নীলু,
কেমন আছিস? অনেক দিন তোকে দেখিনা,
আজ আবার লিখছি চিঠি, অনেক দিন তো লিখিনা।
বৌমা ভালো আছে? আর আমার দাদুভাই?
জানিস খুব ইচ্ছে করে, তোদের একটু কাছে পাই।
সেই সেবার এসেছিলি, নিলি আমার হাতের ছাপ,
তারপর তো আর এলিনা, জানি ভীষণ কাজের চাপ।
রাতে ভালো ঘুম হয়না, তোদের কথা মনে পড়ে,
এমনিতে খুব ভালই আছি, বুকটা খালি কেমন করে।
কয়েকদিন তোর বাবা আসে, হাতছানি দেয় আমায় ডাকে,
এমনি ভাবে রাত কেটে যায়, চাঁদ ডুবে যায় গাছের ফাঁকে।
কখনও বা এইটুকু তুই, দৌড়ে এসে জাপটে ধরিস,
সময় যদি পাস কখনো, চিঠিখানা একটু পড়িস।
অফিসে তুই কি খেয়ে যাস? সকাল সকাল ভাত হয়?
টিফিনে রোজ কি নিয়ে যাস? ফিরতে তো সেই রাত হয়।
পিঠে খেতে ভালোবাসতিস, আমার হাতের সর্ষে ইলিশ,
কখনও খেতে ইচ্ছে হলে, রাঁধব আবার আমায় বলিস।
তোর তো খোকা বুকের অসুখ, কে করে দেয় গরম জল?
শুনেছি নাকি ফ্ল্যাট বাড়িতে, ঠান্ডা গরম দুখানা নল।
অনেক বড় মানুষ হ তুই, দিনে দিনে বাড়ুক মান,
আমার নীলু দেশের দশের, শুনেই আমার জুরায় কান।
লিখতে আর পারছি না রে, হাত তা এখন কাঁপছে খুব,
রাত্রি বোধহয় কেটেই গেল, ফর্সা হলো দূরের পুব।
ছুটি পেলে পারলে আসিস, সামনেই তো পুজোর মাস,
ইতি,
আমি মা রে তোর
ঠিকানা: সেই বৃদ্ধাবাস।