পাড়ার  মোড়ে ভাঙ্গা চোরা ঝুঁকে পরা বাড়িটার রকে ,
যে ছেলে গুলো হাপ প্যান্ট আর গোল গলা গেঞ্জি পরে আড্ডা মারতো,
অনেক দিন ওদের কোনো খবর নেই!
রাস্তার কুকুর গুলো ওদের বেশ  চিনতো , ওরা কি সুন্দর ওদের পায়ের কাছে মাথা গুঁজে পরে থাকতো ।
ছেলে গুলোর কাছে কেও কোনদিন কোন কিছুই আশা করেনি , অনেকেই ওদের বেয়াদব , বদমেজাজি , আড্ডাবাজ এসব বলতো !
ওরাও এসব শুনতে ভালোবাসতো!

সমাজ রাজনীতি ধর্ম সব কিছুর দেখানো পথের  সাথে ওরা মানান সই না।
ওদের মুখের ভাষাতেও দাঁড়ি কমা পুরন‍্যছেদের  বডড অভাব।
তবু ওরা ছিল , ওরা ওদের মতই ছিল!
রাস্তার কোন ভবঘুরে না খেতে পেয়ে ঘুরছে , গলির ভিতর বাচ্চা দেওয়া কুকুরের বাচ্চা গুলো রাস্তায় না আসে সেসব দিকে ওদের লক্ষ্য ছিল!  
বিয়ে বাড়ির বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে এখানে ওখানে ভালোমন্দ না খেতে পাওয়া মানুষদের খাবার খাইযে ওদের সাথে আনন্দ ভাগ করে  রাতের পর রাত ওরা কত আনন্দে কাটিয়েছে।
অনেক রাতে পা টিপে টিপে ঘডে ঢোকা , ঠান্ডা হয়ে যাওয়া খাবারে কোন মতে রাতের খাওয়া শেষ করে বিছানায় শরীর এলিয়ে ঘুমন্ত বাবার কফ জমা বুকের ঘর ঘর শব্দ শোনা ছেলেটিকে দেখছি না তো!  
পাড়ার কেও অসুস্হ হলে যত রাত হওক ওরা হাজির! হাসপাতাল কিম্বা শ্বশান সব যাত্রাতে ওরা হাজির, ওদের  কখনো ডাকতে হয় না !
কোন আপ‍্যযনের দরকার নেই।
ওরা টিক সময়ে হাজির হয়ে যায় । ওরা খুব শক্ত মনের, কোন কিছুই ওদের স্পর্শ করে না।

সেদিন শহরের নামকরা পরিবারের বিয়ে বাড়িতে  বেঁচে যাওয়া খাবার হাতে ওরা বেড়িয়ে ছিল ।বাড়ির কর্তা সব ব‍্যাপারে হিসেব নিকেসে পাকা তাই বেঁচে যাওয়া খাবারের পরিমান  দেখে মনে হচ্ছে কিছুটা ইচ্ছে করে বাড়ানো , হযতো কারো হাসি কেনার ইচ্ছে ।
ওরা  সবার অজান্তে অনেক মানুষের সাথে ছোট্ট এক বাচ্চার হাতে  খাবার তুলে দিযেছিল, কত ভালো ভালো খাবার তবু কেন ওর  মুখে হাসি নেই,ওর কি ক্ষিদে নেই ?  
ও খাবার হাতে বেরিয়ে গেল! যাওয়ার  আগে বলেছিল  এত ভালো খাবার ও কিভাবে খাবে!
ওরা ওর পিছু নিয়েছিল , ওর অপেক্ষায় আরও দুটো বাচ্চা  ওরা ক্ষিদেয় ছটফট করছিল , বাচ্চা মেয়েটি  সমস্ত খাবার ওদের খাইয়ে দিল!
জীবনের এই রুপ ওরা কখনো এতকাছ থেকে দেখে নি, ওরা ছুটে গিয়ে কিছু খাবার আনতে গেল!  
এত রাতে কিভাবে কোথা থেকে খাবার আনবে!
ওদের এত চিন্তিত কখনো দেখিনি, এত অস্বস্তি !
কিন্তু এত সহজে হেরে যাবে হতে পারে না।
ও মেয়েটি না খেয়ে থাকলে এ পরাজয় ওরা মানতে পারবে না!
ওদের একজন নিজের ঘডে  ঢুকে ওর রাতের খাবার নিয়ে আসলো, আজ  ছেলেটির জন্ম দিন মা পায়েস রান্না করছে কত তরকারি, সমস্তটাই খাইয়ে দিয়ে ঘডে ঢুকছে!  সবার অলক্ষে মেয়েটিকে খাইয়ে ওরা যখন ফিরছে , তখন মেয়েটির মুখের যে হাসি ওরা দেখেছিল  সে হাসির থেকে বড় জন্মদিনের উপহার আর কি হতে পারে ?

মা কি জেনেছিল ,জন্ম দিনে মায়ের রান্না খাইয়ে এত তৃপ্তি পাও‍যা যায, অনেকেই জানে না!
রাত তখন অনেক ছেলেটি  ঘডে ঢুকে দেখলো মা রান্না ঘডে,ছেলের জন‍্য নতুন করে রান্না করছে সেও জানে তার ছেলেকে !
ছেলে না খেয়ে থাকবে এটা কখনো হতে পারে না!
ওরা বলেছিল,  সবাই আমরা হাসি কিনতে চেয়েছি !  
কেউ কাওকে বলেনি কিন্তু !
কে কতটা হাসি কিনতে পেরেছি?