হে বন্ধু দিতে চাই না তোমায় শুভ বিদায়
ঐ যে উঠেছে ভানু স্বচ্ছ দিবা দুপুর প্রায়
একত্রে দোঁহে কাটাবো বেলা সুখের নেশায়,
বন্ধু আজিকে আমি তোমায় দিবো না বিদায়।
অতঃপর একত্রে দোঁহে বেড়াই নিজ গ্রামে,
দক্ষিণ হতে পূবে গিয়ে ঘুরি হাতের বামে
বেশ বেড়ালাম ঘুরে অনিন্দ্যসুন্দর ধামে!
দৃষ্টিনন্দন আমাদের এই মনোহর গ্রামে!
ক্ষণে ক্ষণে আজ পড়িছে মনে শৈশবস্মৃতি
জ্যৈষ্ঠের প্রভাতে আম কুড়াতাম যথারীতি
শিবা ঝিনুক সুভাষ দীনো গলাগলি প্রীতি,
আজও ভুলি নাই সেইসব হারানো স্মৃতি।
কিন্তু ক্রমান্বয়ে বয়স বাড়তে লাগলো যবে
প্রেম নামক হরিণের পিছুধেয়েছিনু তবে
ভেবেছিনু এই হরিণ বুঝি আপনার হবে,
প্রতারক খল হরিণ পালিয়ে গিয়েছে কবে।
আমার কতেক সাথী ছিলো এই ধরাতলে
সুখভোগ পরিহরি অবেলা গিয়েছে চলে
পালিয়েছে ওরা বিস্মৃতির গহীন অতলে,
যে দেশটিরে সবাই না ফেরার দেশ বলে!
ওগো প্রিয় বন্ধু মম তুমি আছো অবশিষ্ট
প্রখ্যাত সুপরিচিত ‘অঞ্জন’ নামবিশিষ্ট
তোমার শিষ্ট আচরণ আলাপন সুমিষ্ট,
একমাত্র তুমি রয়েছ সুহৃদ অবশিষ্ট।
চিরতরে তুমি থাকো হে বন্ধু আমার পাশে
জীবনযৌবন সঁপে দিবো সব তব সকাশে
বন্ধুবিরহে আঁখিনীরে সতত বুক ভাসে,
কঠিন বিরহ বিদারি আমার হিয়া নাশে!
আমি মর্মব্যথায় ম্রিয়মাণ ধরণির মাঝে
অস্থির মন যে বসতে চায় না কোনো কাজে,
কি যেন নিয়ত খুঁজে ফিরি ঊষা হতে সাঁঝে,
দুরারোগ্য ব্যাধি বাঁধল কি বাসা মনের মাঝে?
হে প্রিয় দেবদাসের মতো দিওনাকো ফাঁকি
তোমার চরণকমলে এই অনুনয় রাখি
পার্বতীর ললাটে কি দশা আছে আরো বাকি?
কেবলি সতত এমন দুর্ভাবনায় থাকি।
হ্যা, যদি তুমি আমার চিরনাথরূপে থাকো
তবে তুমি আমার বিনীত নিবেদন রাখো
শপথ করো বন্ধু আমায় ছেড়ে যাবে নাকো?
যদি বন্ধুভেবে থাকো তবে এই সর্ত মনে রাখো।
খেলার সাথী সখাসখী আমার ছিলো যারা
কেউ কেউ সপরিবার প্রবাসে আছে তারা
হৃদয়ের উদ্দাম আবেগে খুঁজে হই সারা,
বিরহানলে পুড়ে মন হয়েছে ছন্নছাড়া!
হে বন্ধু তুমি আজিকে এলে কেন ক্ষণতরে?
কেন ফিরে যেতে চাইছো আমায় পর করে?
এসেছো ওগো বন্ধু ‘অঞ্জন’ বহুদিন পরে
পূরলো না আশা বিদায় দিবো বন্ধু কি করে?
তোমায় হেরি’ হৃদিসরোবরে ডেকেছে হর্ষ-বান!
তব পথচেয়ে অপেক্ষায় থাকি সারা দিনমান।
এসেছো কি আমায় দেখিবারে এক পলকের তরে?
তাই বন্ধু আমি কিছুতেই দিবো না বিদায় তোরে।