একদা প্রভাত বেলা,
রাজ্যসভায় শোরগোল,
বিরল রোগে ভুগিছে কুমার
কান্নায় রাজ্যবাসী করছে হট্টগোল।
একি শুনলাম অনাথের নাথ
পুত্র আপনার পেয়েছে আঘাত,
অশ্রুবারি বাধা নাহি মানে
বুঝিয়া কন রাজা না হয় সঙ্গোপনে।
কি বলিবো হায়, তাহা ভাবি নিরালায়
বসিয়া রহিলাম বনে, প্রাণ বুঝি যায়
নয় কোন বিরল রোগ, নয় বাণের আঘাত
ধ্যানেমগ্ন মুনিবর দেয়া শাপে
পুত্রকে আমার পেয়েছে পাপে।
মুনির শাপে সাতদিনে যাইবে প্রাণ,
পড়িয়া রইবে নিস্তেজ দেহ,
কি করে বাঁচাইবো শাহাজাদা
তাহা শুধাও মোরে কেহ।
নাই কি কোনো উপায় !
বৃদ্ধ এক আসিয়া কয়।
ত্যাগ করিবো ক্ষুদ্র প্রাণ
তাহাতে যদিও কুমারে প্রাণ রক্ষা হয়।
না না না, তাহাতে তুষ্ট হইবেনা মুনিবর!
পাঠাইয়া চর ! দিয়াছে খবর।
বারো হাজার ক্রোশ পারে, পাইবে ভয়ানক গুহা,
তাহার ভিতরে রক্ষিত আছে স্বর্ণলতিকা ,
শাপ ঘুচিবে ইহার পরশ দিয়া।
ও এই কথা প্রাণনাথ, নহে চিন্তা নহে ভয়
পুত্র আপনার বাঁচিবে কহিলাম জানিবেন নিশ্চয়।
সবুর করুন এক প্রভাত।
ঘোড়াশাল হতে ভিক্ষা দিন মোরে
ময়ূরপঙ্খী ঘোড়া,
বাহুবলি সেনা সঙ্গে লাগিবে
মাত্র এক জোড়া।
এই বলিয়া বৃদ্ধ ভিখারি ,
চলিয়া গেল সেনা সনে,
দিন দুয়েক বাদে ফিরিয়া আসিলো
স্বর্ণলতিকা লয়ে।
বৈদ্য আসিয়া রস চিবিয়া
শাহজাদাকে খাওয়ালো বড়ি।
কিছুক্ষণ বাদে শাপ ঘুচিয়া
পুত্র উঠিল নড়ি।
আনন্দে অশ্রু গড়িয়া পড়ে রাজার চক্ষু দিয়া,
করজোড়ে বসি প্রার্থনা মাগি,
ঋণের বোঝা শোধ করিবো কি দিয়া।
আজি হইতে আপুনি রাজা,
বসিবেন সিংহাসনে।
পিতা পুত্র মিলিয়া সেবা,
করিবো জীবন ভরে।
চাইনা রাজ্য চাইনা সিংহাসন
থাকিবো ফুটপাতে,
প্রার্থনা মাগি , রাজা তোমার লাগি
তিনবেলা, যেনো আহার জুটে!
পরিমার্জিত ও সংশোধন : শ্রদ্ধেয় কবি Manoj Barua