অতীব সুন্দর নাম আর তুমি কত সুমধুর;
তোমার লেখনি মাতে সারাক্ষণ কবিতা ও ছন্দে।
কল্পনার ডানা মেলে উড়ে উড়ে যাও কত দূর;
নিজের জগতে তুমি মেতে আছো সৃষ্টির আনন্দে।
তোমার হৃদয়ে আছে কত প্রেম কত ভালোবাসা;
শাহিন পাখির মতো চাও তুমি উড়তে গগনে।
কবিতার ডানা মেলে উড়ে চলো, মনে কত আশা;
অনুভূতি ভালোবাসা স্নেহ আছে হৃদয়ের কোণে।
তোমার ঐ কবিতার সুমধুর ছন্দের গতিতে
কল্পনার ডানা মেলে উড়ে যাবো দূরে একসাথে।
আকাশ বাতাস হবে মুখরিত কবিতা ও গীতে;
কখনো আমাকে তুমি পারবে না বিদায় জানাতে।
পৃথিবীর বুকে তুমি যেন এক অপরূপা পরী;
আমার হৃদয়ে তুমি চিরকাল আছো জাদুকরী।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ২রা মে, ২০২৪।
--------------------------------
আবার এসেছি আমি নদী কিনারায়
যেখানে দু'জনে সারা অপরাহ্ন ধরে
বলতাম কত কথা কত নিরালায়;
সুখের মুহূর্তগুলি ভুলব কি করে।
পঁচিশ বছর আগে আমরা দু'জনে
খোদাই করেছি গাছে দু'জনের নাম।
প্রেমের সে স্মৃতিগুলো ভেসে ওঠে মনে;
তুমি নেই, এ হৃদয় বিরহের ধাম।
আসবে না কোনোদিন ফিরে সেই দিন;
বৃথা চেষ্টা করে আমি খুঁজি সেই ক্ষণ।
আমার হৃদয় কাঁদে, আমি সঙ্গীহীন;
কিভাবে কাটবে এই নিঃসঙ্গ জীবন।
হৃদয়ে হৃদয় মিশে হতো একাকার;
এমন মুহূর্ত ফিরে আসবে না আর।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ৩রা মার্চ, ২০২৪।
-----------------------------------------
নামেই শিক্ষক
শিক্ষার অঙ্গনে কেন বুনে যাও বিভেদের জাল?
দাবী করে কেন বলো নিজেদের আদর্শ শিক্ষক?
দলবাজি হানাহানি কেন করো, কেন গোলমাল্?
তোমরা শিক্ষক নও, সমাজের কলঙ্ক-ভক্ষক।
সততার রাস্তা ছেড়ে কেন ধরো অসত্যের পথ?
শিক্ষণ শিখনে কোন মতি নেই, ফাঁকি দাও কাজে।
কি শিখছে শিক্ষার্থীরা? তোমরাই দাও অভিমত;
বিভেদের পথে চলা কখনো কি তোমাদের সাজে!
শিক্ষা দীক্ষা ধর্ম কর্ম সবকিছু কেন ভুলে গেলে?
সমাজের হাত থেকে কখনই পাবে না রেহাই।
শিক্ষার্থীদের ঠকিয়ে বল দেখি তোমরা কি পেলে?
নামেই শিক্ষক তাই শিক্ষার্থীরা অপশিক্ষা পায়।
বিভেদের রাস্তা করো পরিহার যদি চাও ভালো;
নতুবা পড়বে ফাঁদে দেখবে না জীবনের আলো।
-----------------------------------------
স্মৃতির কেবিনে
আকাশের বুকে মেঘ ঘনিয়েছে নিভে গেছে আলো;
রিমঝিম ঝিরিঝিরি নামবে যে শ্রাবণের ধারা।
চারিদিক অন্ধকার আকাশটা লাগে বড় কালো
এমন বাদল দিনে ঝড়ো বায়ু যেন দিশাহারা।
গাছপালা মাথা নাড়ে কত কিছু বলে ইশারায়;
মাঠ ঘাট জনশূন্য কৃষকেরা ঘরে ফিরে আসে।
বিহঙ্গেরা একে একে গাছে বসে গান গেয়ে যায়;
চাতক এমন দিনে ডানা মেলে সুদূর আকাশে।
জানালার পাশে বসে কত কিছু ভাবি বার বার;
এমন বাদল দিনে ফিরে পাই শৈশবের দিন।
মায়ের রেসিপি আহা কত ভালো লাগত আমার;
জানালায় ফিরে এসে দেখি আমি, আমি মাতৃহীন।
রিমঝিম ঝিরঝিরি বৃষ্টি পড়ে শ্রাবণের দিনে;
কত কিছু মনে পড়ে ফিরে যাই স্মৃতির কেবিনে।
---------------------------------------
শ্রাবণের সঙ্গীত
শ্রাবণের সন্ধ্যাবেলা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ঝরে পড়ে;
আকাশ ঢেকেছে মেঘে জোছনার আলো নেই রাতে।
শ্রাবণের সন্ধ্যাকালে চারিদিক অন্ধকারে ভরে;
জানালার পাশে আমি বসে আছি কেউ নেই সাথে।
শ্রাবণের জলাশয়ে ব্যাঙ ডাকে শুনে যাই একা;
রিমঝিম রিমঝিম ঝরে পড়ে বাদলের ধারা।
সন্ধ্যাবেলায় আকাশে নেই কোন নক্ষত্রের দেখা;
সাঁঝের আকাশ পানে খুঁজে যাই আমি সন্ধ্যাতারা।
শ্রাবণের অন্ধকারে বৃষ্টি ঝরে পড়ে অবিরত;
অদূরের ঝোপঝাড়ে ঝিঁঝিঁ পোকা ঝিঁঝিঁ স্বরে ডাকে।
শ্রাবণের সন্ধ্যাবেলা শ্রাবণের গান শুনি কত;
আমার প্রেমিক মন একা একা কত ছবি আঁকে।
শ্রাবণ সঙ্গীত হয়ে বেজে ওঠে শ্রাবণ সন্ধ্যায়;
জানালার ধারে বসে শ্রাবণের গান শুনে যাই।
--------------------------------------
জীবনের মাঝ রাস্তা পার হয়ে এসেছি এখন
দেখেছি চলার পথে মালভূমি পাহাড় পর্বত।
এসেছে চলতে গিয়ে উপত্যকা মরুভূমি বন;
দেখেছি আগ্নেয়গিরি নদীদের বাঁধ ভাঙা স্রোত।
দেখেছি পাহাড় থেকে অপরূপ ঝর্ণা ঝরে পড়ে;
নীলাভ পর্বত গুলি ঢাকা থাকে তুষার তুহিনে।
পাহাড়ের বুক চিড়ে নদী চলে উপত্যকা ধরে;
পাহাড়ি উপত্যকায় রকমারি ফুল ফোটে দিনে।
দেখেছি জঙ্গলে আমি কত শত জন্তু জানোয়ার:
শুনেছি সেখানে কত পশুদের ভয়ঙ্কর আওয়াজ।
মরুতে মরীচিকার পিছে ছুটে গেছি কত বার;
কখনো থামিনি আমি, পথ চলা একমাত্র কাজ।
একদিন জীবনের বৈতরণী পার হবো জীবন তরীতে;
বৈতরণী পার হলে মিশে যাবো আমি প্রকৃতিতে।
---------------------------------------
কত হৃদয় পুড়েছে তোমার ঐ জ্বালাময়ী রূপে;
মধুর কথার জালে কতজন হয়েছে নিঃশেষ।
ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছে কতজন অন্ধকার কূপে;
ছুটিনি তোমার পিছে দূরে এসে আমি আছি বেশ।
পৃথিবীতে কোন কিছু স্থায়ী নয় ক্রমে যায় ক্ষয়ে;
তোমার সৌন্দর্য রূপ ধীরে ধীরে হয়েছে মলিন।
সৌন্দর্য রূপের গর্ব জমেছিল তোমার হদয়ে
রূপ নয় গুণ হয় চিরস্থায়ী থাকে চিরদিন।
রূপের আগুনে তুমি পুড়ে গেছো করো হায় হায়;
হারিয়েছ ভালোবাসা সঙ্গী ছাড়া কাটে কি জীবন।
তোমার সময় কাটে নিরানন্দে দুঃখে হতাশায়;
চলে গেছে সবকিছু আছে শুধু প্রাণহীন মন।
তোমার জীবন থেকে সরে এসে আমি আছি ভালো;
অন্ধকারে পরিপূর্ণ অপরূপা হারিয়েছ আলো।
--------------------------------------
দূরে বহু দূরে যাবো চলে বহু দূরে;
অনেক আলোকবর্ষ দূরে যাবো চলে।
আনন্দের গান বাজে যেখানে অদূরে;
পাখীরা সুখের গান গায় কথা বলে।
হাসিরা সেখানে আসে থাকে সারাক্ষণ;
রোগ ব্যাধি জরা কেউ আসেনা যেখানে।
সেখানেই যাবো আমি খুশি হবে মন;
চুপিচুপি আমি যাবো থাকবো সেখানে।
পৃথিবীতে শুনি শুধু হতাশার গান;
চলে যাবো বহুদূর একা একা আমি।
হৃদয়খানি হবে না ভেঙে খান খান;
পৃথিবী ছাড়বো আমি, সূর্য অস্তগামী।
এই পৃথিবীতে আর থাকবো না ভীড়ে;
নিরালায় যাবো চলে আসবো না ফিরে।
------------------------------------
হাসপাতালে ধর্ষণ বড়ই লজ্জার;
পাশবিক হত্যালীলা কিভাবে সম্ভব?
ধর্ষণ-খুনে ধিক্কার করি বার বার;
পুলিশ থেকে অধ্যক্ষ যুক্ত আছে সব।
এ সমাজে নারীদের নিরাপত্তা নেই;
রাতে দিনে সর্ব স্থলে অপকর্ম ঘটে।
কর্মী থেকে অফিসার দায়ী সকলেই;
জনতার আন্দোলনে মন্ত্রী পিছু হটে।
প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রশাসন দিয়ে
প্রমাণ লোপাট করে যাচ্ছে বারে বারে।
রাঘব বোয়াল মন্ত্রী সবাই জড়িয়ে;
দুর্নীতিতে যুক্ত যারা যাবে কারাগারে।
নারীদের নিরাপত্তা চায় তিলোত্তমা;
অভয়ার খুনিদের করবে না ক্ষমা।
------------------------------------
সবুজ গাছের ডালে বসন্ত প্রহরে
কোকিলেরা গান গায় সুমধুর সুরে।
কোকিলের কুহু ডাকে যায় মন ভরে;
হৃদয়ের ক্লান্তি সব সরে যায় দূরে।
গাছের আড়ালে পাখি ডাকে ক্ষণে ক্ষণে;
জাদুকরী কণ্ঠ ভরা আনন্দের গীতে।
সেই গীত শুনে যায় আমি একমনে;
বসন্ত প্রহর কাটে খুশির সঙ্গীতে।
কোকিলের গান শুনে মহানন্দে থাকি;
কত ছবি এঁকে যাই মনের খাতায়।
বসন্ত বিদায় নিলে উড়ে যায় পাখি;
তবুও মনের ডালে পাখি গান গায়।
কোকিলের কুহু ডাক অমৃত সমান;
বিষাদের মাঝে শুনি সুমধুর গান।
----------------------------------
চাঁদ তুমি সারারাত জেগে আছো কেন?
তবে কি কাউকে খুব ভালোবাসো তুমি,
তুমি এক রাজ্য হারা রাজকন্যা যেন;
রাজত্ব করবে জয় মুক্তি হবে ভূমি।
মাঝে মাঝে মনে হয় তোমাকে ফ্যাকাশে;
প্রেমিকের প্রতীক্ষায় জেগে আছো তবে?
সারারাত এইভাবে চলবে আকাশে;
মনের মানুষ খোঁজো একলা নীরবে।
রাতের আকাশ থাকে তোমার দখলে:
সকলেই মুগ্ধ হয় তোমার আলোতে।
কত লোক চাঁদ দেখে কত কিছু বলে;
সত্যি রোমান্টিক তুমি সকলের মতে।
তোমার আলোতে তুমি অতীব সুন্দর;
সকলেই ভালোবাসে তুমি নও পর।
---------------------------------
চোখ বন্ধ করে দেখি কত কিছু ঘটে পৃথিবীতে;
হানাহানি, মারপিট, দাঙ্গাবাজি মানুষকে মারে।
অভিজাত সম্প্রদায় বসে আছে অর্থের গদিতে;
অর্থ কড়ি জমিয়েছে ইচ্ছামতো ক্লান্ত তার ভারে।
ছলে বলে কৌশলে হাতিয়েছে অন্যের প্রশান্তি;
আরো চাই আরো চাই বলে তারা, নেই দেশ ভক্তি।
শরীরে বেঁধেছে বাসা রোগ ব্যাধি, মনে নেই শান্তি;
অর্থের পিছনে ছুটে সারাক্ষণ হারিয়েছে শক্তি।
মাটির পৃথিবী পানে চেয়ে দেখি কত লোকজন;
কাজ করে দিনরাত নিয়ে চলে দেশকে এগিয়ে।
সারাক্ষণ কাজ করে প্রশান্তিতে ভরে থাকে মন;
সভ্যতাকে রক্ষা করে নিজেদের তাজা রক্ত দিয়ে।
সকলের পাশে ওরা আছে যুগ যুগান্তর ধরে।
দেশের হিতার্থে ওরা দিনরাত ধরে কাজ করে।
-----------------------------------------