নিমতলী গাঁয়ে দুই বন্ধু ছিল
যদু মধু যাঁদের নাম,
খুব ভালো ভাব ছিল দুজনের
গাঁয়ে গাঁয়ে ছিল যে সুনাম।
মিথ্যে কথার ধার ধারে না
চলেনা অসৎ পথে,
পরোপকারে যাঁরা জীবন বাজি রাখে
ব্যস্ত থাকে সৎ কাজে।
গাঁয়ের সবাই সুহৃদ বলে ডাকে
ভালোবেসে করে মান্য,
উৎসবাদি তাঁদের উপস্থিতিতে
হয়ে যায় পরিপূর্ণ।
দারিদ্র্যতার ভারে তাঁদের সংসারে
বইছে করুন সুর,
আর নয় গাঁয়ে চল যাই শহরে
পথ যে অনেক দূর।
যেই কথা সেই কাজ
পৌঁছে গেলো শহরের মাঝে,
দিন বদল হলো তাঁদের
কঠোর পরিশ্রমের ফলে।
এবার ফেরার পালা!
গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে,
দুই বন্ধু হেঁটে চললো
হাতে হাত ধরে।
গাঁয়ে ফেরার একটাই পথ
লতাপাতা ঘেরায় ঘন বন,
হিংস্র প্রাণীর ভয়ে থাকে সবাই
চারদিকে নেই মানুষজন।
হাঁটা হলো শুরু বুক দুরুদুরু
বনের মধ্যখানে,
ঠাকুর দেবতা স্মরণ করছে
দুই বন্ধু মনে মনে।
এমন সময় এক বন্য ভল্লুক
এগিয়ে আসছে তাঁদের পানে,
যদু বাবু গাছে উঠল
মধু, মাটিতে শুয়ে।
গাছে চড়িতে জানেনা মধু
পালানোর নেই কোন পথ,
বিপদে পড়তেই দূরে ঠেলে দিলো
বন্ধু যদু সৎ!
ভল্লুক খায়না মৃত প্রাণীর মাংস
মাটিতে শুয়ে মধু ভাবে,
একশো ব্রাহ্মণ ভোজন করাব
বেঁচে যাই যদি প্রাণে,
ভল্লুক বারে বার শুঁকিয়ে দেখে
আছে নাকি দেহে প্রাণ,
মরার মতো পড়ে রইল মধু
কিন্তু সজাগ তাঁহার কান।
কিছু সময় পরে ভল্লুক গেল চলে
যদু মধু বাঁচলো প্রাণে,
প্রিয় বন্ধু আমার কি বললো
ভল্লুক কানে কানে।
বিপদে যে দূরে চলে যায়
বন্ধু বলোনা তাঁরে,
সেই বন্ধু, বন্ধু নয়
বিপদে যে হাত ছাড়ে।