গাছটি আমার বয়সী,কয়েক  মাসের  বড়  হয়তো!
তবুও ছোট্ট বেলায়  হামাগুডি দিয়ে কান মোলার মতো ওর পাতা ছিঁড়েছি ,
সে যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়েছে  কিন্তু কিচ্ছু বলেনি।
বড় দের মত মুখ বুঝে অত্যাচার  সহ্য করেছে ।
বড় দিদিদের বোধহয় এভাবেই সহ্য করতে হয়?
সে আমার বাড়ির উঠুনের কাঁঠাল গাছ।

সে বড় হয়েছে , পরিবারে একজন হয়ে সাজিয়ে  রেখেছে।
সে কত কাঁঠাল দিয়েছে, ইচরচিৎড়ির  কি সুন্দর স্বাদ পেয়েছি।
পাকা কাঁঠালের গন্ধে ম ম করতো চারপাশ!
ওর সবুজ পাতা মোড়া চেহারা দক্ষ শিল্পীর আঁকা সেরা চিত্র মনে হত!
ওর গাছের ডালে কত পাখি এসেছে,
ওদের সাথে মনখুলে কত কথা বলেছি ।

সে কত বার ঝড়ের দাপটে ,নিজেকে এদিক ওদিক বাঁকিয়ে
রান্না ঘড়ের দেওয়াল বাঁচিয়েছে!
সে  জানতো আমরা ক্ষিদে সহ্য করতে পারি না!
হিসেব করিনি কখনো ,ওতো সবার জন্য কত কি দিয়েছে
ফুল ফল বাতাস অক্সিজেন কখনো এতটুকুও কার্পণ্য করেনি।
গাছের ডালে বসা পাখিরা উঠান নোংরা করেছে , শুকনো পাতা ঝরে অপরিষ্কার লেগেছে, তাই কি এত রাগ জমা।

কেও বলেছিল, নতুন ঘড়ের ভীত নাড়িযে দেবে ওগাছ
আজ সে গাছ নেই, ওর জায়গার  চকচকে পাকা বাড়ি!
সে ভীত নাড়ায় নি কিন্তু ওদের ধ্বংস করে  
আমরা  জীবনের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছি।
গাছেদের বাঁচাতেই হবে,ওদের জন্য না নিজেদের বাঁচার জন্য।
আজও সন্ধ্যা বেলা গুমট গরমে  বাতাসের স্পর্শে মনে পড়েছে  তোমাকে ,
তুমি সত্যি বড় দিদি ছিলে কি?
তোমার ভিতরে মায়ের স্নেহ দেখেছি কত বার!