ঘুরিতে ঘুরিতে পথ ভূলে
উঠিনু এসে মায়ার ছলে
অচেনা বাউলের বেশে,
আপন গানে আত্মহারা,
চিত্ত ছিল পাগলপারা
ভাঙিল গান এই দেশে ।
আঁখি মেলিয়া আঁখিপাতা
বিস্মিতে হেরিল সেথা
জনহীন মরুর গহনে l
দশদিক পূর্ন উষ্ণানিল,
দাবদাহে শুষ্কঝিল-বিল
ভরিয়াছে চিল-শকুনে ।
ধূ-ধূ অনন্ত বালিরাশি
মুদে নয়ন উড়ে আসি'
আঁধারের ছায়া ফেলে অবিরত ।
ধূলি 'পরে পড়ে শবদেহ
কারও নাহি মায়া-স্নেহ
চিল-শকুনেরা মুছে চিহ্ন যত ।
এ মরুতে নেই বেদুইন
ভয়ার্ত বুকে সঙ্গীহীন
আমি মরুদ্যান খুঁজি মরু-তীরে l
কে হবে মোর পথের পথিক?
কে দেখাবে মোর দেশের দিক?
ভূলিয়াছি নিজ দেশের পথেরে ।
যদিও পাইলাম তৃনচিহ্ন
সেও হয়েছে অতি দীন-দৈন্য
সেও নীরাভাবে আজ মৃতপ্রায় ।
হেথা নাই তরুর শীতল ছায়া
জুড়াইতে মোর দহিত কায়া
কণ্ঠে তৃষ্ণা জাগে মরুর মায়ায় ।
কাঁদিছে একাকী বসন্তসখা,
দূর শূন্যে উড়ে ক্লান্ত বলাকা
ভেদিতে এ নাগপাশের প্রাচীর ।
কে জানে কোন অস্তালোকে
প্রানের শেষ লেখা লিখে
বিদায় নিয়েছে আলোর মিহির ।
এ ঘন আঁধারের বুকে নিশীথিনী
শশীর অভাবে হয়েছে বিরহিনী,
পীড়িত খেলার সাথী আলেয়ার ।
এ নগ্ন হীনমন্যতার সংসারে
জর্জরিত হয়েছি ব্যথার ভারে
যতবার তার স্মরিনু দুয়ার ।
বুকের ধৈর্য্য ভাঙে পিপাসাতে
তবু মরীচিকার ভালোবাসা পেতে
ছুটে চলে মন নিরাশার পিছু ।
তবু কেহ দেয়নি ডাকে সাড়া
মম অন্তবিহীন নিঃশ্বাস ছাড়া,
হইল শুধু আশার মস্তক নীচু ।
মুদিত চোখে ঘুমের অভিনয়
করে মানবিকতার পরাজয়
ঢালে বিষ এ সুধার জগতে ।
শকুনির পাশাখেলাসম মত্ত
সকল অবুজ-অবিকশিত চিত্ত
(আপনারে)বিচ্যুত করে ন্যায়নিষ্ঠা হতে ।
___________