এক দিন অভ্যাস বশত প্রাতঃভ্রমনে বাহির হইয়া নগর মধ্যস্থ হ্রদের নিকট গিয়া সূর্য দেবতার উদয়ের অপেক্ষা করিতেছিলাম। গত রাত্রির মদিরা সেবনের আবেশ তার অবশিষ্ট আচ্ছন্নতা লইয়া তখনো আমাকে সম্পূর্ণ ত্যাগ করে নাই। ঠিক এমনই সময় আমার ঈশ্বর দর্শন ঘটিয়াছিল।
                            
                           কথোপকথন

ঈশ্বর প্রশ্ন করিলেন “ মদিরা সেবনের পর আচ্ছন্নাবস্থায়  প্রাতঃভ্রমনের তাৎপর্য কী!”
ভক্তি সহকারে আমার উত্তর “প্রাতঃভ্রমন আমার পিতৃ দত্ত অভ্যাস।  আমার বাল্যকালেই তিনি ইহা আমাকে প্রদান করিয়া ছিলেন।
ঈশ্বর কৌতুকভরে দ্বিতীয় প্রশ্ন করিলেন “ তুমি কি আবার বাল্যাবস্থায় ফিরিয়া যাইতে চাও?”
অবাক হইয়া এইবার এই অধমের প্রশ্ন “ হে ঈশ্বর আপনার এই প্রশ্নের তাৎপর্য ?”
ঈশ্বর স্মিতহাস্যে বলিলেন “ যদি তুমি চাও তোমার বাল্যাবস্থা ফিরাইয়া দিতে পারি। নতুন করিয়া জীবন উপভোগ করিতে পার।”
আমার মাথায় যেন বজ্রপাত হইল, মদিরার অবশিষ্ট আচ্ছন্নতাটুকুর পলায়নের উপক্রম হইল, বলিলাম…। “ না!”
ঈশ্বর কারন জানিতে চাহিলেন।
উত্তরে বলিলাম “ শৈশব, বাল্যে আপত্তি নাই কিন্তু নতুন করিয়া দিবা রাত্র পুস্তকামুখী হইয়া বৎসর বৎসর পরীক্ষায় বসিতে পারিব না।”

ঈশ্বর শেষ প্রশ্নটি করিলেন “ তাহা হইলে কী তোমার পুনরায় মনুষ্য জন্ম গ্রহণের ইচ্ছা নাই?”

অতঃপর ঈশ্বরকে আমার  মনের কথা জানাইলাম “যতদিন এই পৃথিবীতে পরীক্ষা পদ্ধতির প্রচলন থাকিবে ততদিন এই মনুষ্যজন্মের অভিপ্রায় আমার নাই। হে ঈশ্বর তুমি বরং আমাকে কপি জন্ম দিও।”

(মনে মনে বলিলাম বাল্যাবস্থায় বাঁদরামো করার চাইতে আনন্দ আর কিসে আছে। হায়! এই যুগের বালকদের তো সে সুযোগটুকুও নাই।)

ঈশ্বর সহাস্যে বলিলেন “ তথাস্তু!”
                                   ------