স্বর্গীয় সুর ছিলো আদিম সেই বেহালায়,
অলিম্পাস পর্বতে নেকটারের পেয়ালায় নিমগ্ন ঈশ্বর,
পাশেই বিবাহদেবী হেরা,
যুদ্ধদেবী এরিস,
ছিলেন রূপ আর প্রেমের দেবী আফ্রোদিতিও।

ইজিয়ান তটের রাত............
গ্রীক বীরদের আদিম নৃত্য, সোল্লাস!
উপত্যকারর সব সিঁড়ি ডিঙিয়ে গিয়ে
খুব সহজেই পৌছেছিলো দেবরাজের আড্ডায়,
কোরাস হয়েছিলো বড় আদিম এক মূর্ছনা!

আগামেনন, ম্যানেলাউস, প্যাট্রোকাস কিংবা অ্যাকিউলিস....
কে যায় কার চেয়ে কম?
কুমারী চাই যে সবারই,
চাই নয়নাভিরাম নীলনয়না কিশোরী!
যতো বড়ো বীর, ততো পাশব তার পৌরুষ,
সুতরাং রাতভর জান্তব উল্লাস-বীরের আদিম হুঙ্কার!
দেবতাময় আকাশ আর ভোগময় জমিন,
সেই রাত ছিলো শুধুই কামময়!

ঢুলুঢুল চোখ ছিলো দেবরাজ জিয়াসের
ভীষণ কামুক এক ঈশ্বর!
নাকে মুখে আফ্রোদিতির চুল, নিশ্বাসের ঘ্রাণ
তাঁকে করে তুলেছিলো আরো কামুক আরো নেশাতুর।

সুতরাং যতো পারে পুড়োক ট্রয়!

আর ট্রোজান কিশোরীদের আর্তচিৎকার?
না তো,
মোটেও এতোটা উপর অবধি পৌছুবার অনুমতি নেই,
ছিলো না কখনোই.........
নারীর কান্না, সেতো খুব মামুলী ব্যাপার!
অতএব পেরোতে পারেনি উপত্যকার ধাপ একটাও।

ইজিয়ান পাড়ের  আঁধারেই মিলিয়ে গিয়েছিলো সতীচ্ছদ্যের সব অপমান, সব বেদনা-যন্ত্রণা,
সাগরের পানিতে আরো নোনতা বাড়িয়েছিলো প্রবাহমান শোণিতধারা!

খুব অদ্ভুত!
যতোবারই এখানে রক্তের হোলিখেলা হয়েছে,
কিংবা মানবতা কেঁদেছে,
ততোবারই ঈশ্বর নিমগ্ন ছিলেন পানশালায়!

ঈশ্বর একাত্তরেও ছিলেন............
হয়তো ছিলেন বধ্যভূমির নিশ্ছিদ্র পাহারায়
কিংবা ক্রমশ এগিয়ে আসা সপ্তম নৌবহরে মাস্তুলের আগায়।

ঈশ্বর আজও আছেন আজন্ম তৃষ্ণার্ত বালুময় সাহারায়,
তিনি বেঁচে থাকেন বড় বিচিত্র এক তৃষ্ণায়!
ছাপছাপ রক্ত উড়ে ঈশ্বরের সব পতাকায়,
ঈশ্বর স্মিত হাসেন-
যখন নতুন কোন লাশ তাঁর জমিনে উর্বতা বাড়ায়।


ভীষণ করুণ সুর বাজে দূরের সব একতারায়,
রক্তের নদী হয় হলি আর্টিজান, শোলাকিয়ায় !
আমি ঈশ্বর খুঁজি-
শিয়া মসজিদের মোয়াজ্জিন, রামুর বৌদ্ধবিহার
কিংবা পঞ্চগড়ের মঠে পুরোহিতের রক্তধারায়।

রাতগভীরে কান্না শুনি
চিনের হানজেন সড়কের গীর্জার বেহালায়।
আর মদ্যপ ঈশ্বর......
যথারীতি পানশালায়!