তোমাকে খুঁজেছি প্রাণপণ
সভ্যতার সেই আদি থেকে অনন্তকাল আজ অবধি।
কেউ কী দেখেছে তোমাকে কোথাও কখনো,
মানব সভ্যতার উপাদান যে তোমারই দান,
তুমি তাই যে সর্বশক্তিমান মহান।
তোমার প্রতি তাইতো সকলের সম্মান।
মানব এতই মহান ধংসের কোন চায়নাকো খতিয়ান।
আজও মানুষ তোমার সম্মানে পাতাল ফোঁড়ে শিরোপা দিয়েছে
সবার উপরে।
কিন্তু দ্যাখো হাজার হাজার বছর ধরে
তোমাকে বেঁধে রেখেছে যে মানবেরই রূপে
নিরাকার তুমি যে একথা তাঁরা জানে।
তবুও দূর্গা, কালী, শিব, ব্রম্মা, বিষ্ণু, গণেশ, কার্তিক কেন ঘরে ঘরে?
তুমি নিরাকার তবুও নামকরণ হলতো তোমার!
এ কোন ন্যায় বিচার, এ কোন প্রতিদান?
তাতেও কী হয়নি কোন তোমার অহংকার?
কোটি কোটি হাতে প্রাণভরে দেয় যে তোমায় তারও বেশি নমস্কার।
তবু কেন যে পার্থক্য এ সভ্যতায়
কোথাও পুরস্কার, কোথাও তিরস্কার!
এ-কী তবে বিচার বিন-অবতার?
মানা কী তবে মনপ্রাণ এ মানব-সভ্যতার?
না কী মন্ডপে এতো ভিড় এ এক ভন্ডামি তার?
না কী মনেপ্রাণে নেই কোন ধিক্কার ভীত-সন্ত্রস্ত মানব-সভ্যতার?
তোমার যে স্থান চিরকাল সভ্যতার চূড়ায়,
তোমার যে ত্রাণের সিদ্ধহস্ত কোথায় কোন কায়ায়
হিসাব যে নেই তার,
তাই ভাবি বারবার কে হবে দায়ভার কেন যে এত হাহাকার?
কখনও তুমি জঙ্গলে, কখনও তুমি মাথার উপরে,
কখনও তুমি বণিকের দোকানে, কখনও তুমি ঘরের কোণে নির্জনে,
কখনও তুমি জনতার ভিড়ে, কখনও তুমি ডাক্তারের টেবিলে,
কখনও তুমি পরীক্ষার হলে,কখনও তুমি মাঠে-ময়দানে,
কখনও তুমি গঙ্গার ভিতরে যমুনার মধ্যে,
কখনও তুমি সূর্যে,কখনও তুমি আকাশে
পূর্ণিমার রাতে অমাবস্যার অন্ধকারে,
কখনও তুমি মৃত্যুগামী মানুষের চোখে,
তুমি রূপহীন বর্ণহীন অশরীরী অদৃশ্য।
তাইতো সভ্যতার আকাঙ্ক্ষা ততই তীব্র,
তোমাকে খুঁজে নিল নিজের মতো করে।
তোমার রূপ কুৎসিত হতে পারে না
তাই বেঁধে দিল নিজের রূপে,
আসন দিল সবার উপরে রূপ রাখলো সমানে সমানে।
মানব সভ্যতার কল্পনার এখানেই যে হার নিরাকারকে রূপ দেবার।
নিজ আভরণে সাজালো যে বারবার
সেখানেও যে পরাজয় কল্পনার
নেই যে কোন অবতার রূপ ও আভরণ পরাবার।