মানুষের মাঝে মনুষ্যত্ববোধটা হারিয়ে গেলো অবশেষে ,

এখানে  পাইনা  সেখানে  পাইনা পাইনা সারা বিশ্বে।

কুকুরের কাছে শুধালাম আমি,আছে কি  তোমার কাছে?

ক্ষুধার আহার পাইনা খুঁজে সবইতো  মানুষের আছে  !

কুকুর ছানা বললো ডেকে,তাকিয়ে  দেখেছ  বিড়াল -

দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে তারা রাত-দিন ও সন্ধ্যা-সকাল!  

গেলাম এবার পাখির  কাছে পেরিয়ে  গহীন  জঙ্গল,

চেঁচামেচি  করে বললো  তারা  পালনোই হবে মঙ্গল,

ছলে  বলে  কৌশল  করে  আমাদের  ধরার  ধান্দা,

ধরে নিলে সবার জায়গা হবে খাঁচা ঝুলানো বারান্দা।

হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্রে গেলাম, যেথা ভরা থাকে মাছে,

মাছেরা বলে পালাও সবাই ধরলে ভরে দিবে কাঁচে।

শুধালাম আমি পাখি ও মাছকে,পালাচ্ছো কেনো সবে?

বললো তারা কেটে-রেঁধে খেলেও  মুক্ত  থাকতে দিবে,

বন্দী  জীবন  মৃত্যুর   চেয়েও   হতাশায় থাকে  ভরা,

ভয় লাগে যে তোমাদের কাছে সেধে সেধে দিতে ধরা!

কষ্ট ভরা মনটা নিয়েই  দৌড়ে  গেলাম  বনের  ধারে,

বৃক্ষরাজিরা  বললো ডেকে, কাটতে এসেছো কোন গাছেরে ?

ছিঁড়তে এসেছো  বিনা কারনেই  বৃক্ষের কাঁচা পত্র,

ভাঙ্গাতে পারো ছিঁড়তেও পারো আমরা ইচ্ছার পাত্র,

বিনা কারনে অঙ্গহানিতে  হৃদয়ে লাগে  ভীষণ  কষ্ট,

তোমরা কি সেই মানুষ জাতি? সৃষ্টিকুলে যারা শ্রেষ্ঠ!

লজ্জা  পেয়েও  হাঁটছি আমি  প্রশ্নটাকে নিয়ে  মাথায়,

নজর তখন চলে গেলো কাছের একটা চিড়িয়াখানায় ;

আমায় দেখে রেগেমেগে আগুন যত আছে পশু সকল,

জোড় করে নাকি করেছি আমরা-তাদের বনগুলোকে  দখল!

শুধালাম তাদের দিতে  কি পারবে  মনুষ্যত্বের কোন  খবর ?

বন্দী না রেখে  মেরে আমাদের দিয়ে যাও তুমি কবর,

খাঁচায় ভেতর আঁটকে রেখেও করছ আবার অপমান,

মহাখুশি হবো  বন্দী  না  রেখে  নিয়ে নাও  যদি প্রাণ!

খাঁচার  পাশেই  বসে  ছিল  এক ময়লা আবৃত ফকির,

ক্ষুধার ক্লেশে খাবারের আশায় হয়ে আছে খুব  অধির,

মনুষ্যত্বের কথা জানতে চাইলাম  আমি উনার  কাছে,

উনি বলে আমার শরীরে ঘা এর পঁচা গন্ধ লেগে আছে,

ক্ষুধার  যন্ত্রণায় পরে থাকলেও  কেউ আসে না পাশে।

সাত  দিন যাবৎ খাইনি বাবা, রাস্তা  ছাড়া  নেই  নীড়,

সকল মানুষ ও আত্মীয়ের মাঝেও আমি অসহায়  ফকির!

শুধালাম তারে বলতে কি  পারেন মনুষ্যত্বটা  কোথায়?

আমি এসব  বুঝিনা বাবা,দয়া করে যেতে দাও আমায়।

দৌড়ে এসে এক শিশু বাচ্চা বলে ও ভাই বাঁচাও মা রে,

জায়গা-জমির ঝগড়াতো তাই অস্ত্র দেখায় বারেবারে,

আমি শুধালাম  বলতে  কি পারিস  মনুষ্যত্বটা কোথায়?

চাঁদাবাজের হাতে খুন হওয়া  বাবা বলে দিবে তা তোমায়!

কেঁদে কেঁদে হাঁটার সময়  সামনে  পেলাম  এক প্রবীণ,

আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলাম কাদের বলে মনুষ্যত্বহীন?

যারা করে স্বার্থে নীতি  ভঙ্গ ,ধর্ম জ্ঞান অর্জনে উদাসীন,

তারাই আসলে নামমাত্র মানুষ,ভেতরটা মনুষ্যত্বহীন!

স্রষ্টার সমগ্র  সৃষ্টির মাঝেই সয়ং খোদা থাকে বিদ্যমান,

সৃষ্টিকুলকে কষ্ট দেওয়া মানে স্রষ্টাকে করা হয় অপমান।

ধর্ম জ্ঞানেই আছেন খোদা,আছে জীবকুলের সব তত্ত্ব,

দেখা-অদেখা সৃষ্টির সেবাতেই  লুকিয়ে সবার  মনুষ্যত্ব।