নিরিবিলি সাঁঝের বেলা
এলোমেলো দিনের খেলা ।
মিল-অমিলের পরিহাসে -
কুয়াশার জাল আবেশ বশে ;
হাঁটছে একা, কুকুর হাতে ঐ লোকটা,
আছে তো বেশ ।
ভালবাসার সহজ বাঁধন,
সংযোগে রয় মাপা শিকল ;
হেঁচকা টানে বেতাল শরীর -
নজর লাগায় দুলকি চালে ।
চিনচিনে বুক হাওয়া ফাগুন,
দাগ কেটে যায় অনুরাগে
বিভোর বশে; কুকুর সাথে ঐ লোকটা,
আছে তো বেশ ।
বিনিময়ে গোপন কথা, অনামিকা,
সারি গ্রন্থি উঁচু শাখা বিভীষিকা ।
তালে ছন্দে স্মৃতি জালে
মধুর সেদিন টালমাটালে।
চোখ ঘুরিয়ে অবাক কুকুর, ওই লোকটা,
আছে তো বেশ ।
খাঁচা বন্দী বহুতলের খোলা জানলা -
হারিয়ে যেতে, নেশায় মেতে, ব্যাকুল চোখ ;
নিক্তিমেপে রাস্তা হেঁটে,
খোশ মেজাজে শীষের বোল ।
রাস্তা শোঁকার গন্ধে পাগল,
হাতে কুকুর ওই লোকটা
আছে তো বেশ ।
ধর্মনগর, কালীদীঘি, ঝুলন মেলা
ইনিয়ে বিনিয়ে বলছে কথা -
পথচারী দুজন ওরা ;
শান্তিপ্রিয় তুমি আমি
চিরদিনের সর্বহারা ।
রাস্তা দেখে চলার তাগিদ
ছোট্ট ধমক, এই রাস্কেল!
হাতে কুকুর ওই লোকটা,
আছে তো বেশ ।
স্তব্ধ হঠাৎ চলার সাথী
কোন্ অভিযোগ ;
নতুন বইয়ের রঙ্গীন মলাট
ওলোট পালট ।
ভোমরার গান যোগায় সাহস উড়ে যেতে -
ঘন ঘন নাড়িয়ে লেজ মজায় কুকুর ;
মন্দ তো নয় ওই লোকটা,
আছে তো বেশ ।
ধূলিকণা ভাসছে হাওয়ায় বিবস্ত্র -
সাক্ষী গোপাল কালো পিচের স্বর্গ-সিঁড়ি,
গুমোট ভরা মলিনতা খবরদারি ।
হাঁফ ধরেছে নিঃশ্বাসে বিষ গন্ধ শুঁকে,
নির্বিবাদে হাঁটে কুকুর অন্যমনে ;
শিকল হাতে ওই লোকটা,
আছে তো বেশ ।
অন্ধ ফকির পেটের জ্বালায় খুঁজছে লাঠি,
অবহেলার বুনো ঘাস পায় মিতালী ।
শিথিল হল শিরদাঁড়াটা হিমেল হাওয়ায় ;
গ্রহান্তরের উড়াল পুলের উঁকিঝুঁকি ।
কাঁপা হাতে শিকল-কুকুর ওই লোকটা,
আছে তো বেশ ।
ভর দুপুরে আকাশ জুড়ে শঙ্খচিল -
ক্লান্ত কাকের নিবিড় নীড় নিঝুম রাতে,
ভুরুর ওপর বলিরেখা নজর কাড়ে ।
নুয়ে পড়া সরলতায় ভগ্ন বিদুর -
আতশ কাঁচে পুত্রস্নেহ সাথে কুকুর ;
তবু আজও হেঁটে চলা ওই লোকটা -
আছে তো বেশ ।