আমি সেই পুরুষ

আমি সেই পুরুষ,
যে জানে, নারী কেবল শরীর নয়, সম্মানের প্রতিমূর্তি,
যে জানে, এই পৃথিবীর প্রথম আশ্রয় মায়ের জঠর,
আমি কখনো ভুলি না, সেই আঁধারের উষ্ণ নিরাপত্তা,
কখনো ভুলি না, আমার জন্ম এক নারীর যন্ত্রণার ফসলে।

আমি সেই পুরুষ,
যে জানে কর্তব্য মানে দেশ, সমাজ, সংসার,
যে জানে, বুকে চেপে রাখতে হয় নিজের কষ্ট,
মুঠো বাঁধতে হয়, তর্জনী উঁচিয়ে বলতে হয়— "আমি আছি!"

আমি সেই পুরুষ,
যার হাত পাকা ধানের রোদে পোড়ে,
যার পিঠে বোঝা— একবার লাঙল, একবার স্প্রেয়ার মেশিন,
দিন শেষে ক্লান্ত শরীরটা যখন শুয়ে পড়ে,
তখনো কানে বাজে সন্তানের হাসির শব্দ,
তখনো বুক কাঁপে সংসারের উষ্ণতা ছুঁয়ে।

আমি সেই পুরুষ,
যে কারখানার গরম লোহার পাশে ঘাম ঝরিয়ে
নগরে আলো জ্বালে, চাকা ঘোরায়,
কিন্তু নিজে ঘরেই অন্ধকারে থাকি,
বঞ্চনার কালো ধোঁয়া গিলে ফেলে আমার নাম।

আমি সেই পুরুষ,
যে সব বোঝা নিজের কাঁধে তুলে নেয়,
সংসারের হাল ধরে রাখে টানটান,
নিজের অসুখ ঢেকে রাখে, যেন সংসারের রোদ না মলিন হয়।
আমার ক্লান্তি কেউ বোঝে না,
আমার কান্না বাতাসেই মিলিয়ে যায়।

আমি সেই পুরুষ,
যে জানে, তার কাছে শুধু প্রশ্ন— "তুমি করেছটা কী?"
কিন্তু তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেউ নেই।
তবু আমি দাঁড়িয়ে থাকি, বুক চিতিয়ে,
কারণ আমি সেই পুরুষ—
যে ভেঙে পড়েও, ভাঙে না।