‘তোমরা আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?
আমি মায়ের কাছে যাব।‘
রাসেলের কণ্ঠে আকুল মিনতি; তবুও ভয়হীন;
ছোট্ট রাসেল জানে না তখনো౼
হতে চলেছে প্রদীপ নেভানো মৃত্যুঞ্জয়ী আয়োজন।
হায়েনারা সমস্বরে বলে౼
মায়ের কাছে যাবি? এই যা!
হিংস্র পাষাণের বুলেটে ছোট্ট রাসেলের দেহ;
ঘরের মেঝেতে রক্তের মানচিত্র এঁকে নিথর হলো!
মায়ের কাছে ফেরা হয় না রাসেলের,
কলঙ্কিত উপাখ্যান বত্রিশ নম্বর বাড়ির নামফলক পেরিয়ে
বাংলার বিজরভূমি আর্তনাদ করে ওঠে౼
‘কেন তোরা আমার সন্তানকে নিলি কেড়ে?
ঐ দ্যাখ্, ভোরের আভা জলের ধারায় বইছে বহ্নিমান!
ঐ দ্যাখ্, আবর্ত বাতাসে করুণ বিউগল ক্রন্দনের চেয়েও অশ্রুপাত!
ঐ দ্যাখ্, মেঘের ধারা ঝরছে মর্সিয়া; বিরামহীন ভূলোক লুণ্ঠিয়া!
ঐ দ্যাখ্, তোরা চিরকাল বিজিত; কাপুরুষ খেতাব বুকেতে লিখলি উল্লাসে
আজ থেকে তোরা ঘাতক হলি; পুষ্প-মহানের লাশকে মাড়িয়ে।’
‘আমি মায়ের কাছে যাব।‘
মায়ের কাছে যেতে, এর চেয়ে বেশি কী ছিল মিনতি?
রাসেলের শৈশব আজীবনই অনাদিকাল রয়ে গেল;
রাসেল আজ বিস্তীর্ণ౼ বাংলার চির সবুজ পাটাতনে,
সেই রাসেল আজ౼ ফুলেল সমাদরে,
এমন রাসেল আজ౼ প্রতিটি ঘরে ঘরে,
এমন রাসেলরা আজ౼ বিস্তৃত সোচ্চারে,
এমন রাসেলরা আজ౼ পোস্টারে, বিপ্লবী স্লোগানে,
এমন রাসেলরা চিরদিনই তোদের ভয়ের নাম,
এমন রাসেলরা কোনোদিনও তোদের করবে না ক্ষমা;
দিতে হবে তোদের আবহমান রক্তের প্রতিদান।
১৫ আগষ্ট ২০২১