বউ ,
হেঁটে যাচ্ছে,
গট্ গট্ করে।
শাশুড়ি মালাটা,জপতে-জপতে -
থেমে গেল।
ভুসুন্ডি কালো বউয়ের -
এত তেজ!

না হয় দু-কলম ইঞ্জিরি লিখতে পারে,
তাতেই এত দেমাক!
বাপ অবশ্য-
দিয়েছিল, থুয়েছিল-
আর সেইজন্যই তো-
এই কুলীন বাড়িতে-
জায়গা হোলো!

হঠাৎ কলপাড়ে-
ওয়াক্ -ওয়াক্-
আ-মরণ!
ধিঙ্গি বউয়ের-
এ আবার কি ঢং!

শাশুড়ি আবার-
মালা জপছে।
থলির ভিতর হাত রেখে-
সারা- দিন কি যেন-
বিড়্ বিড়্ করছে!
রাতে খোকা অফিস থেকে ফিরলে-
তারপর মা-ছেলের-
অনেকক্ষণ-ফিস্ ফাস্।

সকাল বেলায়-
বউকে নিয়ে গেল-
নার্সিংহোম।

তারপর-
ডাক্তার-বাবুর সঙ্গে-
কিছুক্ষণ ও ঘরে কথা হ'ল-
যখন ওর ঘুমের ঘোর কাটল-
তাকিয়ে দ্যাখে-
নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে-
স্বামী পাশে ব'সে।

মা হবার যে স্বপ্ন-
এতদিন লালন করেছিল-
তা যেন মুহূর্তেই-
তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল।
মেয়েটি চিৎকার করে উঠল-
কেন  আমাকে তোমরা-
মা হতে দিলে না?
কেন  আমার সন্তানকে তোমরা-
পৃথিবীর আলো-
দেখতে দিলে না?

আমার সন্তানকে মাতৃগর্ভে হত্যা করবার-
কে দিল তোমাদের অধিকার?
ওর স্বামী-
আস্তে আস্তে ওকে বলল-
ঐ সন্তান তো কন্যা সন্তান!

এরপর-
উদ্ভ্রান্তের মতো মেয়েটি উঠে বসল,
বলল, 'কন্যা সন্তান '!
তুমি 'কন্যা সন্তান' হত্যা করেছো?
তুমি কি জানো?
আজকের কন্যা সন্তানই-
ভবিষ্যতের মা।

আজ যে পৃথিবীকে দেখছো-
যে উর্বরা ধরিত্রীর-
আলো, জল,বাতাস, শস্য-
সমস্ত জীবনের উৎস-
সেই ধরিত্রীই আমাদের মা।

এমনকি যিনি-
তোমাকে গর্ভে ধারণ করেছেন-
তিনিও কিন্তু একজন মা।

ভবিষ্যতের মা'কে যদি তোমরা-
পৃথিবীর আলো দেখতে না দাও-
তা'হলে দেখবে-
এই সৃষ্টিই যাবে একদিন ধ্বংস হয়ে।
আর কালের স্রোতে-
সেদিন তুমি, তোমাদের আগামী প্রজন্ম-
সকলেই যাবে বিলীন হয়ে।।