মুলাখেকো এক রাক্ষসী নারী রাজপথ দিয়ে হাঁটে। উলঙ্গ শরীর কাঁপে থরথর কলার পাতার মতো। বুকের ওপর নেতিয়ে পড়েছে রুগ্ন স্তন দ্বয়। রক্তিমমুখী যৌনাঙ্গটা দ্বিখণ্ডিত পাকা পেঁপে; চেয়ে আছে যেন ডাহুক পাখির শাণিত দৃষ্টিতে। কঙ্কালসার দেহখানে নাই যৌবনের উত্তেজনা। অষ্টাদশী হয়েও সে বৃদ্ধদের হার মানায়। পেটখানি তার লেগে আছে যেন পিঠের সঙ্গে পিষে। ধুলোয় ধুলোয় পেকে গেছে তার মাথার কালো চুল। হনুমুখী মুখখানা দিয়ে খাটাশের মতো হাসে। লজ্জাহীনা বেহায়া মাগীর নাই কোনো ডর-ভয়। জোর করে সে দোকানদারদের পাউ রুটি ছিঁড়ে খায়। বেশ্যা বললে, পেট উঁচিয়ে ডেকে বলে আয় আয়। বিশটি টাকা প্রতিদিন তাহার বড় প্রয়োজন হয়। কোনো দিন সে না খেয়ে থাকে, কখনো সাতদিন। ক্ষুধার জ্বালায় মরিয়া হলেও পায় না মুঠো খাবার। লাথি-থাপ্পড় খেয়ে খেয়ে তার কোনো দিন কেটে যায়। রাস্তার ওপর দেহখানা মেলে বেহুঁশের মতো ঘুমায়।
একদিন সে কুকুরের মতো খুঁজছিল কিছু খাবার। কাকেরা মিলে ডাস্টবিনের খাবার খেয়েছে সব ফেলে। দোকানীরা তারে ধাওয়া করে মিলে, রুটিতে হাত দিলে। ক্ষুধার তাড়নায় পেট চেপে ধরে, ভিক্ষা তবু মাগে না। ভিক্ষা করাটা তাহার কাছে বড় ঘৃণা-অসম্মানের।
অবশেষে সে খুঁজে পেল এক খাবারের বিশাল পাহাড়। কারওয়ান বাজারের মুলা বিক্রেতারা অর্ধ পচা মুলা; ফেলে দিচ্ছিল ড্রেনের ভেতর ঝুড়িতে ঝুড়িতে করে। সেখান থেকে তুলিয়া তুলিয়া একটা একটা ধরে; কলার মতো চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে আপন মনে। সেই থেকে সে প্রতিজ্ঞা করে ভাত-রুটি না খাওয়ার। মুলা খেয়েই কাটিয়ে দিবে সারাটা জীবন ভর!
০৬-১০-০৮/ ঢাকা/