কি যে লিখি আজ বিদায়ের গান-
বিরহের কবিতাখানি,
দেয় না যে মাতা বিদায় আমারে-
শোনায় বিরহের বাণী।
এতো দিন কাটানু মায়ের গৃহে-
যে ঘর পুণ্য স্বর্গধাম,
কিসের অনুরাগে হই গৃহত্যাগী
এ কি ভাগ্যের পরিণাম?
গুমরে কাঁদে মম নীরিহ হিয়া-
বিদারে রিক্তের ব্যথায়;
ভাইবন্ধু আরো স্বজন আছে যত-
স্নেহে হাত বুলায় মাথায়।
তারা বলে ওরে বাছা, ওরে ভাই-
যাসনে উড়ে পাখির মত,
তুই চলে গেলে কেমনে থাকি হেথা-
দিঘল দিন রজনী কত ?
ওগো আমার সাধের জন্মভূমি-
প্রণমি তোমায় আমি,
তোমার পদকমলে ঠেকাই মাথা-
কেবলি দিবসযামী।
ক্লান্ত দেহ আমার শ্রান্ত হৃদয়-
জুড়ায় মায়ের স্নেহে,
মায়ের আঁচল কুসু্মের বাগ-
সৌরভ-ভরা তার দেহে।
স্বদেশ মম স্বীয় প্রেমের ভুবন-
স্নেহ মমতা ভরা স্থান,
যেথা অহরহ অনুরাগের ছোঁয়া-
যেথা জুড়ায় তাপিত প্রাণ।
এই পথ মাঠ লোকালয় ছাড়ি-
কোথা’ যাই আবার ফিরে?
যত চাওয়াপাওয়া নিলাজে ফেলি-
চলি কোন গহনের তীরে?
বিদায় ব্যথার সুর বাজে প্রাণে-
কিছুতেই হয় না ক্ষান্ত,
আমি বোঝাতে নারি আপনায়-
কেন যে হই দিগভ্রান্ত।
যেতে চায় না মন মাতৃগৃহ ছাড়ি-
এযে মোহন সোনার পুরী,
সারা পৃথিবী মাঝে যে হয় অনুপমা-
যার নেইকো কোনো জুড়ি।
বিরহ ব্যাথায় মম হিয়া ম্রিয়মাণ-
কে ডাকবে বাছা-জাদু ব’লে?
বিরহানলে জ্ব্লবে যবে মনপ্রাণ-
কে নিবে ডাকি আঁচলতলে?
আমি বড্ড কোমল প্রাণের মানুষ-
কেমনে ভুলি মায়ের মায়া,
যে মায়ের কোচর ভরা শাক ফলফুল-
যেথায় নিবিড় স্নেহছায়া।
আর কী গাইবো বিরহের এই গান-
মনে বেতাল রাগিণী বাজে,
বিবাগি হিয়া কাঁদে সদরে ভেতরে-
বসে না মন কোনো কাজে।
চরণ চলে না হে শ্যামা জননী-
কেমনে ফেলি যাই তোরে,
ছাড়িসনে তোর উদরের ধন-
চেপে রাখ মা বুকে ধ’রে।