প্রিয় স্রোতস্বিনী,
আলতা রাঙা চরণে রেখো অধমের প্রণয় খানি।
চির আনত এ প্রেমিকের তুষিত কাতর বাহু,
আর ধমনীর উষ্ণ লহু,
চায় তোমারে জন্ম ও জন্মান্তরে;
সহস্রাব্দের বিশাল বটের মতো বিস্তৃত ঝুরে,-
সে খোজে ফেরে, মাটির অতল গভীরে!

কবিতার পর কবিতা হয়ে আছে জমা;
তুমি নদী, কী দারুণ উচ্ছ্বল ছন্দের প্রতীমা!
তুমি প্রণয়ের গোপন দাহ ;
অব্যাক্ত দহন, জোসনায় পুড়ে যাওয়া এ প্রেমিকের দেহ!
অসহ্য সুন্দর তুমি লাল ঠোঁটে!
পোড়ায় ধীরে, অনিঃশেষ, তবু্ও স্বাদ না মেটে।
তুমি তরঙ্গীনি, রাধার মতো শুভ্র অঙ্গধারী;
তুমি পোড়া দেহ,     নিকলঙ্ক যমুনার বারী!
তুমি শ্যামের মুরলি, মনহরা ঘরছাড়া সুরলহরী;
তুমি শুক্ল চতুর্দশীর চাঁদ, বেলীর ঘ্রাণ, সর্বাঙ্গ সুন্দরী।

প্রিয় স্রোতস্বিনী,
তুমি আমার রাধার মতো জানি;-
তোমায় ছাড়া আপন হারা পাগল পারা আমি,-
সংগোপনে তোমার কপাল খানা চুমি!
তোমার সারা দেহে হাজার শিমুল আছে বিধি,
দুই অঙ্গের মিলন লাগি দোহে কাদি নিরবধি।
তোমার পায়ে লুটায় হিয়া, লুটায় রক্তপলাশ,
তোমার চোখেই ডুবে মরি; আমি বারো মাস!