতনের
বিরুদ্ধে প্রতিবাদী বোনদের হাতে অগ্নি মশাল।
মঙ্গল শোভাযাত্রার মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা
পিশাচদের ঝাটিয়ে বিদায় করি আমাদের সাজানো
উঠান থেকে।
লক্ষ কোটি প্রদীপের সোনালী আলোর বন্যায়
ভাষে যাক হাজারো নুসরাতের যন্ত্রণার পাহাড়।
পাল বাড়ীর মিতালীদির গায়ে হলুদের একটু
হলুদ এনে মেখে দেই এসিড দগ্ধ মর্জিনার মুখাবয়বে।
মেহদীর রঙে রাঙিয়ে দেই তার বর্তমান।
এসো বৈশাখ
তোমার হাত ধরে ঘুরে আসি বৈশাখী মেলা থেকে,
হলুদ শাড়ীর আঁচলে লুকিয়ে রাখা বাতাসার
মিষ্টি বৃষ্টি ছড়িয়ে দেই লাল
ফিতে বাঁধা কিশোরীর উজ্জ্বল হাসিতে।
তাল পাতার পাখায় উড়িয়ে দেই ধুলা-মলিন
পুরাতন সব জঞ্জাল।
হে বৈশাখ
তোমাকে পাওয়ার জন্য প্রতি বছর
এই নীরব অপেক্ষা,
চৈত্রের তাপ-দাহ শেষে
তোমার প্রবল ঘূর্ণিঝড় আর বৃষ্টিতে
পতঙ্গের মতো উড়ে যাক সব ব্যর্থতা।
দূর দিগন্ত থেকে তুমি ধেয়ে এসো,
আমরা কেবলই তোমার প্রতীক্ষায় তৃষ্ণা কাতর ব্যাকুল।
আমাদের বুক জুড়ে অহংকারের মতো তুমি এসো,
তোমার আবির্ভাবে মুছে যাক
আমাদের সব দুঃস্বপ্নগুলো।