আমাকে হারাতে দিও না অবহেলে
কে জানত ওই ক্ষয়ে যাওয়া ঝর্ণাজলে
আমি সেরে নেব চৈত্রের স্নান।
ঘর ছাড়ার অজুহাতে লুকাতে গিয়ে বারবার
পরে যাব তোমার সামনে।
ঝোপঝাড়ে ঢাকা পঞ্চনদীর মোহনায় বসাও পাহারা আমাকে দূর থেকে বিস্তৃত অবসন্ন বটবৃক্ষের দিকে তাকাতে দাও না নিষ্পলকে।
কারণ আমি বনের কাছে, বৃক্ষের কাছে ঋণী
হারিয়ে যাওয়ার উদগ্র বাসনা আমার মস্তিষ্কের নিউরণ ধরে টানে চিরদিনই।
তবু আমায় শক্ত করে ধরো যতটা পারো
কে জানত অকূলে হারানো নৌকার ছেড়াপাল তুলে প্রতিশোধের গল্পে তোমার রক্ষিত সম্পদে ভাগ বসাবে মাঝিমাল্লা।
আমাকে আশ্বস্ত কর যেভাবে অতীতের গল্প বলো মৌয়ালের কাছে, মৌচাকে নিমগ্ন গাছের কাছে, মানুষখেকো জন্তুর মুখ থেকে ফিরে আসার গল্প।
ছেড়া মাস্তুল তুলে চিৎকার করা প্রার্থনা
সেদিন নদীর কাছে, আকাশের কাছে।
তোমার সাহস দেখেছি, দেখেছি ভেঙ্গে না পড়ার মন্ত্রবল
যে চৈত্রের নদী তোমার ভুলে যাওয়া কৈশোরের আজন্ম লালিত আকাঙ্ক্ষার কাছে হার মানে,
তার মত আমাকে হারতে দিও না।
যা কিছু ছিল হৃদয়ের কোঁটরে জমা হওয়া বিশ্বাস, স্বপ্ন, মুগ্ধ স্মৃতিকথা সব বন্ধক রেখেছি মানুষের কাছে,
শুধু ঋণী থেকে গেছি বনের কাছে, বৃক্ষের কাছে।
সব কিছুই কি আজ হেরে যাবে, হেরে যাবে অস্তাচলগামী সূর্যের লাল।
তুমি মেরুন আকাশে ঢলে পরা সূর্যের কাছে কামনা কর আমার ভবিষ্যত,
দেখবে আমি চৈত্রের স্নান সেরে পবিত্র দেহে কালের স্রোতে ভেসে যাব তোমার পঞ্চনদীর মোহনায়।
(২রা জুন ২০১৯)