এক
আমার একজন শাব্দিক প্রেমিকা ছিল । তার আদ্যাক্ষর ‘ঝ’ । আমার সামনে এসে যখন দাঁড়াত । তখন চুমু দিতে মিথুক সাজতাম । তার বুকের মধ্যে আমার দু’চোখ দাঁড়াতেই আমি কাপুরুষ হয়ে উঠতাম । তার পায়ের কাছে আমার পা । তার হাতের কাছে আমার হাত । তার অনেক কিছুর কাছেই আমি অনুপস্থিত ছিলাম গণতন্ত্রের মত ।
দুই
ভোরে আর পাখি ডাকে না । তাই গাছেরা আর ভৈরবী গায় না । ছাগলের ডাকে ঘুম ভাঙে । অতৃপ্ত সকাল আমায় মাঝ রাস্তায় নিয়ে এসে ফেলে । আমি মানুষ খুঁজি । পথ চলতে যত রাস্তা পেরয় ততই মানুষের অনুপস্থিতি অনুভব করি । ডান বাঁ-এর দরজা জানলায় মানুষহীন গন্ধ অগণতান্ত্রিক ।
তিন
আমি প্রতিদিন এক মিনিট করে নীরবতা পালন করি । সূর্য যখন সাড়ে আট মিনিটে চোখের সামনে এসে দাঁড়ায় । তখনও অবধি তুমি আসমুদ্র হিমাচলে বিপদ গ্রস্ত সূর্য উদয় । তুমি আমার সেই গণতন্ত্র । যা শব্দে আছে , দৃশ্যে অনুপস্থিত ঈশ্বরের মত ।
চার
উত্তাপ কে বন্দি করি বসন্তের শুক্ন ডালে । পড়ন্ত বিকেল নিস্তেজ ঠাণ্ডা জলের রিং-এ । নুয়ে আছে আমার চোখের কোণে । পাশাপাশি বহু বছর ছাড়াছাড়ি নিয়তিলিপ্ত ছোঁয়া-ছুঁয়ি । কে কোথায় দু’জনেরই অজানা ফাঁকা মাঠে জাদু । উপগ্রহের আলোর মত স্মৃতি রৌদ্দুর জ্যোৎস্না । সমন্তোরাল তুমি আমি পূর্ণগ্রাস বিচ্ছেদ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে শহরের ক্যাফে ।
পাঁচ
আমি তোমার শরীরের গর্তে ফেলে দিব আমার বেদনাদায়ক মৃত্যু । তোমার হতাশার থুতু ফেলা শ্বাস ,আমার চোখ জুড়ে ছুঁয়ে নিবে কান্না । তোমার শেষ শব্দ ছিল , ভালবাসার এক-টুকরো স্মরণ অভিলাষ । আমি ততক্ষণে পাঁজর ছুঁয়ে দেখি , গভীর বর্ষণ দাগ আঙুলে নড়ে-চড়ে । আমার স্বপ্নেরা রাতের গর্তে চলতে থাকে । আর , এই শহর । আমার পায়ের উপর ক্লান্তে ঘুড়ে-বেড়ায় । ট্রামে-বাসে-নিউ মার্কেটের রেস্তোরাঁয় ......।