নিমতলী রাজ্যে রাজার কঠিন রোগ হলো,
রাজপুরী,রাজদরবারে কান্নার রোল পড়ে গেল।
রাজার শরীরের দুর্বলতা ভাব, কন্ঠস্বর হচ্ছে ক্ষীণ,
সুখ শান্তি বেঁচে থাকার আশা, সবই যে সংকীর্ণ।
রাজা বুঝলেন মৃত্যু তার দুয়ারে এসে, দিচ্ছে শুধু হানা,
বিজ্ঞ সব কবিরাজ এলেন,কোনো ওষুধেই রোগ সারেনা।
চিকিৎসক এলেন দূরদেশ থেকে,সবশেষে মাদ্রাজ সিঙ্গাপুরী,
হরেক রকমের পরীক্ষা করে, দেখালেন নিজের বাহাদুরি।
এই যে অসুখ খুবই সামান্য! আগে ডাকোনি কেন মোরে!
উল্টা পাল্টা বড়ি খেয়ে, রাজারে ধরলো কালো জ্বরে!
অল্পবয়সী বালকের হৃদপিণ্ড দিয়ে ,যদি বানানো হয় মিকছার!
অনায়াসে রাজা সুস্থ হয়ে যাবে, দুঃচিন্তা করো নাকো আর।
দিকে দিকে লোক ছড়ালো, সুঠাম বালক পাওয়া গেল,
টাকার জন্য বিক্রি করলো বাবা, সিপাহী কাজীর দরবারে নিয়ে এলো।
কাজি দিলেন রায়, তুচ্ছ ছেলের জীবন বধ অন্যায় কিছু নয়!
এই হেন জীবনের বিনিময়ে যেন, রাজার জীবন রক্ষা হয়।
এমন নিষ্ঠুর কান্ড দেখে বালক, হো হো করে হাসে,
জল্লাদ বেঁধে নিয়ে গেল তারে, নির্যাতিত বধ্যভূমিতে।
বালকের হাসির শব্দে রাজা, খুবই বিচলিত হন,
নিশ্চিতরূপে মৃত্যু হবে তোমার, হাসির হেতু বলো তো এখন।
পিতার দায়িত্ব রক্ষা করা মোরে, টাকার জন্য করল বিক্রয়।
সুবিচার পাবো কাজির দরবারে, রাজার পক্ষে নিলো আশ্রয়।
রাজার কর্তব্য রক্ষা করা প্রজা, তাঁহার জন্যই জীবন যাচ্ছে চলে।
আমি হাসবো না তো! কে হাসবে ? দাও না একটু বলে!
রাজার মনেতে প্রীতি জাগলো, বাঁচলো বালকের প্রাণ।
দৈব প্রভাবে সুস্থ হলো রাজা, মহানুভবতায় হলো যে মহান।