দূর সাগরের মাঝে বাতিঘর নাবিকের দিশারী
গাংচিল ডানা মেলে করে কোলাহল
বাতিঘর নাবিকের চেয়ে বেশি চেনে সমুদ্রাচার।
নীল কালো জল সফেদ সফেনে নারীর মনের মতো নিরবধি
দাঁড়ায়ে রেখেছে নাবিকেরে সমুদ্র মাঝে অধিক জীবিত বছর।
হয়তো ছিল মণিমুক্তো, কুমুদ, বাহারী জলাহার
সমুদ্র নিকষ কালো আঁধারে মাছেদের ডানা,
দূর কোথাও বসবাস খাড়ি, শৈবাল আর তাহাদের আড়ি
সবই যে অতনু ইশারায় ডাকে নাবিকেরে।
একদিন নাবিক বাতিঘর খুঁজে পেয়ে
ভালোবেসে চিঠি লেখে ছুড়ে দেয়,
নাবিকের বোতলবার্তা অকূলে ভাসে, ফেরে না বাড়ি।
নাবিকও অপেক্ষায় থেকেছে ভাসমান রজনী
বাতিঘর দেখে জলপরী ভাবে সমুদ্র মায়াজাল মোহে;
স্পর্শহীন ছায়া ভেবে কতদূর যেতে পারে মন?
নাবিক অবতার নয়; মনুষ্য এক প্রেমের বীণা হাতে
দাঁড়িয়ে আছে সমুখে বাতিঘর দেখে দেখে,
কাছে সমুদ্র নীল আধার ফেনিল অসমতল,
জলের ঢেউয়ে কতো নাবিকেরা ভুল করে বলেছে
সাগর সমতল; সমুখে তীর পেয়ে যাবে।
এইভাবে হয়তো কতো ভুল লেখা হয়ে গেছে
তবুও হৃদয়ে জমেছে সমুদ্র সফেন সমান প্রেম,
তারচেয়ে বেশি জানে বাতিঘর সমুখে বাতাসে
মায়াময় দূরে আশা দীর্ঘশ্বাস সূর্যজলে,
লবণাম্বুধি জ্যোৎস্নায় জ্বলে আভা রাত্রি মাঝে।
অস্থির যৌবন নিঃশ্বাসে খুঁজে নিতে পারে না প্রেম
সমুদ্র প্রেমময়ী হতে হতে মাঝে মাঝে হয়ে যায় নারী।
জলধির আজীবন কুমারী অভিমান প্রকৃতির মৌনতা,
ভেঙ্গে দেবে বাতিঘর, করে দেবে নাবিককে দিকহীন;
কোনো একদিন এমন আভাসে লুন্ঠিত নাবিকের মন,
নাবিকও ভেসে চলে, অবশেষে নোঙ্গর ফেলে অচেনা তীরে,
অজানা মানুষের গাঁয়ে ভুল মানুষেরে চিনে
পাথরের শিলালিপিতে লেখা হয়ে যায় এপিটাফ;
বাতিঘর, সৈকত বসত ভুলে সমূদ্রপারে।
২০ জুলাই ২০২১, শংকর, ঢাকা।