ইউনিফর্ম টা বাক্সের কোনো এক কোনে
ছেঁড়া পিঠ ব্যাগ টাতে জমেছে ধুল ।
ক্ষয়িষ্ণু স্মৃতির দ্বার হতে
আজও ফিরে আসে ছেলেবেলার প্রিয় স্কুল ।।

হয়তো সেদিন ছেলেটা
পড়বে না বলে করেছিল কত কান্না
মা বলেছিল, 'লেখা পড়া‌ করে যে গাড়ি ঘোড়াও চড়ে সে!  
সারা দিন শুধু খেলা করা তোমার এখন মানা।'

বেজার মুখে ছেলেটার
সেদিনিই প্রথম হাতে খড়ি,
সারা বাড়ি সোরগোল খোকা একদিন মস্ত নামি অফিসার হবে
করবে ইয়া বড়ো বাড়ি !

খোকা যায় স্কুলে কিন্তু বসেনা মটে মন ,
রোজ! রোজ মানা যায় এতো সব নিয়ম !
নতুন খাতা, নতুন কলম খোকার আজকেই চাই  
এক নতুন ইউনিফর্ম !   সেই ইউনিফর্ম !

সেই ইউনিফর্ম টা আজ  বাক্সের কোনো এক কোনে
ছেঁড়া পিঠ ব্যাগ টাতে জমেছে ধুল ।
ক্ষয়িষ্ণু স্মৃতির দ্বার হতে
আজও ফিরে আসে ছেলেবেলার প্রিয় স্কুল ।।

ছেলেটা রোজ পালিয়ে যেতো বাড়ি
করতো নানান ফন্দি ফিকির ,
কখনো পেটে ব্যাথা, কখনো মাথাব্যথা
একেবারে রাজা ছিল ফাঁকিবাজির ।

তবু ছেলেটা পড়তোই ধরা
ওই মায়ের কাছে গিয়ে,
শাস্তি দিয়েও মা
ঘুম পাড়াতো আপন কোলে নিয়ে ।

মায়ের কোলে লুকিয়ে ছেলে
ফেলতো চোখের জল,
হয়তো, ছেলেটা আজ পায়না সে কোল, পায়না আঁচল
যেথা মুছবে একটু আঁখি জল।

ইউনিফর্ম টা বাক্সের কোনো এক কোনে
ছেঁড়া পিঠ ব্যাগ টাতে জমেছে ধুল ।
ক্ষয়িষ্ণু স্মৃতির দ্বার হতে
আজও ফিরে আসে ছেলেবেলার প্রিয় স্কুল ।।

অনেক পরে কয়েকজন
বন্ধু হলো ছেলেটার,
যাদের সাথে যুদ্ধ রোজ !
কখনো এমনিই তো কখনো কারন ছিল খাবার ।

আর পড়াশোনা?  না সেতো করতো না!
তবে বসতো রোজ ওই প্রথম সারিতে,
স্যারেদের কাছে চেনা মুখ ছিল
ওর ওই ইউনিক দুষ্টুমিতে।

ছেলেটার জীবনে হঠাৎ করেই যেন কেটে গেল
অনেক গুলো বছর দেখতে দেখতে হাজির হলো
স্কুলের শেষ দিনটা। কত হাসি, কত কথা
আর কতো লুকনো বেদনা ,
ছেলেটা বুঝলো হাজার খুঁজলেও
এমন স্কুল জীবন  পাবেনা।

আর ইউনিফর্ম!
যাতে রোজ‌ লাগতো কালি !
সেই ইউনিফর্ম টা আজ বাক্সের কোনো এক কোনে
ছেঁড়া পিঠ ব্যাগ টাতে জমেছে ধুল ।
ক্ষয়িষ্ণু স্মৃতির দ্বার হতে
আজও ফিরে আসে ছেলেবেলার প্রিয় স্কুল ।।