উদাসী ফিকে চাঁদ একপেশে আকাশে,
সোহাগের ফুলঝুরি ঝরে গেছে তারাবাতির মতো,
সারা রাত বিবাহ-বাসর কেটেছে এই আকাশকে নিয়ে,
রক্ত ও ঘাম রাতের অন্ধকারে চোখ মেলে ঘুমোতে চেয়েছে বারবার এই সুন্দর পৃথিবীর নিয়নবাতির নিচে,
দু'চোখ ঘুমের আদ্রতায় নিবু নিবু,
তবুও বাস থেকে নেমে হাঁটছি জাতীয় সড়কের গার্ডওয়াল বরাবর;
শীতার্ত সকালে কুয়াশার শীতল বাতাসের আর্দ্র আমেজ,
গার্ড ওয়ালের বিপরীতে মাথা রেখে সারিবদ্ধ চিৎ হয়ে চাদরে ঢাকা শতশত শ্রমিক,
রাতভর জাতীয় সড়কে দানবী গাড়ীর লোডিং আনলোডিং সেরে ক্লান্ত তারা,
বেলচার বালিশে তাদের মস্তকের ভার,
আজকের এই সকালের নিকট তাই ঋনী আমি,
তাদের এই সৃজনশীলতা দেখে গর্ব্বে ও শ্রদ্ধায় আমার হৃদয় প্লাবিত অশ্রুজলে;
খাবার টেবিলে চামচ দেখলেই চোখে ভেসে ওঠে বেলচার ছবি,
নরম বিছানায় শুলেই ভেসে ওঠে জাতীয় সড়ক,
গাড়ীর হর্ণের জোড়ালো শব্দ,
বালিশে মাথা রাখতেই যেন টের পাই স্টীলের ঝকঝকে কাঠিন্যতা,
আমাদের জাতীয়সম্পদ নয় কি এই প্রিয় শ্রমিকবন্ধুভায়েরা?
হে আমার বন্ধু, ওদেরকে তোমরা বাঁচিয়ে রেখো - আমাদের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, রাষ্ট্রের মর্যাদা রক্ষায়;
আমাদের রাষ্ট্রীয়সম্পদ ওরা,
স্যালুট ও শ্রদ্ধা জানাই নতজানু মস্তকে,
পৃথিবীর এই মহান উপহার আমদের জন্য।