(জীবনানন্দের প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি)

🍂
আমাদের দায়িত্ব ছিল অনেক—
সারি সারি হিজল, বট, অশ্বত্থ গাছের উঁচু থেকে
কুড়িয়ে আনতে হতো বিকেলের নরম রোদ
কাঁঠালের ছায়া, আর কলমীর গন্ধভরা জল
কুলকুচির মতো ছড়িয়ে দিতে হতো বেলাময়
'রূপসী বাংলা'র অপরূপ সৃষ্টির আনাচে-কানাচে
তারপর কত নড়বড়ে সাঁকো পেরিয়ে এসে
জীবনের প্রতিপল বৃত হয় নতুন উপনিবেশে
অন্তহীন যাত্রায় ক্রমশ একা হতে হতে, যখন
প্রেমহীন বিলুপ্ত হৃদয়ে বিলীন স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা
জীবনের সব স্বাদ নিয়ে, সব সাধ চলে গেছে
তখন কেউ হয়তো ডেকে উঠবেন অভ্যেসবশত—
"আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি!"
আমাদের এই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিতেই...

বিষণ্ণ কার্তিক গুটিয়ে নিয়েছে তার ত্রস্ত বনতল
পরাভূত ছায়া, হেমন্তের নেমে আসা বিকেলের
হলুদ রোদের কোলে ঘুমিয়ে আছে 'ধূসর পাণ্ডুলিপি'
পংক্তিমালায় অভিমানী বনলতা'র নিষ্প্রাণ দেহ
জলের কোনো ব্যথা নেই, চেতনাপ্রবাহ নেই
জীবন-আনন্দ নেই জেনেও, বসে থাকি সেই
জলে ও ঈশ্বরে, অনুভবে এক মহাজীবনকে ছুঁয়ে
এই গান্ধর্ব-জীবন নিয়ে বয়ে গেছে সময়ের চিহ্ন
দৃশ্যপট থেকে সরে যাচ্ছে নিষ্ক্রান্ত জীবনের পথরেখা...
কালের পতনোন্মুখ চেহারা মুছে নেয় সন্ধ্যানদীর জল!

🍂
টালিগঞ্জ, কোলকাতা।
রচনাকাল > ২২ অক্টোবর ২০২৪
*সংরক্ষিত : @dipak_bera