বাদলাদিনের উদালি হাওয়া
স্থবির শীত দিয়েছে দমিয়ে।
খেয়ালী খেয়া চড়ায় গেছে থেমে।
সাধ যে আমার বন্দি সাধ্যের জালে!
উজান স্রোতে পারিনা বাইতে।
তবু ভাবি
একলা বসে পাথার আঁধারে
নিঠুয়া নদীর কিনারে-
আজ, কাল ,কিম্বা বহুদিন পরে-
চেনা বা অচেনা কোন পথের ধারে
হঠাৎ যদি দেখা হয় ,
তোর আর আমার -
হয়তো এমনি শেষ ডিসেম্বরের
হিমেল সন্ধ্যা সেদিন,
হয়তো ভীড়ের মাঝে
অথবা পৃথিবীর নিরালা কোনো এক কোনায়
হয়তো , আমার উদ্বেলিত মুখরতা
বুঝিবা ব্যার্থ হবে
তোর শীতল উদাসিতার কাছে।
হয়তোবা , নিরব পৌষালি সাঁঝে
আমরা যাব ভেসে
লক্ষ্য তারার নহরে ।
হয়তো ,বহুবছর গেছে পেরিয়ে
কারোরই কাউকে নেই মনে
জরায় ধরেছে আমাদের
চুল গিয়েছে ,টাঁক পড়েছে
দাঁত নেই, মাজা গেছে নুয়ে।
ঘিরে চারপাশ জড়িয়েছে,
বটবিরিক্ষের অসংখ্য জটা।
আমাদের দেখা হয় যদি
শোনিতে দ্রুত বইবে কি
অজানা শিহরিত তাপ?
ফ্যাকাশে হৃদয় ,
উঠবে কি রাঙিয়ে?
হয়তো ,
বাসন্তী চাঁদ আকাশে
সহসা দুজনার দেখা
এক মেঠো পথের মাঝে -
দখিনা হওয়ার মদির আবেশে
আধোবাধো এলেমেলো কথা হয়তো কিছু হবে !
হয়তো , কিছুটা পথ একসাথে হেঁটে
ফিরে যাব যে যার বাস্তবের কাছে।
একই আকাশের নীচে
ঐ একই নদীর অমোঘ স্রোতে
কত হাসি কত রোদন ,
কত আনন্দ হিল্লোল কত আকাঙ্খা,
গেছে ভেসে-
কত সাধের ঘর সে নিমেষে নিয়েছে জঠরে
কত ফসল সে ফলিয়েছে
কত প্রার্থিত আঁচল সে দিয়েছে ভরে
কত সে নিয়েছে কেড়ে
কত দিয়েছে ফিরায়ে
একলা বসে শুনি
ছলছল শব্দে সে বারতা তার-
সেই চিরায়ত বহতার পাশে
লক্ষ্যহীনা উতলা মন
বসে বসে আশা আঁকে
আজ কাল কিম্বা বহুকাল পর
একদিন যেন
দেখা হয় আমাদের।