. যখন আমার বয়স ছিলো
বারো চৌদ্দ ষোল কুড়ি,
লাটাই হাতে মাঠের আইলে
উড়াতাম রঙিন ঘুড়ি।
সেকালে ছিলো না কোনো মুঠো ফোন
কিশোর যুবার হাতে
ঘরেতে ছিলো না টেলিভিশন শো
অবিরাম দিবারাতে।
সেই প্রজন্মের লোকজন ছিলো
অতিশয় সাদাসিধা;
পরহিতে কারো হৃদয়মনে
ছিলো না ঈর্ষা-দ্বিধা।
আজকাল কতক নিষ্ঠুর লোক
মুখে নাই কোনো কথা,
সদরে-অন্দরে কুকাজে রত
প্রতারণা যথাতথা।
বিস্মিত করে তাদের অনাচার
আদিমকে মানায় হার,
ভ্রাতৃত্ববোধ ভুলে গিয়ে কেবল
বেছে নেয় কদাচার।
ছোটোরা এখন বড়োকে মানে না
শিষ্টাচারের অভাব,
ঘরে বাইরে সব লোকালয়ে
ভন্ড পী্রের প্রভাব।
নগরীতে শয়তানের নিঃশ্বাস
ফেলে যখন কারো ‘পরে
সেই পথচারী সম্বল হারায়ে
ফিরে আসে নিজ ঘরে।
অর্থ-কড়ি ওরা সব লুটে নেয়
কুখ্যাত সন্ত্রাসী যারা
বুক চাপড়ায় সেই ভুক্তভোগী
দেউলিয়া সর্বহারা।
এই কি আমাদের রক্তে অর্জিত
সোনার বাংলাদেশ?
স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে
কি পেলাম অবশেষ?
পিতামাতার সেবা করে না পুত্র
দুঃসহ অন্তিমকালে,
বৃদ্ধাশ্রম তাদের শেষ ঠিকানা
বন্দী হয় কঠিন জালে!
অবিচার অনিয়ম দুরাচার
আরো দুর্নীতি আছে যত
সকল অঘটন ঘটমান হেথা
প্রতিদিন অবিরত।
জগতবাসী আজ হতাশাগ্রস্ত
দ্রব্যমূল্যের কারণ
যুদ্ধরত ওই দেশগুলি কেউ
মানে না কারো বারণ।
স্থানে অস্থানে স্থাপনার কারণে
গাছপালা হয় ধ্বংস,
আবাসন প্রকল্প বিল হরেছে
বিলের পাখি নিবংশ।
আগের মত পাখির কূজনে
মুখর নয় চারিধার,
শিয়াল খট্টাশ বাড়ছে দেদার
বনবাদাড়ের পাড়।
বসত বাটির ফলমূল আজ
রুচিতে ধরে না কারো,
শাকসবজি হয় অপুষ্টিকর
হাহাকার বাড়ে আরো।
আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দেশে-
প্রকৃতি হতেছে নিঃস্ব,
কালের বিবর্তন ঘটিয়ে হেথায়
গড়িছে কৃত্রিম বিশ্ব।