কয়েক দিন আগে আমার দুটো 'আলোচনা' লেখার পর শ্রদ্ধেয় পাঠকের বিদগ্ধ আলোচনায় বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে যা আলোচনার দাবি রাখে, আসলে স্বল্প পরিসরে বিস্তীর্ণ আলোচনা করায় একটা দ্বিধা কাজ করে। পাঠকের বিরক্তির উদ্রেক না ঘটে আবার মুল্যবান সময় নস্ট না হয়।
প্রথমত কবির কবিতা সমালোচনা করা কি আদৌ উচিত কিনা, আর করলেও কতটা সমালোচনা করা যাবে? তবে সমালোচনা বলতে আসলে আমরা কি বুঝি সেটা একটা গুরুত্তপূর্ণ বিষয়। শাব্দিক অর্থ করলে সমান ভাবে আলোচনা করা বুঝায়, কোন গুনের সমান ভাবে আলোচনা করা? এক্ষেত্রে বলব কবির প্রতিভা, দক্ষতা আর আবেগ এর ্সঠিক মুল্যয়ন, সেটা কতটুকু সার্বজনীনতা প্রাপ্ত হলো, এবং কতটা সঠিকভাবে রুপায়িত হলো এতৎ বিষয় । সেক্ষেত্রে সরাসরি 'মন্দ' অথবা 'নেতিবাচক' শব্দ বা শব্দগুচ্ছ এড়িয়ে যাওয়া উচিত। তবে সমালোচনা করার জন্যে পাঠককে অবশ্যই কবির হৃদয় আত্মস্থ করা এবং সেইসাথে কবির সংবেদনশীলতাকেও বুঝতে হবে। আবার কবির ক্ষেত্রেও বলা যায়, সার্বজনীন পরিসরে কবিতা প্রকাশ করবেন এবং সমালোচনা সুচক মন্তব্যের প্রত্যাশা করবেন না সেটা সঠিক পথ নয়। কবির কাছে প্রত্যাশা করার জন্যে পাঠকের যোগ্যতা প্রয়োজনীয় বিষয় হতে পারে না।
একটি কথা প্রায়ই বলা হয় সকলে সৌখিন শুধু উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যই করা উচিত। এখানে দ্বিমত করছি , কারও লেখা নিয়ে কেউ যদি ভিন্ন ভাবনা প্রকাশ করে সালিন ভাবে দোষের কিছু দেখিনা।
দ্বিতীয়ত, কবিতার মান নিয়ে কথা বলে মনে হল খুব অন্যায় কিছু। আদৌ কবিতার মান নির্ণয় করা যায় কিনা সেও তো এক বিরাট প্রশ্ন। এ ক্ষেত্রে আমি একটা কথাই বলব মহ্ৎ আর তুচ্ছের বিষয়টা অনেকটা ধান আর চিটের পার্থক্যর মতো, দুটোরই প্রয়োজন আছে কিন্তু গুরুত্ত্বের দিক দিয়ে ফারাক অনেক। জগতে চিটেরও দরকার আছে তাই বলে কোন কৃষক নিশ্চয়ই আশা করবেন না তার জমিতে ধান বাদে চিটে হোক।
আর এই ধান-চিটের বাছাঁই এর কাজটা করে বাতাস। তেমনি সমালোচনা মহৎ কবিতা গুলাকে চি্হিত করে। কেউ যদি চান যে তার কবিতা শুধু পড়া হোক আলোচনার দরকার নাই তিনি তো চাইলেই সে অপশন ব্যবহার করতে পারেন। সংকীর্ণ্তা আর অন্ধকারে আবদ্ধ থেকে কবিতায় উদারতা আর জ্ঞানের আলো জ্বালানো যায়কি?
সবাইকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।