৭ই মার্চের অমূল্য বাণী ঘোষিত হইল যার মুখে
দৃঢ় প্রত্যয় আর অদম্য সাহস, শেখ মুজিবের বুকে ।
রক্ত দিয়েছি তো, আরো দিব, দুঃখ নাই যদি মরি
মুক্ত করিব বাংলার মাটি, পবিত্র শপথ করি ।
এই তো ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা, মিথ্যা বিষয় নয় ,
স্বাধীনতা ঘোষণার মহান নেতা, শেখ মুজিব নিশ্চয় ।
মহান সেই ঘোষণা-বাণী, ইতিহাসে হইল লেখা
মুজিব মহোদয় শিক্ষাগুরু, মুজিবে হইল শেখা ।
ঘোর তুফানে মুজিব আমাদের, সাগর তরীর নাইয়া ,
হাল ধরিয়া পাড়ি জমাইল, জয় বাংলা গান গাইয়া ।
পঁচিশ মার্চ কালো রাতে, একদল নর ঘাতকের হানা,
শুনিল না ওরা, গুলি চলিবেনা আর, শেখ মুজিবের মানা ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ, গুলি চলিল পথে মাঠে,
হাজারো লাশের ঢেরি পড়িল, বুড়িগঙ্গা-সদর ঘাটে ।
স্বাধীনতা, বিজয়, শহীদ দিবস, এক সুতোয় সব গাঁথা ,
যেমন, সাপের মুখে বিষ দাঁত থাকে, ফণা ধরে তার মাথা ।
একাত্তরের মার্চে আমি, বিশ বয়সী এক তরুণ,
গণহত্যা শুরু হইল, সেই কাহিনী অতীব করুণ ।
ঘুমন্ত মানুষকে রাজপথ-মাঝে, নিধন করিল যারা ,
রাজাকারসহ পাকিস্তানী পশু, কাপুরুষ দল তারা ।
সেই কালো রাতে, রাজধানীর বুকে, চলিল গণ হত্যা !
লুটিতে লাগিল বর্বর দল, অবলা মা-বোনের সত্তা !
এমনি চলিল, বাঙ্গালীর উপর কঠিন অবিচার ,
ঘরে ঘরে ওরা রাজাকারযোগে, চালায় ব্যভিচার ।
লাখো বাঙ্গালী শহীদ হইল, হারাইল মানিক-রতন,
ঘরের ইঁদুর বাঁধ কাটে যেমন, বিষয়টি সেই মতন ।
এক সময় ছিল মীর জাফরের বিশ্বাস ঘাতক-কর্ম ,
একাত্তরের মীর রাজাকার, করিল অবাধ-অধর্ম ।
ধীরে ধীরে আমার বাংলার ছেলেরা, বাঁধিল যুদ্ধের ঘাঁটি ;
গেরিলা সাজিয়া যুদ্ধ করিয়া, মুক্ত করিল মা-মাটি ।
সেই বিভৎস লড়াই দেখিয়া, ভুলিতে পারিনা কভু !
হার মানিল, পরাস্ত হইল, অসুর পাকিস্তানী প্রভু ।
হাজার-বিজারে বর্বর মারিল আমাদের মুক্তি ভাই ,
ধীরে ধীরে উদিল পুব-দিগন্তে স্বাধীনতার সূর্যটাই ।
প্রাপ্তির পথে, নতুন রাষ্ট্র, নাম হইবে বাংলাদেশ ;
ক্রমশ পৌঁছিল বিজয়ের দিকে, নয় মাসে লড়াই শেষ ।
শহীদের রক্তে লেখা হইয়াছে, স্বাধীনতার ইতিকথা ,
শহীদের স্মরণে, অবনত শিরে, পালন করি নীরবতা ।
রক্তসিক্ত স্বাধীনতা অর্জিত, সোনার বাংলাদেশ ,
রক্তমাখা পতাকা রচিত, স্লোগান মুখর দেশ !!
ছাব্বিশ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, পালন করি মনে প্রাণে ;
দুঃখ-সুখের গীতিকা রচিয়া, ভরি তুলি গানে গানে ।।