ক’দিন আগেও মেয়েটি অনেক ঝকঝকে ছিলো,
তামাটে চুল আর কৃষ্ণ বর্ণ শরীর দিয়ে যেন
দীপ্তমান আনন্দ আর উৎসব ঝড়ে পড়তো।
আঙ্গুলে আঙ্গুল মুঠি করে
থলে ভর্তি স্বপ্ন বয়ে বেড়াতো।
জাগিয়ে তুলতো শিক্ষা ও
সাংস্কৃতিক মানবতার গল্পগুলো।
কাদাটে মুখের মলিন হাসিতে
যেন হুমরি খেয়ে পড়তো বিশ্ব।
কৃষ্ণাঙ্গে এতো আলো আর উত্তাপ
ছড়াতে পারে, আগে কখনো দেখিনি।
সকল বিভাগেই তার বিচরণ ছিল
অবাদ এবং অঘাত...
চিত্র প্রতিযোগ থেকে শুরু করে
শহরের আধভাঙ্গা নাট্যমঞ্চ।
সবাইকে আন্দোলিত করতো
তার শিল্প ও শৈলীতে!!
অনেকদিন বাদে জানতে পারলাম
তার পতিত জমির খবর।
রাজপথের ফুটপাতে অবৈধ টংয়ে
পতিত জমির পশরা বসে।
একশো টাকার বিনিময়েই জোটে
পতিত জমির আবাদি ফসল।
অনেক সময় জোর জবরদস্তিতেই
ফসল তুলে নেয় শকুনেরা।
তখন নিজেকে অক্ষম ছাড়া
আর কিছুই ভাবতে পারিনি!!!
দেখা হয়েছে অনেক, কিন্তু
কথা বেড়োয়নি কোনোদিন।
তবুও ওর জন্য নরম কোণ
আমার কর্পোরেট হৃদয়ে!
ওর চাহিদা পূর্ণ হতোনা কখনোই...
জুয়ারি বাপের টাকা,
আজন্মা অসুস্থা অন্ধ মায়ের চিকিৎসা।
আর, নিজের জন্য...
এক মুঠো ভেজা সাদা ভাত
ও একটি পোড়া ঝাল।
হঠাৎ একদিন, সব কোলাহল থেমে গেছে।
থেমে গেছে খাবারের জন্য অনশন,
বাঁচার জন্য আন্দোলন।
অনেক লাভের এবং পাপের বোঝা,
ক্রমশ ভারি হচ্ছিল।
একটু বিশ্রাম চেয়েছিল, স্নান চেয়েছিল,
অভিশাপ ধোঁয়ার শুদ্ধ জলে।
অবশেষে স্নান সে করলো
কিন্তু শুদ্ধ জলে নয়।
ঝাপিয়ে পড়েছিলো হেমলক সমুদ্রের অতলে
কঠিন পাপের বোঝা ভাসিয়ে মৃত্যু গঙ্গায়।
এখন চিৎকার করে জানতে ইচ্ছে করে,
শহর তুই কেমন আছিস?
কেমন আছিস শিল্প?
কেমন আছিস নাট্যমঞ্চ?
তোরাসব কেমন আছিস?
কেমন আছিস?