সবুজ গালিচায় মখমলে হাওয়ায় ঘেরা নিবিড় এ প্রান্তর,
নয়নাভিরাম প্রেক্ষাপটে স্বপ্নালু ছোঁয়ায় জেগেছিল মোর অন্তর।
মিষ্টি ঠোঁটে আলতো হাসির মতো ঝিলিক হৃদয়ে দিয়েছিলে দোলা,
পাহাড়ি প্রান্তে ঢাল বেয়ে কি আবেগ ছড়ালো মোর এ জীবন বেলা।
নীল পরীর দেশে চাঁদের আলোয় চা বাগীচা হয়ে উঠে যেন মায়াবী,
স্বর্গীয় রূপের টানে পর্যটকদের আনাগোনা হয় না কখনও বিবাগী।
রঙিন পোশাক, পায়ে গামবুট আর আঙ্গুলের যাদুতে উপচে পড়ে ঝুড়ি ,
ছন্দময়তায় নাইতেংগেল-সুর যেন, অনুভবে আটখানা হয়ে পড়ি।
সারি দিয়ে রমণীগণ দু হাতে লুফে নেয় সদ্য ফোঁটা চা পাতা,
অনাবিল আনন্দে জেগে থাকে কি তাদের জীবনের হিসেব খাতা!
চা বাগানের সবুজ ক্যানভাসে আঁকা এই জীবন মাঝে,
এক কঠিন বাস্তব চিরকাল ধরে, নিরন্তর যে বাজে!
সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নাতে জড়ানো তাদের জীবন কথা,
চা শ্রমিকদের জীবন ধারায় সুপ্ত থাকে গতানুগতিক ব্যথা।
সবুজের ভাণ্ডারেও কি নির্মম, অমানবিক ও বর্বর জীবন,
সামান্য মজুরীতে দিনরাত এক করে করতে হয় কঠোর পণ।
কলম কাঁটা, চারা রোপণ , আগাছা পরিস্কার সবই করে থাকে নারী কর্মী,
পরিবার পরিজন নিয়ে অপুষ্টিতে বেঁচে থাকা তাদের যেন নিত্য সঙ্গী ।
যাঁতাকলে পৃষ্ঠ হয়ে প্রাণপাত করে প্রায় নব্বই শতাংশ নারী শ্রমিক,
নেতাদের ভরসা, মালিক পক্ষের আশ্বাস সব হয়ে যায় কুহক।
প্রকৃতিকে উপভোগ করে ভ্রমন পিপাসুগণ ক্লান্তি মুছে, নেয় বিদায়,
শ্রমিকের কান্না আর আহাজারি রয়ে যায় এক গহিন সীমানায়।