সুইসাইড নোটের মত কিছু লেখা-
ডাইরির ছেঁড়া পাতায় –সাদা খামে,
যত্নে হাতের মুঠোয়,
কান্নায় ভেজা- তেলোর ঘামে !
ছ-তলার ছাদের এক কোণায় ,
আমি ,কার্নিসয়ে ওপরে ঝুঁকে ,
মরণ ঝাঁপের আগে- পশ্চিমের দিকে !
বিদ্ধস্ত- পরাজিত আমি-
বিদায় চাইছিলাম-আমারই কাছে,
একটু আরও ঝুকে ,
জীবনের শেষ সূর্যাস্তের বাতাস শুষেনিয়ে বুকে !
ঠিক সেই সময় ,
দিয়ে গেল হোলদে খামটা –
দারোয়ানের ছোট ছেলেটা !
অবচেতন শূন্যতা থেকে-
চেতনার বাস্তবে ফিরে আসা ,
প্রেমিকার বিয়ের নিমন্ত্রণে
লেখা ছিল , আমার মুক্তির দিশা !
ছিল , তার ক্ষমার নিশ্চিত আশ্বাসে –
বেঁচে গেলে তুমি ,
বেঁচে থাক আমি , তোমার অবিশ্বাসে !
আমার অক্ষমতার অভিশাপ
বিষাক্ত কোরেছিলো তোমার বাসনারে ,
একটু ঠাই চেয়েছিলে আমার ছায়ায়-
বারেবারে হাত বাড়িয়েছিলে সাথী হোতে মোর , চিরতরে !
দীনতা আমার, প্রত্যাখ্যান কোরেছিলাম যেদিন
তোমারে , এসেছি পালিয়ে সেদিন ই !
আজও কিছু পারিনি জানাতে,
বেকার-কর্মহীনতা এখন নিশি জাগরণে,
কাটে হতাসায় প্রতিদিন ঘোড় অপমানে !
চিলেকোঠার পাশেই মাথা গোঁজার এ ঠাই ,
পোড়া মেঘের গুড়ো গুড়ো ছাই
সারা মেঝেতে যেন ছড়ানো ,
ঘড়টার আনাচে কানাচে-লেগে থাকে
মলিনতার আষ্ঠে গন্ধ ছিটানো ;
মালিকের দয়ায় এই প্রাপ্তি,
একতালার ওদেরই রেশন দোকানে আমি ,
কর্মচারী ও ম্যানেজার-
খাওয়া-থাকা সমেত বেতন দের-হাজার ;
ভীষণ লজ্জায় , তাই চাইনি পাততে এখানে -
তোমার স্বপ্নের সংসার !
আজ সন্ধ্যায় - নিলাম বিদায় ,
তোমার মুক্তিতে
আমার আত্মহননের নেই কোন দায় !
এরপরে-
হোলদে খামটা দিলাম খুলে ,
প্রজাপতি আঁকা সোনালি রঙ এ,
লাল কার্ডের এক কোনে গোল টিপ ,
কাচা হলদী দিয়ে !
ঝপ কোরে অন্ধকার ঝাপ দিল নীচের রাস্তাতে -
চারিদিক ভোড়ে গেল আলোতে-আলোতে ;
নীল আকাশটা আজ যেন একটু বেশীই সেজেছে-
পূর্ণিমার চাঁদ ও তারাতে ,
হয়তো বা আমার শেষ বিদায়ের সাক্ষী হোতে !
হোলদে খামটা ভাসালাম বাতসে-
প্রজাপতিরা উড়ে গেল দূর আকাশে !
নাহ , পাড়লাম না , আবারো হেরে গেলাম-
সুইসাইড নোট, না স্বীকারোক্তি পাতাগুলো-
বাতাসে উড়িয়ে দিলাম ;
পূর্ণিমার চাঁদকে বোললাম- ' ম্যাই লর্ড ' -
" আমার নব-জন্মের জন্য দায়ী একমাত্র তুমি ! "