১৫ আগষ্টের কাকডাকা ভোরে, বিভ্রান্ত সেনারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে
ভারি ভারি অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়ে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে-
তারা অঝোরে গুলি করে চলে;
চারদিকে হইচই, ক্রন্দনরোল- প্রাণ রক্ষার আর্তচিৎকার
বঙ্গবন্ধু বুঝলেন, কিছু একটা হচ্ছে। দেরি করলেন না মোটেও।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দরজা খুলে চলে এলেন- বাইরে
সামনে অস্ত্র হাতে হিংস্র সেনারা, তাক করে আছে বন্দুকের নল
বঙ্গবন্ধুর- বুক বরাবর। কিন্তু তিনি স্বাভাবিক। ভয় পেলেন না-
পিছু হটলেন না
এগোতে থাকলেন
মুখে মৃদু হাসি
শান্ত দুই চোখ
ডান হাতে পাইপ
বাঁ হাতে লুঙ্গির খোঁট
এক কদম দুই কদম করে সিঁড়ি ভেঙে এগিয়ে চলছেন- সম্মুখে
সেনারা- হতভম্ব। তাদের হাত কাঁপছে। দরদর করে ঝরছে ঘাম
তারপরেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করে ট্রিগার টানতে চেষ্টা করলেন।
এবার বঙ্গবন্ধু পাইপ উঁচিয়ে হুংকার দিয়ে তাদের বললেন,
‘কাঁপছো কেন? তবে- চালাও গুলি! অপদার্থের দল- সব!’
ধমক খেয়ে সেনাদের হাতের বন্দুক পড়ে গেল। মুহূর্তেই তারা বঙ্গবন্ধুর
পায়ে নুইয়ে পড়লেন। এবার অভিমানী বঙ্গবন্ধু ধীরকণ্ঠে বললেন,
‘উঠ- বৎসরা। তাহলে ধর হাল। আজ আমি বড়ই ক্লান্ত-ভারাক্রান্ত!’
রাজপথে লাখো জনতা। সবার চোখ অশ্রুসজল। বিচলিত দেশবাসী।
বঙ্গবন্ধু একের পর এক লাশের রক্তনদী পেরিয়ে রাস্তায় চলে এলেন-
মাথা উঁচু করে বিমর্ষ জনতাকে এক পলকের জন্য দেখে নিলেন।
                                        অতঃপর...
                                        লুপ্ত হলেন জনতার মাঝে।
সেই থেকে প্রতিটি বাঙালি হয়ে উঠল এক একজন বঙ্গবন্ধু
সেই থেকে আমাদের বঙ্গবন্ধু হয়ে গেলেন অমর-অক্ষয়।।

২০-০৭-১৮, ঢাকা।