সভাকবি একটাই
ছিল তিন দশকের
সেই কবি গত তাই.....
নত মাথা শাসকের!
দরবারে সভা ডেকে
গড়বড়ে মামলা-ই!
ঝড় তুলে শত কবি
কথা কয়, হামলায়।
বলে রানী "একজন-ই
নেবো কবি সভ্য ,
কথাতে হবেনা কাজ
লিখে দেখা - কাব্য!"
রাজা বলে - "একটাই
খালি পদ, দ্যাখো ভাই...
রানীটার মুখ দেখে
রূপ কত ল্যাখো তাই....।
কথা খুজেঁ বেছে নেবো
সেরাকবি কোনটা,
রূপকথা লেখবার
সময় এক ঘন্টা....."
এই শুনে খুশিমনে
কবি নিরানব্বই
কিলো কিলো কাগজে
লিখে চলে সব... বই!
এক কবি এককোণে
এক পাতা লিখে।
চুপচাপ একমনে
ফন্দি সে আঁকে....
চিল্লিয়ে সভাতেই
বলে সেই ছোড়াটা...
"সভাকবি হবে যে
পাবে সাদা ঘোড়া-টা,
যার দুটো খোঁড়া পা!
হাঁটে ধীরে, ছুটে না...
একবার বসে গেলে
একবেলা উঠে না...."
রাজা বলে "চুপ বেটা!
ছোট্ট ও মগজের.....
হাতি ঘোড়া বাঘ মেরে
রূপ সাজা কাগজে....."
ছোড়া বলে রানীটার
চোখে চেয়ে বারবার ....
"অপ্সরা উরবসি
সব রূপ ছাড়খার!
কথা নিয়ে কারবার
কবিগুলো নড়চড়....
ফিসফিস বকে যায়
কানে বাজে ফরফর
ছুঁচো মুখ ! বুঁচো নাক !
কুলো কান! কিম্ভূত!
ট্যারা চোখ! ব্যাঁকা ঠোঁট!
মহারানী তিনফুট!
তোতা স্বর! তেঁতো সুর!
কথা কত কয়ে
সব কথা বিপরীত
লিখে ওরা বইয়ে.....
'রানীটা কি বিচ্ছিরি!'
মুখে এক কবিটা-ই
দেখি তার উলটোটা
'অপ্সরা' কবিতায়!
মুখে যার 'চোখটেঁরি'
সেই লেখে 'হরিণী'
উরবসি কবিতাটা
তাই পুরো পড়ি নি ....."
ছোড়াটার কথা শুনে
কবিগুলো ভাবুকে!
পিঠে কথা পেটে সয়ে
কারো চোখ চাবুকে।
ছেড়ে দে রে তেড়ে মেরে
কথা ভুলে দুপদাপ!
শতাধিক কবি চোখ
মুগুরের করে মাপ!
বিশ কবি তরবারি
দেখে চিকচাক্য,
কেটেকুটে সাফ করে
স্বরচিত বাক্য!
কবি দুই তিন জন
ফাঁসিকাঠ চেয়ে,
ভুঁড়ি ঢোল করে নিল
পুরো বই খেয়ে !
শেষে বলে হেসে ছোড়া -
"দেখলেন মহারাজ,
আপনার সভাতে যে
এরা সব ভিতু আজ,
বড় বড় কবি এরা
চোখ এদের অন্ধ,
মিছেমিছি কথাকেও
করে খালি সন্দ....."
রাজা রানী খুশিমনে
একসাথে বলে -
"সভাকবি তুমি এক
শত কবি দলে!"