আমি জন্মান্তরে বিশ্বাস করি ।
রাই এর যেদিন জন্ম হোলো -
বাড়ির সবাই রাইকে দেখে এসে বললো,
মা-এসেছে- মা এসেছে।
নাক, চোখ, কপাল-
যা কিছু, সব -একদম যেন মায়ের মতো।
দিন কাটল-
একটু একটু করে রাই বড় হোলো ।
আস্তে আস্তে রাই -
আমাদের মা হয়ে গেল।
মায়ের মতো করে একদিন রাই বললো-
তোমরা সব বোনেরা-
একসাথে কোনোদিন -এলেনা!
তখন রাইয়ের বয়স বড়োজোর-
দুই কিংবা তিন বছর ।
মনে পড়ে গেল-
আমাদের মা'কে।
এভাবে তো কেবল মা'ই
আমাদের বলতো!
রাই ছোট্টো বেলাতেই বড় গিন্নি,
একদম যেন মা'য়ের প্রতিবিম্ব।
ওর যেন ছোটোবেলাতেই বড়োবেলা!
বাড়িতে কেউ এলে-
কেমন করে করতে হবে আপ্যায়ন-
কেমন করে জিজ্ঞেস করতে হয়-
তাদের কুশল সংবাদ-
ওর যেন সব জানা!
আমাদের মা'য়ের মতো করেই
ডাকতো সবার নাম ধ'রে-
আমাদের কাকা, পিসি, কাকিমা'কে
যারা কিনা সম্পর্কে-
কেউবা ওর দাদু কিংবা ঠাকুরমা।
সবাই তখন অবাক হয়ে বলতো-
কি করে রাই জানতো!
আমাদের মা যে এ ভাবেই-
নাম ধ'রে সবাই'কে ডাকতো!
রাই আমাদের মায়ের মতোই-
ধীর, স্থির, শান্ত।
কখনো কোনো কারণেই -
ছোটদের মতো করে নিজেকে বাঁচাতে -
বলেনা কোনো মিথ্যে।
আমাদের মা'য়ের মতোই,
সেই ছোট্টো বেলা থেকেই -
কখনও ছোটদের মতন ,
নিজের দোষ ঢাকতে -
অন্যের ঘাড়ে দেয় না দোষ চাপিয়ে।
তাই তো আমারা ভাবি সবাই
মা -আমাদের ছোট্টো রাই।
আমাদের বোনেরা, যারা সম্পর্কে ওর পিসি হই,
তেমন ভাবে কিন্তু কখনও পায়নি কাছে রাই ।
কিন্তু তবুও -
আমাদের'কে কাছে পেয়েছে যখনই -
দেখেছি-আমরা যেন-
ওর অনেক- দিনের চেনা।
তাই আজ -আমি জন্মান্তর-বাদ মানি।
মা, তুমিই এসেছ ফিরে,
তোমার ফেলে যাওয়া খেলা-ঘরে-
ঘর আলো করে।