সেদিন সীমান্তের মিলন মেলায় কিছু ক্ষন কাটিয়েছি
হেমতাবাদ বর্ডারের মিলন মেলা,
কত মানুষ দুই বাংলার দুই পারে, কাঁটাতার ধরে দাঁড়িয়ে!
বছরের একটা দিন ওদের খুব কাছে আসতে দেয়।
ওরা একে অপরকে মন ভরে দেখতে পায়, কে জানে ভবিষ্যত কি হয়!
কাঁটাতারের বন্ধন মুক্ত হয়ে,
কিছুটা মুহুর্তএপার বাংলার মানুষ ওপার বাংলার প্রিয়জনদের সাথে কাটাতে চাই।
ওরা সেই হারানো গন্ধ খুঁজেপেতে চাই।


সেদিন সীমান্তের মিলন মেলায়  কিছু ক্ষন কাটিয়েছি
ওরা একমনে কি যেন ভেবে যাচ্ছে,
কাছের মানুষের জন্য কত রকমারি খাবার এনেছে।
ওদের  হাতে অনেক অনেক টাকা নেই,
ওরা জানে না  পাসপোর্ট,ভিসা আইন নিয়ম!
ওরা শুধুমাত্র জানে কাঁটাতার ঘেরা উলটো দিকের মাটি অন্য দেশের,কাঁটাতারের ওপারে যাবার ওদের কোন অধিকার নেই।
কোন একসময় একই হাঁড়ির ভাতে ওদের ক্ষিদে মিটেছে
পুকুর পাড়ের জাম জামরুল গাছ সব কিছুতেই লুকিয়ে কত স্মৃতি , ওরাই আজ  কেউ বাংলাদেশ কেউ ভারতের মাটিতে।


সেদিন সীমান্তের মিলন মেলায় কিছু ক্ষন কাটিয়েছি
ওদের চোখ মুখের ভাষা অন্য কথা বলছে ,
কত যন্ত্রনা পাথর চাপা আছে বুকের ভিতরে!
কাঁটাতার ধরে দাঁড়ানো মানুষগুলো একে অপর কে কত কথা বলতে চাই! ওদের কত কিছু জানতে ইচ্ছে করে ।
ওরা আবেগ ধরে রাখতে পারে না,ওদের গলা শুকিয়ে যায় ,শুধু অপলক দৃষ্টিতে একেঅপরের দিকে চেয়ে থাকে!


সেদিন সীমান্তের মিলন মেলায় কিছু ক্ষন কাটিয়েছি
তখন আকাশে কোন মেঘ ছিল না,
দু দেশের উর্দিধারীদের কোন চিৎকার চেঁচামেচি নেই,
ওঁরাও আজ বিষন্ন, ওদের মনের কোণে কোথাও একটা দুর্বলতা নাড়া দেয়!
বার বার সামনে এসেছে, কত মানুষের দুঃখ , আবেগ স্মৃতি আটকে রাখা সীমান্তের কাঁটাতার!
গত বছর যে মা ছুটে এসেছিল তার মেয়ের জন্য,
তার চোখের নিচে জমা কালির হিসেব কেও কি রেখেছিল?
সে শুধু একবার নিজের চোখে দেখতে চেয়েছিল তার সেই মেয়েকে।
সীমান্তের কাঁটাতার সাক্ষী রেখে  মেয়ের মুখে একবার শুনতে চেয়েছে ,সে ভালো আছে।
আজও নোম্যান ল্যানডের হাডবেড়ানো গাছের ডালের বাজ পাখিটি এক মনে সেই মাকে খুঁজছে!  
সেই মায়ের ভালোবাসা কোনও ভুখন্ডে আটকে থাকতে পারে কি?
ওদের স্নেহ,মমতা এসব আটকাবে কোন কাঁটাতার ?  
যে মেয়েটি কারো অপেক্ষায়  এক ভাবে ওদেশের পথ চেয়ে আছে, তার আবেগ কি দেশের গণ্ডিতে বাঁধা যায় ?