আবার এসেছি আমি নদী কিনারায়
যেখানে দু'জনে সারা অপরাহ্ন ধরে
বলতাম কত কথা কত নিরালায়;
সুখের মুহূর্তগুলি ভুলব কি করে।
পঁচিশ বছর আগে আমরা দু'জনে
খোদাই করেছি গাছে দু'জনের নাম।
প্রেমের সে স্মৃতিগুলো ভেসে ওঠে মনে;
তুমি নেই, এ হৃদয় বিরহের ধাম।
আসবে না কোনোদিন ফিরে সেই দিন;
বৃথা চেষ্টা করে আমি খুঁজি সেই ক্ষণ।
আমার হৃদয় কাঁদে, আমি সঙ্গীহীন;
কিভাবে কাটবে এই নিঃসঙ্গ জীবন।
হৃদয়ে হৃদয় মিশে হতো একাকার;
এমন মুহূর্ত ফিরে আসবে না আর।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ৩রা মার্চ, ২০২৪।
-----------------------------------------
কেন তুমি হাতছানি দাও বারে বারে;
বারে বারে যাই আমি তোমার নিকটে।
আমাকে ঠকিয়ে চলে যাও চুপিসারে;
তুমি এক জাদুকর প্রতারক বটে।
তুমি এক মায়াজাল নও ভালোবাসা;
মোহিত হয়েছি আমি তোমার জাদুতে।
বারে বারে কেন তুমি দাও বৃথা আশা;
পারিনি তোমাকে আমি কখনই ছুঁতে।
তুমি এক কালো জাদু নিছকই মায়া;
তোমার পিছনে ছুটে আমি আশাহত;
সত্য প্রেম নও তুমি, তুমি তার ছায়া;
তোমাকে ধরতে গিয়ে হয়েছি আহত।
প্রেম তুমি প্রেম নও, তুমি কুহকিনী;
তবুও তোমার কাছে আমি বড় ঋণী।
------------------------------------
মনের ভিতরে জ্বলে আগুনের লেলিহান শিখা;
জ্বলে পুড়ে ভস্ম হবে একদিন অর্থের পাহাড়।
তার সাথে পুড়ে যাবে ঈর্ষা দ্বেষ গর্ব অহমিকা;
জ্বলে যাবে সৌন্দর্যও থাকবে না রূপের বাহার।
পরচর্চা ভালো নয়,পরনিন্দা করা বড় পাপ;
বিলাসিতা অর্থ ব্যয় দিনশেষে সব মূল্যহীন।
শিক্ষা দীক্ষা না থাকলে অজ্ঞতা যে বড় অভিশাপ;
প্রকৃত শিক্ষা না পেলে সবকিছু হয়ে যাবে লীন।
ছল বল ও কৌশল কোন কিছু লাগবে না কাজে;
সহ চিন্তা, সৎ সঙ্গ, সৎ বাক্য - জীবনের মন্ত্র ।
যাত্রাপথে কতকিছু দেখা যায় অপরাহ্ন সাঁঝে;
জীবনে চলার পথে লাগবে না কোন কাজে যন্ত্র।
রূপ নয় চিরন্তন, গুণ থাকে চিরকাল টিকে;
জীবনের যাত্রাপথে সৎ গুণ হবে না তো ফিকে।
-----------------------------------
মানুষের মন
মানুষের মন বোঝা বড়ই কঠিন;
কখন কি সব চায় জানেনা তো কেউ।
চাওয়া-পাওয়া দ্বন্দ্ব চলে রাত দিন:
হৃদয় সমুদ্রে ওঠে বেদনার ঢেউ।
স্বপন দেখতে চায় প্রতিটি নয়ন;
স্বপ্ন পূর্ণ হয় তবু হয় না সে সুখী।
চাই চাই বলে চলে মানুষের মন;
চাহিদা অপূর্ণ হলে হয় সে অসুখী।
সম্পদ ও অর্থ-কড়ি মূল্যহীন হয়
জীবনে চলার পথে না লাগলে কাজে।
মানুষের থাকে যদি প্রকৃত হৃদয়,
সে হৃদয়ে জীবনের জয় গান বাজে।
মানুষের মন বোঝা নয় বড়ই দুরূহ;
কত কিছু ঘটে যায় মনে অহঃরহঃ।
---------------------------------------
এ আমায় ভালোবাসা, নয় অভিনয়;
পারোনি চিনতে তুমি কখনো আমাকে।
এ পৃথিবীতে বাঁচতে বড় ইচ্ছা হয়;
ছেড়েছি সে জন্মভূমি ভালোবাসি যাকে।
মাঝে মাঝে মনে হয় যাই বহুদূরে;
যেখানে বেদনা নেই আছে শুধু শান্তি;
সুখ পাখি গায় গান সুমধুর সুরে;
বিরহ যন্ত্রণা নেই আসবে না ক্লান্তি।
তবুও থাকবো আমি এই পৃথিবীতে;
ভালোবাসি পৃথিবীকে, এই পৃথিবীকে।
পৃথিবীতে এই আমি আছি গ্রীষ্ম,শীতে;
দেখে যাবো কত কিছু ঘটে চারিদিকে।
আমার আমাকে শুধু চিনলে না তুমি;
রক্তের গভীর টানে ছাড়বো না ভূমি।
---------------------------------------
শ্রাবণের সঙ্গীত
--------------------------------------
রাজপথে জনতার প্রতিবাদ সভা ও মিছিল;
জনগণ কখনই মানবে না অত্যাচার আর।
জনতার আন্দোলনে কম্পমান শাসকের খিল;
অপরাধ যাচ্ছে বেড়ে প্রশাসক তবু নির্বিকার।
মেরুদণ্ড বেঁকে গেছে, সমাজের কেমন রক্ষক!
দিনে রাতে নগরীতে মানুষের নিরাপত্তা নেই।
দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ রক্ষকই হয়েছে ভক্ষক;
প্রকৃত অপরাধীরা পড়ছে না ধরা কিছুতেই।
পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটে চলে মহানগরীতে;
সর্বক্ষেত্রে রাজনীতি দুর্বৃত্তের মনে নেই ভয়।
প্রশাসক করছে না কোন কাজ মানুষের হিতে;
নারীরা নেমেছে পথে দানবের হবে পরাজয়।
জনতার আন্দোলনে কেঁপে ওঠে শাসকের দ্বার;
রাজপথে জনগণ, অন্যায়ের হোক সুবিচার।
---------------------------------------
----------------------------------
জীবনের পথ চলি মাথা উঁচু করে
অন্যায়ের সাথে আমি করিনা আপোষ
কত বাধা আসে পথে করি অতিক্রম
মনে কোন ভয় নেই চলি পথে একা
কর্তব্যে কখনো আমি হই না পিছুপা
বিপদের মোকাবিলা করি শক্ত মনে
দায়িত্ব পালনে আমি খুব নিষ্ঠাবান
দুর্নীতির সাথে যুক্ত হব না কখনো
বড়দের শ্রদ্ধা করি সম্মান জানাই;
ছোটদের স্নেহ করি যাই ভালোবেসে।
সৎ চিন্তা কর্ম করে দিন কেটে যায়;
অসৎ লোকের সঙ্গ ত্যাগ করি শেষে।
ভালো মানুষ হওয়া জীবনের লক্ষ্য
যাত্রাপথে চলি এই প্রত্যয়ের সাথে
বিদায় নিয়েছে বর্ষা চারিদিক করে ঝলমল
শিমূল তুলোর মতো সাদা সাদা মেঘ যায় ভেসে
নীলিমার নীল ছুঁয়ে উড়ে যায় বিহঙ্গের দল
-----------------------------------
এখন শীতার্ত দিন কুয়াশা ও তুষারের মেলা;
উত্তরের কনকনে হিম ঠাণ্ডা বায়ু বয়ে চলে।
সকালে শিশিরকণা দুর্বাঘাসে করে যায় খেলা;
কুয়াশা কাটার পর চারিদিক লাগে ঝলমলে।
পর্ণমোচী বৃক্ষ থেকে জরা জীর্ণ পাতা ঝরে পড়ে;
গোলাপ ডালিয়া গাঁদা ফুল ফোটে ফুলের বাগানে;
রঙিন বাহারী ফুল প্রকৃতির শোভা বৃদ্ধি করে;
ফুলের সৌন্দর্য মনে উচ্ছ্বাসের বান ডেকে আনে;
মাঠে মাঠে দেখা যায় শাক সব্জি সবুজের আলো;
রকমারি ফল ফলে গাছে গাছে হিম মাখা কালে।
শীতের আমেজে লাগে খেজুরের রস বড় ভালো;
ভ্রমণ বিলাসে মন মাতোয়ারা হয় শীতকালে।
এমন শীতের দিন বার মাসে থাকে দুই মাস;
শীতের সোনালি রোদে করে যাই কবিতার চাষ।
বন্ধুত্বের সম্পর্ক
প্রেম ভালোবাসা নয় বন্ধুত্বের সুগভীর টানে
গেলাম দু'জনে মিলে একসাথে তোমার বাড়িতে।
শহুরে হুল্লোড় নেই আছে শুধু প্রশান্তি সেখানে;
কাটালাম কিছুক্ষণ প্রকৃতির মাঝখানে মিতে।
শান্তির ছায়ায় 'পরে অবস্থিত তোমাদের ঘর;
পরিবারের লোকেরা অমায়িক বড়ই সজ্জন।
খানাপিনা হাসি মজা খাস গল্পে কাটল প্রহর;
পরম আদর যত্নে বিমোহিত আমার এ মন।
প্রকৃতির মাঝে সেই গ্রামটিতে শান্তি পাই খুঁজে;
আজো দেখি তার পাশে সুশোভিত বহমান খাল।
পথের দুধারে মাঠ সুসজ্জিত সবুজে সবুজে;
শুভেচ্ছার ডালি নিয়ে আসে সেই শরৎ সকাল।
সুখের মুহূর্তগুলি লেখা আছে মনের গভীরে ;
অলস সময় মাঝে স্মৃতিগুলি আসে ফিরে ফিরে।
---------------------------------------
মনের অসুখ
বিদায় নিয়েছে গ্রীষ্ম বহু দিন আগে;
মেঘ মুক্ত নীলাকাশ,বর্ষা গেছে চলে।
শরতের দিনগুলি ঝলমলে লাগে;
তবুও মনের মাঝে বহ্নিশিখা জ্বলে!
পূর্ণিমার চাঁদ খানি রাতের আকাশে
ঘুরে ঘুরে আলো দেয় কাটে অন্ধকার।
বাতাস ফুলের গন্ধ বয়ে নিয়ে আসে;
তবুও মনের মাঝে গভীর আঁধার!
কুয়াশার দিনগুলো আসেনি এখানে;
কনকনে শীতকাল আছে বহু দূর।
শরতে বাঙালি মেতে উৎসব গানে;
তবুও মনের মাঝে হতাশার সুর!
জীবনের পথে চলি মহানন্দে সুখে;
তোমরা ভুগছো কেন মনের অসুখে?
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪।
----------------------------------------
লোকে বলবেই
গাধা হাঁটে আগে আগে দম্পতি পিছনে;
লোকে বলে দু'জনকে, তারা বড় বোকা।
কথাগুলি শুনে তারা ভাবে মনে মনে,
লোকরা বলছে ঠিক, দেবে কেন ধোঁকা।
তখন লোকটি বসে গাধার উপর
কিন্তু তার পত্নী হাঁটে পিছনে গাধার।
লোকে বলে স্বামী তার বড় স্বার্থপর;
তৎক্ষণাৎ স্ত্রীকে সে নেয় পাশে তার।
এটা দেখে লোকে বলে তারা দয়াহীন;
গর্দভের পিঠ থেকে স্বামী যায় নেমে।
লোকে বলে বৌ পাগলা, বড় বুদ্ধিহীন;
কথাটি শোনার পর স্বামী যায় থেমে।
যে সমস্ত লোকেদের কোন কাজ নেই
যাই ঘটুক না কেন তারা বলবেই।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪।
--------------------------------------
বিরহ
শরতে পাখিরা সুখে করে কলতান;
তাদের হৃদয়ে নেই দহনের জ্বালা।
কেন তুমি শোনো তবে বেদনার গান?
তবে কি পড়েছো তুমি বিরহের মালা?
শিশিরের বিন্দু গুলি পড়ে দুর্বা ঘাসে;
সূর্যের কিরণে তারা মুক্তো হয়ে জ্বলে।
কত ফুল ফুটে আছে সুগন্ধ বাতাসে;
শরতের দিন গুলি বড় ঝলমলে।
পূর্ণিমার চাঁদ খানি রাতে দেয় আলো;
রাতের আঁধার তাই দূরীভূত হয়।
জোছনায় রাত খানি লাগে বড় ভালো;
আনন্দ সঙ্গীতে মাতে সকল হৃদয়।
কেন তুমি শুনে যাও বিরহের গীত?
তবে কি তোমার প্রেম হয়েছে অতীত।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪।
-----------------------------------
আয়েশা
নিয়ত খুশিতে থাকো গৃহ করো আলো;
মায়া ভরা মুখ খানি স্নিগ্ধ দুটি আঁখি।
দিন রাত খেলা করো লাগে বড় ভালো;
হৃদয় আকাশে ওড়ে আনন্দের পাখি।
তোমার জননী উম্মে সালমা খাতুন,
শিক্ষিত ধার্মিক এক স্নেহময়ী নারী।
সারাক্ষণ গান গাও করো গুন গুন;
নিষ্পাপ হাসিতে হয় মনোরম বাড়ি।
চোখে মুখে প্রতিক্ষিপ্ত চন্দ্রিমার প্রভা;
আনন্দের সাথে কাটে প্রতিটি প্রহর।
তোমার সৌন্দর্য যেন জননীর শোভা;
তুমি ছাড়া মূল্যহীন আমাদের ঘর।
আদরের কন্যা তুমি, নাম তো আয়েশা;
তুমিতো কন্যাশ্রী আহা, সকলের আশা।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৭ই অক্টোবর, ২০২৪।
_____________________
জেগে ওঠো নারী
পৈশাচিক নৃত্য করে রাক্ষসের দল;
অন্ধকার কালো রাত আর কত বাকি?
ভয়ে থরথর করে কাঁপে সর্বস্থল;
এমন সময়ে নারী, ঘুমে মগ্ন না কি?
রাতের আঁধারে কত জন্তু জানোয়ার
একসাথে দল বেঁধে ঘোরাঘুরি করে।
রক্ত খাবার নেশায় এসেছে আবার;
কেউ নেই লড়ে যাবে সম্মুখ সমরে।
বাজ পাখি শকুনেরা অপার্থিব সাজে
উড়ে আসে মানুষের রক্তের নেশায়।
ছিঁড়ে খাবে একে একে আঁধারের মাঝে;
ঘুমিও না জেগে ওঠো ভোর এসে যায়।
ঘুম থেকে জেগে ওঠো আর রাত নেই;
মারণাস্ত্র হানো নারী, তুমি জিতবেই।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ১লা কার্ত্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪।
__________________________
প্রকৃত প্রেমের মাঝে
প্রেম ভালোবাসা হলে মিশে যায় হৃদয়ে হৃদয়;
কত কাছাকাছি থাকে দু'টি মন কত কথা বলে।
চোখের ভাষায় শুধু ইশারায় কত কথা হয়;
চুপিসারে দু'টি মন জীবনের কত পথ চলে।
ভালোবাসা হলে রাগ অনুরাগ তার মাঝে আসে;
হৃদয় দু'খানি থাকে চেয়ে একে অপরের দিকে।
প্রেমের জোয়ারে ভাসে দু'টি মন আনন্দ উচ্ছ্বাসে;
ভালোবাসা হলে বড় ভালো লাগে এই পৃথিবীকে।
ভালোবাসা হলে তার মাঝে আসে কত অভিমান;
একাকী নিভৃতে চেয়ে থাকে একে অপরের পানে।
ভালোবাসা হলে হৃদ মাঝে বাজে কত মিষ্টি গান;
দু'জনেই থাকে মেতে সোহাগের সুমধুর গানে।
প্রকৃত প্রেমের মাঝে গড়ে ওঠে এক সুখী ঘর;
যেখানে শান্তিতে কাটে দু'জনের প্রতিটি প্রহর।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ২রা কার্ত্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৯শে অক্টোবর, ২০২৪।
--------------------------------
আমার জন্মভূমি
আমার হৃদয় মাঝে পদ্ম উপবনে;
তোমার রাগিনী সুর বেজে ওঠে আজ।
সেই সুর শুনে যায় আমি সঙ্গোপনে;
মরমিয়া গান শুনে ভুলি সব কাজ।
অচিন পাখির মতো সারাক্ষণ তুমি
আমার প্রাণের কথা গাও সুর করে;
রেখেছি হৃদয়ে আমি, পুণ্য জন্মভূমি;
নিরন্তর দোল খাও আমার অন্তরে।
ঢেউ ওঠে সরোবরে আনন্দ উচ্ছ্বাসে;
হেসে ওঠে চাঁদ খানি আকাশের গায়।
শিশিরের কণাগুলি ঝরে দুর্বা ঘাসে;
স্নিগ্ধ প্রশান্তির বায়ু যায় বয়ে যায়।
তোমাকে রেখেছি আমি হৃদয়ের মাঝে;
নিরালায় কথা বলি অপরাহ্ন সাঁঝে।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ২রা কার্ত্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ১৯শে অক্টোবর, ২০২৪।
দুর্যোগের দিন
আকাশ ঢেকেছে মুখ মেঘের চাদরে
হেমন্তের সূর্য খানি ওঠেনি আকাশে।
আষাঢ়ে বৃষ্টির মতো বারিধারা পড়ে;
ভয়াবহ নিম্মচাপে ঝঞ্ঝা ধেয়ে আসে।
অবিরত বৃষ্টি আর ঝড়ের দাপটে
গাছ পড়ে ঘর ওড়ে লোকে গৃহহারা।
পশু পাখি আতঙ্কিত অসহায় বটে;
জলোচ্ছ্বাসে প্রাণিকুল বড় ছন্নছাড়া।
বাঁধ ভাঙা নোনাজল চাষের জমিতে;
সমস্ত ফসল নষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত চাষী।
অলস সময় কাটে বিষাদের গীতে;
এমন দুর্যোগ দিনে আমি পরবাসী।
জানালার পাশে বসে কত ছবি আঁকি:
ঝকঝকে প্রভাতের প্রতীক্ষায় থাকি।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ৮ই কার্ত্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ২৫শে অক্টোবর, ২০২৪।
নতুন প্রভাত
দুর্যোগের কালো রাত কেটে যেতে বাকি নেই আর;
আকাশের মুখ থেকে সরে যাবে মেঘের চাদর ।
নতুন প্রভাত হলে কেটে যাবে সকল আঁধার;
ঝলমলে দিন হবে সূর্যোদয় হবে মুগ্ধকর।
গৃহহারা লোকজন কালক্রমে বানাবে কুটীর;
স্বজন হারানো শোক ভুলে যাবে লোকে একদিন।
সুসজ্জিত হয়ে যাবে প্রকৃতির মধ্যস্থিত নীড়;
প্রকৃতির মাঝ থেকে শোনা যাবে আনন্দের বীণ।
লতাগুল্ম বৃক্ষে ক্রমে ভরে যাবে পৃথিবীর বুক;
মাঠে মাঠে রকমারি ফসলের হবে সমারোহ।
হাসিতে খুশিতে হবে পরিপূর্ণ কৃষকের মুখ;
বনানীতে পাখিদের আনাগোনা হবে অহরহ।
প্রকৃতির সৌন্দর্য রূপ কোনোদিন হবে না মলিন;
শীঘ্রই প্রকৃত হবে সুসজ্জিত নেই বেশি দিন।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ৯ই কার্ত্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ২৬শে অক্টোবর, ২০২৪।
বিদায় নিয়েছে ঝঞ্ঝা
প্রভাতের নবারুণে চারিদিক লাগে ঝলমলে;
প্রাকৃতিক বিপর্যয় কেটে গেছে ভয় নেই আর।
আকাশে নীলিমা ছুঁতে ওড়ে কত পাখি দলে দলে;
বিদায় নিয়েছে ঝঞ্ঝা শুভদিন ফিরেছে আবার।
সবকিছু স্বাভাবিক বেজে যায় জীবনের গান;
স্নিগ্ধ বায়ু বয়ে যায় সকলেই কত খুশি আজ।
গাছে গাছে ডালে ডালে বিহঙ্গেরা করে কলতান;
মাঠে মাঠে কৃষকেরা খুশি মনে করে যায় কাজ।
আকাশের বুক থেকে সরে গেছে কালো মেঘরাশি;
আনন্দ সঙ্গীতে আজ মুখরিত আকাশ বাতাস।
এমন খুশির দিনে বেজে যায় রাখালের বাঁশি;
মৃদু মন্দ বায়ু বয় দোল খায় লতা-গুল্ম-ঘাস।
হেমন্তে প্রকৃতি আজ সুসজ্জিত অপরূপ সাজে;
প্রশান্তিকে খুঁজে পাই আমি এই প্রকৃতির মাঝে।
© দীপঙ্কর সাধুখাঁ
রচনাকাল: ৯ই কার্ত্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ইংরেজি: ২৬শে অক্টোবর, ২০২৪।
রায়হান
আমাদের রায়হান ঘরে জ্বালে আলো;
একা একা খেলা করে কত ক্ষণ ধরে।
গুটি গুটি পায়ে হাঁটে লাগে বড় ভালো;
আধো আধো কথা বলে মন যায় ভরে।
সারাদিন পর যদি বাড়ি ফিরে আসি;
ছুটে আসে বাবুসোনা ডাকে বাবা বলে।
কত কথা বলে যায় মুখে আনে হাসি;
সময় কাটাই আমি বড় কোলাহলে।
কথা বলে তার সাথে ক্লান্তি ভুলে যায়;
খুশিতে ভরিয়ে দেয় আমাদের ঘর।
মননে মেধাবি সে যে কত কিছু চায়;
নিষ্পাপ হাসিটা লাগে বড় মনোহর।
আমাকে দিয়েছো কত বড় উপহার;
ছোট্ট সোনা রায়হান কত বুদ্ধি তার।