আজো এখানে বৈশাখ আসে
আধ পাঁকা শাইল ক্ষেতের আলপথ ধরে;
কৃষকের নাকে গোমট বাতাসও সোনার গন্ধ মাখে,
নতুন সুখের স্বপ্নে মোড়া দেহ দিনভর ঘামে ভেজে,
চারপাশে টক-নোনতা গন্ধ ছড়ায়।
কখনো কখনো দেয়ার ডাকে আকাশ ফাটে
গারো পাহাড়ের উপরে সাজে আরেক পাহাড়!
বৈশাখ চোখ রাঙায় নতুন ধান শুকোবার একচিলতে উঠোনের কৃষাণীকে,
অতর্কিতে এসে ধুয়ে নেবে-
দিঘীর তলা থেকে উঠানো এঁটেল মাটি আর গোবরের লেপ;
উড়িয়ে নেবে বসত আর গোয়াল ঘরের চালের জীর্ণ ছাউনী;
তছনছ করে দেবে বিয়ের বয়েসী মেয়ের-
তোলা জলে গা ধোয়ার বাঁশের পুরনো বেড়া!
টানটান দুপুরে কাঁচামিঠে আমের ছায়ায়
মেটো বাসনে জল ভাসা লম্বাটে আমের ফলি;
কাঠালের রোম উঠা মজি,
সর্ষে বাটা আর মরিচ গুঁড়োতে মিশে এ পাড়ায় ষোড়শীর বৈশাখ হাসে,
চোখে তৃপ্তির জল আনে; খুনসুটিতে যায় ভেসে।
সুতো কেটে আটকে থাকা লাল বেগুণী ছাপের ঘুড়িতেই
ডানপিটে কিশোরের বৈশাখ দিনভর ঝুলে
তেপথার বুড়ো অশত্থের ডালে ।