পদ্য ও কবিতার মৌলিক ফারাক
-------------------------------------------
যতিদ্বারা নিয়ন্ত্রিত বাক্যই পদ্য, যেখানে নির্দিষ্ট
মাত্রায় পর্বভাগ থাকে।আর ছেদদ্বারা নিয়ন্ত্রিত বাক্যই গদ্য। গদ্যছন্দে রচিত গদ্যকবিতাও ছেদদ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
বাংলাসাহিত্যে ৪ প্রকার ছন্দে রচিত পদ্যের মূলফারাকগুলো আমি নিচে তার বর্ণনা দিলাম।
তবে এর বাইরে ছন্দের নামে যা কিছু বলা হয়,
তা ছন্দ নয় বরং পদ্যের একেকটি ফর্মেট বা কাঠামো বা বন্ধ। যেমন, মুক্তক, মিত্রাক্ষর, অমিত্রাক্ষর, সনেট, পয়ার, একাবলি, বহুপদী, দিগক্ষরা,তোটক, ইত্যাদি।
পদ্য -------
( পদ্য,ছড়া ও কবিতা)
১) শুধু স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্তছন্দেই রচিত হবে।
২) অবশ্যই অন্ত্যামিল থাকবে।
৩) ছড়া ব্যতীত পদ্য ও কবিতায় সুনির্দিষ্ট মাত্রা,পর্ব ও পঙক্তিসমতা থাকবে।
৪) তিনছন্দের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ম ব্যতীত পদ্য হবে না।
৫) মিশ্রছন্দে ছড়ারচনা করা গেলেও মুক্তক-পদ্যরচনা করা যাবে না।
৬) ছন্দযতির নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
মুক্তক- কবিতা
--------------------
১) তিনছন্দের কাঠোমো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
২) তিনছন্দের মাত্রা ও পর্ববিন্যাস ঠিক রেখে সম-অসমপঙক্তি রাখা যাবে।
৩) অবশ্যই অন্ত্যমিলযুক্ত কিংবা অন্ত্যমিলবর্জিত হবে।
৪) অন্ত্যমিল দিলে নাম হবে সমিল-মুক্তক বা মিত্রাক্ষর এবং অন্ত্যমিল বর্জিত হলে বলা হবে অমিল-মুক্তক বা অমিত্রাক্ষর।
৫) এতে পদ্য বা ছন্দযতির নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
গদ্যকবিতা
----------------
১) সমগ্র কবিতা হবে পরস্পর ছেদবিচ্ছিন্ন -চরণের দ্বারা গঠিত।
২) চরণ হবে যথাসম্ভব পর্ববহুত্ব বর্জিত
৩) চরণ -দৈর্ঘ্য হবে অর্থানুযায়ী স্বাধীন। সংযতবাক ও প্রগাঢ় অথচ সরল, মৌখিক শব্দবিন্যাসে বদ্ধ ও পদ্যে ব্যবহৃত শব্দবর্জিত হবে এই ছন্দ।
অথবা
---------
১) গদ্যকবিতা পদ্য ও মুক্তকরীতির সম্পূর্ণ আওতামুক্ত হবে।
২) পর্ব, মাত্রা ও পঙক্তির কোনোরূপ নিয়ম ও সমতা থাকবে না।
৩) কোনো অন্ত্যমিল থাকবে না।
৪) পদ্যযতির বদলে ছেদদ্বারা নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
৫) চরণে পর্ব বা বাক্যাংশ কম ব্যবহৃত হবে।
গদ্যছন্দেরও রয়েছে আলাদা সৌন্দর্য। এর মাধ্যমেও চমৎকার কবিতা লেখা সম্ভব। গদ্যছন্দের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ভাবনির্মাণে শব্দের স্বাধীনতা ভোগ করা যায়।
তথ্যপ্রদানকারি
শাহিদুল ইসলাম
সকলতথ্য সংরক্ষিত,