ভয়াল সে দীর্ঘ রাত।।
আজও শিওরে উঠে প্রাণ,
ঘুমন্ত নগরে আচমকা হায়েনারা;
থমকে যেতে যেতে স্পন্দিত হয় হৃদযন্ত্র!
বুলেট বিঁধে বাংলা মায়ের বুকে।
গুলি আর গ্রেনেডের শব্দ যেন-
ধেঁয়ে আসে আমাদের নীড়ে ধীরে ধীরে;
এ ই ছিলো যেনো কপালের লিখন।
দরজায় খিল দিয়েও হয় না শেষ রক্ষা
শকুনিরা ক্ষুধার্ত, এক দল শকুনি!
লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাঁচতে পারে নি আমার মা....
আমি চিৎকার করে কাঁদি-
'ছেড়ে দে শয়তান, ছেড়ে দে...'
এক ছাড়ে তো আসে আরেক... বিরামহীন..
আমার চিৎকার শোনে না-
মাটিতে পড়ে থাকা বাবার নিথর দেহ।
লজ্জায় কাটা পড়ে অসহায় ছোট্ট ভাইটির মাথা!
চার দেয়ালের মাঝে হিংস্র ভোগ-লালসার যন্ত্র;
বাংলা মায়ের মাটি আঁকড়ে টিকে ছিলাম আমি...
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক এনেছিলো নতুন ভোর...
আমি মরতে চাই নি; স্বাধীনতা ছুঁতে চেয়েছি!
আমি আজ স্বাধীনতার নিভৃত নিশান...
স্বাধীনতা আমার বাবার রক্ত বীজ থেকে জন্ম নেয়া ভ্রুণ
স্বাধীনতা আমার মায়ের সম্ভ্রমহানির ফসল
স্বাধীনতা আমার ভাইটির অসহায় সহ্যশক্তি!
স্বাধীনতা সেই কালো রাতে আমার মনোবল!
তোমরা যারা স্বাধীনতার ডাক শোন নি
তোমরা যারা ইতিহাসের পাতা বদলাও
তোমরা জানবে না পতাকার স্বাদ
তোমরা খুঁজবে না মানচিত্রে রক্তের দাগ!
আজ স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক পর
আমি গর্বে বাঁচি আমাদের ত্যাগে;
সে রাত তবু অবচেতন মনে জাগে;
সময়ের ক্ষত শুকাবে না যুগ-যুগান্তর।


২৫/০৩/২০১৭