একেবারে যে খারাপ আছি তাও নয়,
ধীরেধীরে শিখছি
কেউ কারো নয়।
খুব আপন বলে যাকে বন্ধু ভাবা হয়
সেও খুব প্রয়োজনে পাশ ফিরে রয়।
আবার কেউকেউ খুব পর হয়েও
মাঝেমাঝে বাড়ায় হাত,
তবে যার লড়াই তাকে নিজেই লড়তে হয়
কারণ সেই হাত জামা অব্ধি পৌছালেও
গা অব্ধি পৌঁছায় না,
আর জামা ছিড়ে যেকোনো মুহূর্তেই
খাদে পড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।
তাই আমি শিখেছি জীবন ঝুলে আছে,
জীবন ঝুলেই থাকে—
কখনো মগডালে
কখনো কচুগাছের পাতায়;
শুধু পাতার সাথে মাটির দূরত্ব এতোটাই কম
যে আমরা মনে করি এখন বোধহয় আছি স্থির,
স্বাভাবিক এবং নিজের পায়ের উপর দাঁড়িয়ে।
আমাদের ভুল ভাঙে
কেননা জীবনের ভার সহ্য করার মতো ক্ষমতা
পাতার নেই, সে খুব সহজেই ছিড়ে যায়।
তারপর আমরা হালকা আঘাত নিয়ে উঠে দাঁড়াই
আর ভুলে যাই একটা সামান্য কচুগাছ
আমাদের আত্মাকে এতোটাই কচুকাটা করে
ফেরত পাঠিয়েছে যেন
আমরা স্বেচ্ছায় মগডালে ঝুলে যাই।
ওদিকে মগডালে ঝুলে থাকতে থাকতে
একসময় আমাদের পতন হয়,
নিচে নেমেই আমরা অভিকর্ষণকে
ধন্যবাদ জানানো শুরু করি—
আমরা ধরে নিই আমরা নিরাপদ আছি।
অথচ এতো উপর থেকে পড়ে
আমাদের হাত-পা
কিছুই আর অক্ষত নেই,
একেবারে লুলো না হলেও
নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সক্ষমতা
আমরা হারিয়ে ফেলি।
যারা এটা বুঝতে পারে তারা দমে যায়,
আর বাকিরা লাফাই—
তাদের লম্ফঝম্প দেখে মনে হয়
আহা! কি সুখ!
আমাদের হিংসেই লাগে,
কিন্তু রাতের আঁধারে
যখন আর উত্থিত হয়না যৌবন তাদের
তখন ওদের আমাদের দেখেই হিংসে হয়।
অথচ আমরাও কিছু বলতে পারিনা
নিজেরাই কিছু করতে পারিনা,
কারণ হিন্দি সিনেমার ওই গানের মতোই
“একটি মশাও পুরুষকে হিজড়ে বানায়।”
আমরা তাই মশা মারার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি,
আর দেখতে দেখতে আমরাই একসময় মশা
হয়ে মাকড়সার জালে আটকে পড়ে যাই।
হাজার চেষ্টা করেও
কোনোভাবেই বেরোতে না পেরে
আমরা মাকড়সার কাছেই প্রাণভিক্ষা চাই,
অথচ মাকড়সা জাল বুনেছিলো এটা জেনেই যে
কেউ কারো নয়।
৮ জুন ২০২২।